Advertisment

সাংহাইয়ে অব্যাহত করোনা দাপট, শিশুদের আইসোলেশন নিয়ে বাড়ছে অসন্তোষ

চিনে কোভিড পজিটিভ শিশুর সংখ্যা বাড়ছে ঝড়ের গতিতে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Shanghai residents told to stay inside as lockdown tightened

লকডাউনে ফাঁকা চিনের রাস্তাঘাট

ফের দুবছর পর করোনা ঢেউ! আর তাতেই নাজেহাল অবস্থা চিনের। শুধু চিনেই নয়, করোনা চোখ রাঙাচ্ছে ইউরোপ থেকে এশিয়ার একাধিক দেশে। ফের লকডাউনের সাক্ষী হতে চলেছে বিশ্বের একাধিক দেশ। এর মাঝেই চিনের কোভিড পজিটিভ শিশুর সংখ্যা বাড়ছে। তাদের মা বাবার থেকে দূরে রাখা হচ্ছে। শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা করছেন অভিভাবকরা। করোনার নয়া প্রজাতির দাপট ঠেকাতে শিশুদেরও তাদের বাবা মায়ের থেকে তাদের সন্তানদের হাসপাতালে আইসোলেশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। শিশুদের এভাবে মা বাবা ছাড়াই কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্রে পাঠানো নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে।

Advertisment

২৬ মার্চ জ্বরে আক্রান্ত হয়ে সাংহাইয়ের একটি হাসপাতালে তার তিন বছরের সন্তানকে নিয়ে আসেন এথার ঝাও। পরীক্ষার পর দেখা যায়, মা এবং সন্তান দুজনের করোনা পজিটিভ। মার অনুরোধ করা সত্ত্বেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোন এরকম ঝুঁকি না নিয়ে সন্তানকে হাসপাতালে ভর্তি করে নেয়।ঝাও’র কথায়, “আমি তিনদিন আমার সন্তানকে চোখ দেখতে পাই নি! শুধুমাত্র WhatsApp চ্যাটের মাধ্যমে হাসপাতালের তরফে খবর পেয়েছি সে ভাল আছে, সে এক ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা’।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ‘সাংহাইয়ের নিয়ম অনুসারে কোন প্রাপ্ত বয়স্ক যদি কোভিড পজিটিভ হন তাহলে তাকে আইসোলেশনে থাকা বাধ্যতামূলক। সেরকম বাচ্চারা যদি পজিটিভ হয় তবে তাদের জন্যও হাসপাতালে পেডিয়াট্রিক ওয়ার্ডে আইসোলেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে শিশুর সঙ্গে তার বাবা মা কোন ভাবেই থাকতে পারবেন না’।

এবিষয়ে সাংহাইয়ের একজন স্বাস্থ্য কর্তা গত সপ্তাহে বলেছিলেন যে ‘যে হাসপাতালগুলি কোভিড-পজিটিভ শিশুদের চিকিৎসা করছে তারা তাদের মা বাবার সঙ্গে অনলাইন যোগাযোগ বজায় রেখেছে, সরকারের অফিসিয়াল ওয়েচ্যাট অ্যাকাউন্ট মারফৎ’।

সম্প্রতি একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে যেখানে দেখা গিয়েছে একটি হাসপাতালে একই বেডে গাদাগাদি করে রাখা হয়েছে তিন-চারটি শিশুকে। অন্ধকার ঘর। শিশুরা হামাগুড়ি দিয়ে তাদের  মা বাবার কাছে যাওয়ার জন্য চিৎকার জুড়ে দিয়েছে। এমন ভিডিও ভাইরাল হতেই হাসপাতালের তরফে যুক্ত দেওয়া হয়, জেনারেল ওয়ার্ড থেকে পেডিয়াট্রিক ওয়ার্ডে সেই সময় বাচ্চাদের স্থানান্তরিত করা হচ্ছিল। সেই সময় একসঙ্গে বাচ্চাদের রাখতে হয়েছিল, এটা সামগ্রিক চিত্র নয়।

আরো পড়ুন: বিক্ষোভ আছড়ে পড়ার আশঙ্কা, শ্রীলঙ্কায় ৩৬ ঘন্টার কার্ফু জারি, গোটাবায়াকে জোটসঙ্গীর হুঁশিয়ারি

যদিও এমন যুক্ত মানতে নারাজ অভিভাবকরা। এক অভিভাবকের কথায়, “এটি ভয়ঙ্কর! কীভাবে দেশের সরকার এমন নিয়ম আনতে পারে? অনেক ক্ষেত্রে তিনমাস বয়সী শিশুকেও আলাদা করে আইসোলেশনে রাখা হচ্ছে! যদিও এব্যাপারে সাংহাইয়ের একটি হাসপাতাল সূত্রে জানান হয়েছে, “আমরা শিশুদের চিকিৎসার ব্যপারে সবদিক খেয়াল রাখছি, তাদের মা বাবার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে”। এদিকে সূত্রের খবর সাংহাই কিন্ডারগার্টেন গুলি থেক৫ থেকে ৬ বছর বয়সী ২০ টিরও বেশি শিশুকে তাদের বাবা মাকে ছাড়াই একটি কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে ওমিক্রনের নয়া প্রজাতির দাপটে ত্রস্ত সাংহাই। হুহু করে বেড়ে চলেছে আক্রান্তের সংখ্যা। সেই সঙ্গে শহর জুড়ে জারী করা হয়েছে গণ কোভিড পরীক্ষা। সাংহাই প্রশাসন বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে ইতিমধ্যে ৯০ লক্ষের বেশি মানুষের করোনা পরীক্ষা হয়েছে। সেই সঙ্গে আরও বলা হয়েছে গোটা মাস জুড়েই জারী রাখা হবে কোভিড বিধিনিষেধ। এদিকে লকডাউনের ফলে বানিজ্যনগরী সাংহাইতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে একাধিক ব্যবসা।

সংক্রমণের বাড়বাড়ন্তের ফলে বাসিন্দাদের বাড়ির বাইরে ঘোরাঘুরিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সকালে-বিকেলে পোষ্যদের নিয়ে বেরনোও বারণ। বলা হয়েছে, একমাত্র কোভিড টেস্ট করানোর জন্যই বাইরে বেরনোর ছাড়পত্র দেওয়া হবে। এমনকি আবাসনগুলির ভিতরেও আবাসিকদের ঘোরাঘুরি করতে বারণ করা হয়েছে।

সেই সঙ্গে লকডাউনের ফলে প্রবল অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে চিন। সেদেশের অর্থনীতিবিদদের মতে সাংহাইয়ের মতো একটি বড় শহরে লক ডাউন করার ফলে জাতীয় প্রকৃত মোট দেশীয় উৎপাদন ৪% হ্রাস পাবে। সাংহাইয়ের পূর্ব প্রান্তে পুডং জেলায় বেশ কিছু শিল্প-ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের অফিস, সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের সদর এখানেই।

Read full story in English

china COVID-19
Advertisment