/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2022/02/পুতিন.jpg)
নতুন দুই রাষ্ট্রের স্বীকৃতিপত্রে স্বাক্ষর করছেন পুতিন।
পরিবর্তিত পরিস্থিতি সম্পর্কে সরাসরি জানতে ইউক্রেনের বিদেশমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবার সঙ্গে কথা বললেন মার্কিন বিদেশসচিব অ্যান্টনি জে ব্লিনকেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই সংকটময় পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের পাশে থাকবে। ইউক্রেনের বিদেশমন্ত্রীকে দেওয়া আশ্বাসে এমনটাই জানিয়েছেন ব্লিনকেন। ইউক্রেনের পাশাপাশি চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র সঙ্গেও কথা বলেন ব্লিনকেন। সেখানেও তিনি ইউক্রেনের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
পাশাপাশি, রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকেও ইউক্রেন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে রাষ্ট্রসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিন্ড বলেন, 'ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিঘ্নিত করা ও আন্তর্জাতিক আইন ভাঙায় রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আমরা রাশিয়াকে বাহিনী প্রত্যাহার করে আলোচনার টেবিলে বসা এবং শান্তির লক্ষ্যে কাজ করার জন্য আহ্বানের ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ।'
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই মনোভাব দেখে রাশিয়ার পাশ থেকে সরে গিয়েছে চিনও। শি জিনপিং সরকারের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এক বিবৃতিতে তারা সবপক্ষকে নিরস্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। একইসঙ্গে ওয়াং জানিয়েছেন, তাঁরা বিবাদমান সব পক্ষের সঙ্গেই কথা বলবেন।
এর আগে সোমবারই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন ইস্যুতে তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা পর রাশিয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান পুতিন। প্রথম এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী ইতিহাস তুলে ধরে তিনি বলেন, 'ইউক্রেন একসময় রাশিয়ার অংশ ছিল। সেই সময় ইউক্রেন সব দিক থেকেই ভালো ছিল। বর্তমানে ইউক্রেনের পরিস্থিতি তলানিতে ঠেকেছে। সোভিয়েত চুক্তি অনুযায়ীও ইউক্রেনের ন্যাটোর অন্তর্ভুক্ত হওয়া উচিত না। ন্যাটোও কথা দিয়েছিল, তারা বিস্তার ঘটাবে না। কিন্তু, সেই প্রতিশ্রুতি তারা ভেঙেছে। বর্তমান ইউক্রেন সরকার ন্যাটো এবং আমেরিকাপন্থী হয়ে পড়েছে। ইউক্রন স্বীকার না-করলেও মার্কিন এবং ন্যাটো বাহিনী বিশেষ মিশনের নামে ইউক্রেনে কাজ করছে। এই পরিস্থিতি ইউক্রেনের অনেকেই কিয়েভের সরকারের ওপর ক্ষুব্ধ। বিশেষ করে ডোনেত্স্ক এবং লুহানসকের বাসিন্দারা। তাঁরা আলাদা রাষ্ট্র চায়। রাশিয়া তাঁদের স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিচ্ছে।'
ক্রেমলিনের এই সিদ্ধান্তে কার্যত ইউক্রেন ভাগ হয়ে গেল। রুশপন্থী বিদ্রোহীদের দেওয়া এই স্বীকৃতিতে দুটি 'বাফার স্টেট' তৈরি হল। মার্কিন এবং ন্যাটোপন্থী ইউক্রেনের কিয়েভ সরকারের প্রতিপক্ষ হিসেবে এই দুই দেশ কাজ করবে। একইসঙ্গে এর ফলে রাশিয়ার নিরাপত্তা থেকে অন্যান্য স্বার্থও চরিতার্থ হবে। কারণ, ২০১৪ সাল থেকে এই দুই বিদ্রোহী এলাকার সঙ্গে ইউক্রেনের কিয়েভ প্রশাসনের তীব্র বিরোধ চলে আসছে।
আরও পড়ুন- গোমাতার গুঁতোই এখন পূর্বাঞ্চলে মাথাব্যথার কারণ যোগী আদিত্যনাথের
এই দুই 'বাফার স্টেট' তৈরির ফলে ইউক্রেন সংকট আপাতত মিটেও মিটল না। কারণ, সরাসরি রাশিয়া হয়তো ইউক্রেনে হামলা চালাবে না। কিন্তু, বিদ্রোহী নতুন দুই রাষ্ট্রকে রাশিয়া সাহায্য করায় ওই অঞ্চলে সংঘর্ষের ঘটনা আরও বাড়বে। একইসঙ্গে এই ঘটনায় রাশিয়া এবং আমেরিকার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই চলা বিশ্ব ইতিহাসের 'ঠান্ডা যুদ্ধ' যেন আবার নতুন করে শুরু হল। মঙ্গলবার থেকেই যার প্রভাব পড়তে শুরু হয়েছে নিরাপত্তা পরিষদের বিশেষ বৈঠকে। পাশাপাশি, বিভিন্ন দেশের নেতাদের সঙ্গে মার্কিন নেতৃত্বের ফোনালাপে।
Read story in English