এবার ইউক্রেনে শিশু অপহরণে অভিযুক্ত রাশিয়া। রুশ সেনাবাহিনী ডোনেত্স্ক এবং লুহানস্ক থেকে ২,৩৮৯টি শিশুকে অপহরণ করেছে। এমনটাই অভিযোগ কিয়েভের মার্কিন দূতাবাসের। ওই শিশুরা অনেকেই চলতি যুদ্ধে মা-বাবাকে হারিয়েছে। পাশাপাশি, এমনও বহু শিশু আছে, যাদের পরিবারের সদস্যদের নিরাপদ আশ্রয় দেওয়ার নামে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে রাশিয়া। কিয়েভের মার্কিন দূতাবাসের অভিযোগ, 'সাহায্যের ছলে ওই শিশুদের অপহরণ করেছে পুতিনের প্রশাসন। তাদের আটকে রেখেছে রাশিয়ার নিয়ন্ত্রিত এলাকায়।'
এই পরিস্থিতিতে রাশিয়া তাদের হামলা তীব্র করেছে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে সুর নরম করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, ন্যাটোয় যোগ দিতে চান না। তার পরিবর্তে রাশিয়া হামলা বন্ধ করুক। তবে, রাশিয়া সেসবে কর্ণপাত করতে নারাজ। বর্তমানে যুদ্ধে সুবিধাজনক অবস্থায় থাকা রাশিয়া বন্দর শহর মারিউপোলে ইউক্রেনের সেনাদের আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু, সেই প্রস্তাব পত্রপাঠ খারিজ করে দিয়েছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির অনুগামী।
ক্ষুব্ধ রাশিয়া পরিবর্তে হামলার গতি তীব্র করায় বিপাকে পড়েছে ইউক্রেন সরকার। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি মঙ্গলবার রাশিয়ার কাছে আবেদন করেছেন, মারিউপোলের বাসিন্দাদের যাতে মানবিক সাহায্য দেওয়া হয়। মারিউপোলের সাধারণ নাগরিকদের যাতে ইউক্রেনের এই দক্ষিণ বন্দর শহর ছাড়ার সুযোগ দেওয়া হয়, সেই আবেদনও তিনি করেছেন। জেলেনস্কির সুরেই ইউক্রেনের উপপ্রধানমন্ত্রী ইরিনা ভেরেসচুক এক বার্তায় জানিয়েছেন, তাঁরা রাশিয়ার কাছে মারিউপোলের নাগরিকদেরকে নিরাপদে শহর ছাড়তে দেওয়ার আবেদন রাখছেন। এই জন্য রাশিয়ার থেকে ' সেফ করিডর' চাইছেন। কারণ, রাশিয়ার সৈন্যরা মারিউপোলের নাগরিকদের কাছে ন্যূনতম সাহায্য পৌঁছতে দিতে বাধা দিচ্ছে। একই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে দক্ষিণের শহর খেরসনেও। সেখানকার নাগরিকদের জন্যও ' সেফ করিডর' চেয়েছেন ইউক্রেনের উপপ্রধানমন্ত্রী।
আরও খবর- চাই না NATO-র সদস্যপদ, যুদ্ধ বন্ধ করার আর্জি জেলেনস্কির
এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার ইতালির পার্লামেন্টের সদস্যদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স মারফত কথা বলেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। তাঁর দাবি, রাশিয়া আসলে সোভিয়েত জমানার মতোই ইউরোপের বিস্তীর্ণ অঞ্চল দখল করতে চায়। ইউক্রেন তাদের কাছে ইউরোপের প্রবেশের দরজা মাত্র। ইউক্রেন তাই সর্বশক্তি দিয়ে রাশিয়ার সেনার প্রতিরোধ করছে। কারণ, তাঁর সরকার রাশিয়ার বর্বরতাকে রুখতে বদ্ধপরিকর। কিন্তু, এই যুদ্ধে এখন তাঁর দেশের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গিয়েছে।
Read story in English