ধ্বংসলীলা আর দোষারোপ এখন পরস্পরের আঙুল ধরে ইউক্রেনের পথে হাঁটছে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এই হাঁটাও শুরু হয়েছিল। বুধবারও অন্যথা হল না। মস্কোর বিরুদ্ধে ভারী ভারী বোমা ব্যবহার থেকে প্রায় পরমাণু বোমার স্তর পর্যন্ত অভিযোগের সিঁড়ি ইতিমধ্যেই তুলে ধরেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো। গত দু'সপ্তাহ সেসব অভিযোগ নিয়ে সরগরম থেকে সন্ত্রন্ত, সব অভিজ্ঞতাতেই ঘুরে ফেলেছেন বিশ্ববাসী।
বুধবার পালটা দিল মস্কো। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এবার পুতিন প্রশাসন কার্যত জীবাণু যুদ্ধের অভিযোগ আনল। রাশিয়ার দাবি, আমেরিকা ইতিমধ্যেই ইউক্রেনে প্লেগ এবং অ্যানথ্রাক্স জীবাণুর গবেষণাগার তৈরি করেছে। যা শোনামাত্রই খারিজ করে দিয়েছে মার্কিন প্রশাসন।
বুধবার ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে জীবাণুযুদ্ধের অভিযোগ এনে রাশিয়ার বিদেশ দফতরের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা দাবি করেন, ইউক্রেনে রুশ অভিযানে এই তথ্য উঠে এসেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনে প্লেগ এবং অ্যানথ্রাক্সের গবেষণাগার তৈরি করেছিল। যা তৈরিতে মার্কিন প্রশাসনকে সাহায্য করেছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কির সরকার।
জাখারোভার দাবি, ইউক্রেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ আক্রমণের পর প্লেগ, কলেরা, অ্যানথ্রাক্সের মতো জীবাণুর নমুনা ধ্বংসের নির্দেশ দিয়েছিলেন। জবাবে জেলেনস্কির মুখপাত্র জানান, 'ইউক্রেন কঠোরভাবে এই অভিযোগ অস্বীকার করছে।' মার্কিন সামরিক বাহিনীর সদর পেন্টাগনের মুখপাত্রও বলেন, 'এই অবাস্তব রুশ তথ্য আগাগোড়াই মিথ্যে।'
জাখারোভা আরও বলেন, 'আমরা ইতিমধ্যে সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি যে ইউক্রেনের গবেষণাগার থেকে রাশিয়ার বিভিন্ন এলাকায় জীবাণু অস্ত্র প্রয়োগ করার সম্ভাবনা ছিল। সেই কারণেই বিভিন্ন জীবাণুকে আরও প্রাণঘাতী হিসেবে তৈরি করা হচ্ছিল।' এই দাবি করলেও, পালটা চাপের মুখে যাতে রাশিয়ার মুখ না- পোড়ে, সেই রাস্তাও বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে তৈরি রেখেছেন জাখারোভা। সেই রাস্তা তৈরি করতে গিয়ে তিনি জানান, কোনও দেশের একার পক্ষে উদ্ধার হওয়া তথ্য সামগ্রিক বিশ্লেষণ করা সম্ভব নয়।
রাশিয়ার এই জীবাণু যুদ্ধের দাবি নিয়ে তেমন উদ্বিগ্ন না-হলেও আন্তর্জাতিক দুনিয়া অবশ্য ইউক্রেনের বিভিন্ন পরমাণু কেন্দ্রে রুশ হামলার জেরে বেজায় চিন্তিত। হামলায়, পরমাণু কেন্দ্রগুলোর কতটা ক্ষতি হয়েছে, তার প্রভাব কতটা পরিবেশে ছড়িয়েছে, তা নিশ্চিত করতে চেষ্টার ত্রুটি রাখছে না আন্তর্জাতিক পরমাণু গবেষণা সংস্থা। তবে, সংস্থার কর্তারা নিশ্চিত যে এখনও ইউক্রেনের পরমাণু শক্তিকেন্দ্রগুলো থেকে ক্ষতিকারক বিকিরণ ছড়ায়নি।
Read in English