মেয়ে কঠিন রোগে আক্রান্ত। কোন মতে টাকার জোগাড় সেরেও ফেলেছেন মা! মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে যাবেন ঠিক তার আগের দিন ভয়ঙ্কর যুদ্ধ বাঁধল দুই দেশের মধ্যে। কী করবেন ভেবে না পেয়ে অগত্যা মেয়েকে নিয়ে কোন মতে ভিনদেশে পালিয়ে প্রাণে বেঁচেছেন। এক আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাতকারে মিস কাটিয়া জানান, মেয়ের চিকিৎসা তো বন্ধ করলে হবে না। আপাতত পোল্যাণ্ডের একটি বেসরকারি ক্যানসার হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে মেয়ের।
ক্রমবর্ধমান যুদ্ধ থেকে বাঁচতে ইউক্রেন থেকে পোল্যান্ডে পালিয়ে আসা ১০ লাখেরও বেশি মানুষের মধ্যে তারাও রয়েছেন। আরও সাত লাখের বেশি মানুষ রোমানিয়া এবং মলদোভার মতো প্রতিবেশী দেশে চলে গেছে। চার মিলিয়ন মানুষ শেষ পর্যন্ত দেশ ছাড়তে পারে অনুমান রাস্ট্রসংঘের। আর এত মানুষের দেশ ছেড়ে চলে আসাকে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা। সংস্থার ইউরোপীয় অঞ্চলের প্রধান হ্যান্স ক্লুজ এক সাক্ষাতকারে বলেন, এইভাবে মানুষ দেশ ছাড়তে থাকলে পার্শ্ববর্তী দেশগুলি স্বাস্থ্য সংকটের মুখে পড়বে। সেই সঙ্গেই রয়েছে কোভিডের চোখ রাঙানি।
ইউক্রেনে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন গত সপ্তাহে এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, হাসপাতাল, স্কুল এবং বহুতলে হামলা চালিয়েছে রাশিয়ান সেনা। ইউক্রেনে প্রয়োজনীয় ওষুধের ঘাটতি দেখা দিয়েছে এবং নবজাতক ওয়ার্ডগুলিকে বোমা হামলা থেকে রক্ষা করার জন্য ভূগর্ভস্থ স্থানে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। যদিও রাশিয়া সেই অভিযোগ কার্যত অস্বীকার করেছে। এখন আশঙ্কা হল প্রতিবেশী দেশগুলিতে এভাবে মানুষের ঢল নামতে শুরু করলে ভেঙ্গে পড়বে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো!
ডব্লিউএইচওর তরফে হ্যান্স ক্লুজ বলেছে যে পোল্যান্ড, স্লোভাকিয়া, রোমানিয়া এবং মলদোভায় স্বাস্থ্য পরিষেবাগুলি এখনও পর্যন্ত লড়াই জারী রেখেছে। "কিন্তু এটি আজকের মতো। আগামীদিনে এই পরিষেবা স্বাভাবিক রাখা একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে "। যদিও কিছুদিন আগেই বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, অক্সিজেন সংকটের মুখে ধুঁকছে ইউক্রেনের একাধিক হাসপাতাল। রুশ সেনা হাসপাতাল স্বাস্থ্য কর্মীদের ওপরেও হামলা জারি রেখেছে।
ওয়ারশ হাসপাতালের মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির পেডিয়াট্রিক্সের প্রধান আর্নেস্ট কুচার এক সাক্ষাতকারে জানিয়েছেন দীর্ঘ দু' বছর করোনার সঙ্গে লড়াই করে ডাক্তার স্বাস্থ্যকর্মীরা আজ ক্লান্ত তাঁর ওপর যুদ্ধের ফলে এত সংখ্যক মানুষকে পরিষেবা দিতে গেলে ভেঙ্গে পড়তে পারে স্বাস্থ্য পরিষেবা।