এবার ইউক্রেনের মেলিটোপোল শহরের মেয়র কে অপহরণের অভিযোগ রাশিয়ার বিরুদ্ধে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলেছেন খোদ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লোদিমির জেলেনস্কি। তার অভিযোগ, রাশিয়া মেলিটোপোল শহরের মেয়র ইভান ফেডোরভকে অপহরণ করেছে। সংবাদ সংস্থা এপি সূত্রে এই খবর পাওয়া গেছে। প্রেসিডেন্ট ভ্লোদিমির জেলেনস্কি এই ঘটনাকে বর্বরোচিত এবং ভয়াবহ বলে উল্লেখ করেছেন। সেই সঙ্গে তার অভিযোগ, আইএসআইএস সন্ত্রাস বাদীরা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত।
জেলেনস্কি শুক্রবার সন্ধ্যায় একটি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বলেন, রাশিয়া সন্ত্রাসকে এক অন্য মাত্রায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের শারিরীক ভাবে নিগ্রহের অভিযোগও তুলেছেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। ইউক্রেনের পার্লামেন্ট একটি টুইট বার্তায় এই খবর নিশ্চিত করেছে। টুইট বার্তা পার্লামেন্টের তরফে জানানো হয়েছে ১০০ জনের একটি দল মেলিটোপোলের মেয়র ইভান ফেডোরভকে অপহরণ করেছে। রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধ প্রায় দু সপ্তাহ অতিক্রান্ত। অনেকেই বলছিলেন যে, এবার ইউক্রেনে আগ্রাসণের বহর কমাচ্ছে মস্কো। জানা গিয়েছে, তিনি শহরের ক্রাইসিস সেন্টারে গিয়েছিলেন। সেখানে খাবার ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর সরবরাহে কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছিল, তা দূর করতেই গিয়েছিলেন। এমন সময়ই রুশ বাহিনী তাঁকে অপহরণ করে নেয়। শুক্রবার রাতে একটি ভিডিয়ো বার্তায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জ়েলেনস্কিও অপহরণের কথা জানান। অপহৃত ইভান ফেডোরোভকে একজন সাহসী মেয়রের অ্যাখ্যা দেন প্রেসিডেন্ট। বলেন, উনি ইউক্রেন ও তাঁর নিজস্ব গোষ্ঠীর জন্য লড়াই চালাচ্ছেন।
প্রেসিডেন্ট জ়েলেনস্কি বলেন, “এটা স্পষ্টতই বিরোধীদের দুর্বলতার প্রতীক… তারা সন্ত্রাসের এক নতুন পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেখানে তারা স্থানীয় ইউক্রেনীয় প্রশাসনের প্রতিনিধিদেরই সরিয়ে ফেলার চেষ্টা করছে। মেলিটোপেলের মেয়রকে আটকে রাখা অপরাধ। এটা কেবল নির্দিষ্ট কোনও এক ব্যক্তি, কোনও জনগোষ্ঠী বা ইউক্রেনের বিরুদ্ধে অপরাধ নয়, বরং গোটা গণতন্ত্রেরই বিরুদ্ধে অপরাধ…. রাশিয়ান অনুপ্রবেশকারীদের আচার-আচরণকে ইসলামিক স্টেট জঙ্গিদের সমগণ্যই করা হবে।”
আরো পড়ুন: দেশে ফিরলেন সুমিতে আটকে থাকা পড়ুয়ারা, ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত অভিভাবকরা
কিন্তু আদতে যে তা ঠিক নয় তা প্রমাণে মরিয়া রাশিয়া। তাই, ইউক্রেনে লড়াইয়ের জন্য এবার মধ্যপ্রাচ্যের স্বেচ্ছাসেবী যোদ্ধাদের পাঠানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই তাতে সবুজ সংকেতও দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের দাবি, ইউক্রেনে মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় ১৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবক যোদ্ধাকে পাঠানো হতে পারে। রাশিয়ার ঘোষণা, যারা স্বেচ্ছায় রুশ সেনাদের সঙ্গে ইউক্রেনে যুদ্ধ করতে যেতে চায়, তাদের সাদরে আমন্ত্রণ জানানো হবে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু জানিয়েছেন, মধ্যপ্রাচ্যের ১৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবক রাশিয়ার হয়ে ইউক্রেনে লড়তে প্রস্তুত রয়েছেন। এর মধ্যেই ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলিকে নিশানা করেছে রাশিয়া। মস্কো বলেছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটো দেশগুলো রাশিয়ার প্রতি বন্ধুভাবাপন্ন নয়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন কাউন্সিলে রাশিয়া বিরোধী দেশগুলির সংখ্যাগরিষ্ঠতার সুযোগ নিচ্ছে।
রুশ বিদেশমন্ত্রকের দাবি, ন্যাটোভুক্ত রাষ্ট্রগুলো কাউন্সিল অব ইউরোপ ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে এবং ইউরোপের সাধারণ মানবাধিকার ও আইনি পরিস্থিতি ধ্বংস করতে তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ইউক্রেনে হামলা জারি রয়েছে রাশিয়ার। রাশিয়ান বাহিনী ইউক্রেনের বন্দর শহর মারিউপোল বোমাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে। আম নাগরিকদের ওই শহর থেকে বার করতে মানবিক করিডর গঠনের আর্জি জানিয়েছেন ইউক্রেন। উপগ্রহ চিত্রে দেখা যাচ্ছে যে, ট্যাঙ্ক এবং সমারস্ট্র সজ্জিত ৬৪ কমি কনভয় পুনরায় মোতায়েন করা হযচ্ছে। শহরের উত্তরে আন্তোনোভ বিমানবন্দরের কাছে সাঁজোয়া ইউনিটগুলি দেখা গিয়েছে।
Read full story in English