১১ দিনে পা রাখল রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। রুশ হামলায় বিধ্বস্ত পূর্ব ইউরোপের দেশ ইউক্রেন। একাধিক শহর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। নির্বিচারে সাধারণ নাগরিককে গুলিতে ঝাঁঝরা করছে রুশ সেনা। বাদ যাচ্ছে না সাংবাদিক, বয়স্ক-মহিলা এমনকী দুধের শিশুও। ইরপিনে রুশ বোমাবর্ষণে এক দেড় বছরের শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যেই ইউরোপ-সহ তামাম দুনিয়াকে চরম হুঁশিয়ারি দিল রাশিয়া। পাশাপাশি এও জানাল, দাবি মানা হলে তবেই ইউক্রেনে সামরিক অভিযান বন্ধ করা হবে।
রবিবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন চরম হুঁশিয়ারি দিলেন, ইউক্রেনের পাশে যে দেশ বা গোষ্ঠী দাঁড়াবে তাকে চরম মূল্য দিতে হবে। ইউক্রেনে হামলার পর থেকে আমেরিকা, ব্রিটেন-সহ একাধিক পশ্চিমী দুনিয়ার দেশ রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার পাশে রয়েছে সিরিয়া, বেলারুশ এবং আফ্রিকার কয়েকটি স্বৈরতান্ত্রিক দেশ। ভারত রাষ্ট্রসংঘে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোটাভুটিতে বিরত থেকেছে। কিন্তু একই সঙ্গে ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধ করে আলোচনার দাবি জানিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে আর্থিক দিক থেকে রাশিয়াকে কোণঠাসা করতে আমেরিকা, ব্রিটেন-সহ একাধিক দেশ যে নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে তাতে ক্ষুব্ধ পুতিন। এদিন সাফ তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, নিষেধাজ্ঞা না তুললে তার ফল হবে মারাত্মক। এমনকী ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ালে কোনও দেশকে ছেড়ে কথা বলবেন না তিনি। ক্রেমলিনের তরফে জানানো হয়েছে, ইউক্রেনে নো-ফ্লাই জোন নিয়ে ক্ষুব্ধ পুতিন। অবিলম্বে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করলে ইউক্রেনের উপর আরও আক্রমণ নামিয়ে আনার হুমকি দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন গোটা বিশ্বে নিষিদ্ধ রাশিয়া, ব্যবসা বাড়ানোর আবদার ভারতের কাছে
এদিকে, ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার প্রতিবাদে রাষ্ট্রসংঘে একাধিক প্রস্তাব এসেছে। সেই সব প্রস্তাবে সায় দিয়ে ভারতকেও সুর মেলাতে বলা হয়েছিল। রাশিয়া কোনও চাপ দেয়নি। ভারতকে কোনও শর্তও দেয়নি। বরং, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের থেকে ভারতের ওপর চাপ এসেছে। ভারত এবং রাশিয়ার সম্পর্কের গভীরতা বোঝাতে গিয়ে এমনটাই দাবি করলেন নয়াদিল্লির রুশ রাষ্ট্রদূত ডেনিস আলিপভ।
কিন্তু, মিত্র দেশ ভারতের থেকে এটুকু পেয়ে রাশিয়া যে পুরোপুরি সন্তুষ্ট নয়, তা-ও ঘুরিয়ে স্পষ্ট করে দিয়েছেন আলিপভ। কার্যত নরম-গরম, উভয় সুরই বজায় রেখে আলিপভ বলেছেন, ইউক্রেন সমস্যার প্রভাব গোটা বিশ্বে পড়েছে। এমনকী, ভারত-রাশিয়া সম্পর্কেও তা রেখাপাত করেছে। এই প্রভাবের সীমা এখন কল্পনাও করা যাচ্ছে না। ভারত এই পরিস্থিতির সুযোগ নিতে পারে, রাশিয়ার সঙ্গে আর্থিক সম্পর্ক জোরদার করে।
আরও পড়ুন ১১ হাজার রুশ সেনা নিকেশের দাবি, ভারী হামলায় ক্ষতবিক্ষত ইউক্রেনও
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে রাষ্ট্রসংঘ, ইতিমধ্যেই ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়াকে চাপে ফেলতে নানা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তাতে রীতিমতো করুণ দশা হয়ে পড়েছে রাশিয়ার অর্থনীতির। কারণ, বাকি বিশ্বের সঙ্গে রাশিয়ার যাবতীয় লেনদেন এতে কার্যত স্তব্ধ হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে তারা যে ভারতের ঘাড়েই ভর দিতে চায়, কার্যত তেমনই বোঝানোর চেষ্টা করেছেন নয়াদিল্লির রুশ রাষ্ট্রদূত।