ইউক্রেন ইস্যুতে বিশ্বজোড়া চাপের মুখে এখন মুখ বাঁচাতে মরিয়া রাশিয়া। ইউক্রেন সীমান্তে ১,৩০,০০০ সেনা মোতায়েন করেছিল মস্কো। মোতায়েন করেছিল বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটোর সঙ্গে হাজারো বৈঠকেও ইউক্রেনের ব্যাপারে গোঁ ধরে বসেছিল রাশিয়া। বাধ্য হয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হুমকি দেয়, ইউক্রেনে হামলা হলে তারা ন্যাটো জোটের সঙ্গে মিলে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে, শেষ পর্যন্ত রাশিয়া দাবি করে, তারা ইউক্রেনে হামলা চালানোর প্রস্তুতি একদমই নেয়নি। বরং, এটা ছিল রাশিয়ার একটা সামরিক মহড়া মাত্র। বুধবার রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রক দাবি করেছে, এই সামরিক মহড়া শেষ হয়েছে। একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে রুশ প্রশাসন। সেই ভিডিওয় দেখা যাচ্ছে যে রাশিয়ার সেনাবাহিনী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ইউক্রেন সীমান্তের ক্রিমিয়া এলাকা থেকে ফিরে যাচ্ছে।
এর আগে বুধবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এক সতর্কবার্তায় জানায়, রাশিয়ার ইউক্রেনে হামলার স্পষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক টেলিভিশন বার্তায় জানান, রাশিয়ার সেনা ফেরানোর দাবি এখনও যাচাই করা যায়নি। বাইডেন আরও জানান, সেনা প্রত্যাহারের বদলে ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়া সেনাসংখ্যা বাড়িয়েছে। একলক্ষ থেকে তা বাড়িয়ে দেড় লক্ষ করেছে।
তারমধ্যেই মঙ্গলবার ধারাবাহিক সাইবার হামলার শিকার হয়েছে ইউক্রেন সেনার ওয়েবসাইটগুলো। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা দফতর এবং এর প্রধান ব্যাংকগুলো সাইবার হামলায় অচল হয়ে যায়। সাইবার হামলার পর থেকে ইউক্রেনের অন্তত ১০টি প্রধান ওয়েবসাইট 'আনরিচেবল' হয়ে যায়। তালিকায় ইউক্রেনের বিদেশ এবং সাংস্কৃতিক দফতরের ওয়েবসাইটগুলোও রয়েছে।
আরও পড়ুন তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর মুখে রাশিয়া পিছু হঠায় জাগল আশার আলো
এই হামলা রাশিয়াই চালিয়েছে বলে অভিযোগ ইউরোপের সামরিক বিশেষজ্ঞদের। তাঁদের অভিযোগ, সাইবার হামলা দীর্ঘদিন ধরেই রাশিয়ার যুদ্ধকৌশলের অঙ্গ। এর আগে ইউক্রেন এবং জর্জিয়ায় হামলার সময়ও ওই দুই দেশে সাইবার হামলা চালিয়েছিল রাশিয়া। যা দেখে ন্যাটো মনে করছে, সতর্কতার জেরে আশা তৈরি হয়েছে। এখনও পরিস্থিতির অবনতি ঘটেনি, এই পর্যন্ত মাত্র।
তবে, যুদ্ধ হোক ছাই না- হোক, তারা যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওপর ক্ষুব্ধ, তা বোঝানোর কসুর করেনি মস্কো। বুধবার রাশিয়ার কূটনীতিবিদ কনস্টানটিন গাব্রিলভ জানিয়েছেন, তারা বেলারুশে সামরিক মহড়া সংক্রান্ত বৈঠকে অংশ নেবেন না। ইউরোপের নিরাপত্তা এবং সহযোগিতা সংক্রান্ত এই বৈঠকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর অংশগ্রহণের কথা। ইউক্রেন পরিস্থিতিতে ন্যাটো তাদের বিরোধিতা করায় যে তারা বৈঠক এড়ানোর সিদ্ধান্ত নিল, তেমনটাই বোঝাতে চেয়েছে ক্রেমলিন।
Read story in English