ইউক্রেনের উপর ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। কিয়েভ সংলগ্ন শহরগুলিতে নিহত হয়েছেন শয়ে শয়ে মানুষ। রাস্তায় ছড়িয়ে পড়েছিল লাশ। নিরাপরাধ সাধারণ ইউক্রেনীয়দের উপর পুতিন বাহিনীর এই হামলার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিল ওয়াশিংটন। রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এ জন্য মস্কোর বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাসের দাবি তোলে আমেরিকা। যার জেরে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভার হিউম্যান রাইটস কাউন্সিল থেকে রাশিয়াকে বরখাস্ত করা হল।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রস্তাব ঘিরে ভোটাভুটিও হয়। ১৯৩টি সদস্য দেশের মধ্যে ৯৩জন সদস্য দেশ রাশিয়াকে বরখাস্তের পক্ষে ভোট দিয়েছে। ২৪টি সদস্য দেশ মস্কোর পক্ষে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছে। ভোটাভুটি থেকে বিরত থেকেছে ৫৮টি দেশ। এর মধ্যে ভারতও ছিল। রাষ্ট্রসংঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি টিএস ত্রিমূর্তি জানিয়েছেন, ভারত ভোটদানে বিরত থেকেছে।
এক বিবৃতিতে ত্রিমূর্তি জানিয়েছেন, ভারত সমস্ত রকম হিংসার অবসান চায়। সম্প্রতি বুচাতে সাধারণ মানুষকে হত্যা নিয়ে ভারত অত্যন্ত উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এনিয়ে স্বাধীন তদন্তেরও দাবি করা হয়েছে। সামগ্রিক পরিস্থিতিতে বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশে এর প্রভাব পড়ছে। খাবার ও শক্তিসম্পদের দাম ক্রমশ বাড়ছে। সমস্যা সমাধেনর জন্য রাষ্ট্রসংঘের ভেতরে ও তার বাইরে যৌথভাবে কাজ করা উচিত। সরকারিভাবে টুইট করে জানানো হয়েছে যে, মানবাধিকার কাউন্সিল থেকে রাশিয়াকে বরখাস্ত করা সংক্রান্ত রেজলিউশন থেকে ভারত বিরত থেকেছে। পদ্ধতিগত কারণেই ভারতের এই পদক্ষেপ।
২০০৬ সালে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভার আওতায় মানবাধিকার কাউন্সিল গঠন করা হয়। রাশিয়া দ্বিতীয় দেশ যাদের এই মানবাধিকার কাউন্সিল থেকে বরখাস্ত করা হল। এর আগে ২০১১ সালে উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়াকে বরখাস্ত করা হয়েছিল।
রাশিয়ান ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে শুরু থেকেই, ভারত রাষ্ট্রসংঘঘের নিরাপত্তা পরিষদ, সাধারণ পরিষদ এবং মানবাধিকার কাউন্সিলে বিভিন্ন প্রস্তাবের উপর ভোটাভুটি থেকে বিরত থেকেছে। বারবারই দাবি করেছে, আলোচনার মাধ্যমে সমাধানসূত্র খুঁজতে। জোট নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রাখতেই দিল্লির এই পদক্ষেপ বলে স্পষ্ট।
এর মধ্যেই গত বুধবার বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর বলেছিলেন যে, 'ভারত সর্বাগ্রে দৃঢ়ভাবে যে কোনও সংঘর্ষের বিরুদ্ধে। রক্তঝরিয়ে এবং নিরপরাধদের জীবনের বিনিময়ে কোনও সমাধান হয় না, এটা আমরা বিশ্বাস করি। আজকের দিনে আলোচনা এবং কূটনৈতিক পথই হল যে কোনও বিরোধের সঠিক উত্তর। তবে, ভারতের বিদেশনীতি ও পদক্ষেপে দেশের স্বার্থ বজায় থাকবে।'
Read in English