ঘুম থেকে উঠলেই, সীমান্তে গোলাগুলি কি তবে অতীত? পাকিস্তান সীমান্তে গুলির শব্দ। জম্মু-কাশ্মীরের বাসিন্দারা গত কয়েক দশকের এই ছবিটা আগেই ভুলে গেছেন। এবার কি তবে, গলাগলির দিন এল? প্রশ্নটা উসকে দিলেন খোদ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ নিজেই। তিনি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর সীমান্তের এপার থেকে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জানিয়েছিলেন, শান্তি চাই উপমহাদেশে।
ইমরানের চার বছরে ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত দৈনিক গুলিবিনিময় দেখেনি। তেমনটাই শেহবাজের জমানাতেও কাটবে বলেই আশা প্রকাশ করেছিলেন মোদী। এবার, উলটো দিক থেকে বার্তা এল। সেখানেও গুলি নয়, গলাগলির আভাস। দাদা নওয়াজের আমলে শরাফত বজায় রাখেনি ইসলামাবাদ। কার্গিলে হানা ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে নতুন ক্ষত তৈরি করে দিয়ে গেছে। উজির-এ-আজমের কুর্সিতে বসার পর অবশ্য দাদার সেই পথে না-হাঁটারই আভাস দিয়েছেন শেহবাজ। অন্যান্য ক্ষেত্রে বরাবরই দাদার পদাঙ্ক অনুসরণকারী শেহবাজ জানিয়েছেন, তিনিও চান ভারত-পাকিস্তান বন্ধুত্ব।
আরও পড়ুন- ‘ভারতে মানবাধিকার লঙ্ঘন বেড়েছে’, অভিযোগ মার্কিন বিদেশ সচিবের
এর আগে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া, ভারত-পাকিস্তানের সুসম্পর্কের পক্ষেই সওয়াল করেছিলেন। এমনিতে পাকিস্তান আর্থিকভাবে দুর্বল অবস্থায়। তার ওপর বিশ্বজুড়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মেরুকরণ, বর্তমান পরিস্থিতিতে চিনের অনুগত পাকিস্তানকে কার্যত নিঃসঙ্গ অবস্থায় পৌঁছে দিয়েছে। আমেরিকা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অযাচিত হস্তক্ষেপ করছে বলে বারবার অভিযোগ করেছেন সদ্য অপসারিত প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তাঁর অনুগামীরা। বিরোধী দলনেতা থেকে শেহবাজ পাকিস্তানের ২৩তম প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দিনও সেই বিক্ষোভ ইসলামবাদ থেকে করাচি, সর্বত্র স্লোগান তুলেছে। ডাক দিয়েছে 'জেল ভরো' আন্দোলনের। অবিলম্বে ভোট করার দাবিও জানিয়েছেন ইমরান। কাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চান, অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে পাকিস্তানের মানুষই তা সিদ্ধান্ত নিক। এর পাশাপাশি, আগামী ১৩ এপ্রিল পেশওয়ারে সমাবেশ করবেন বলেও জানিয়ে দিয়েছেন ইমরান।
এই অগ্নিগর্ভ পাকিস্তান সামলাতে শেহবাজের কাশ্মীর নিয়ে উসকানি বড় হাতিয়ার হতেই পারে। এই আশঙ্কা ভারতের প্রথম থেকেই রয়েছে। তবে, এখন যে জঙ্গিপনার চেয়েও তাঁরা বেশি করে পাকিস্তানের আর্থিক ক্ষেত্রে মনোনিবেশ করতে চান, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন শেহবাজ। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি জানিয়েছেন, পাকিস্তানও জম্মু-কাশ্মীরের পাশাপাশি সব বিষয়ে ভারতের সঙ্গে শান্তি-সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ চায়। সুখ এবং সমৃদ্ধিতে ভরা পাকিস্তানই এখন তাঁর লক্ষ্য বলেও জানিয়েছেন ইসলামাবাদের নতুন উজির-এ-আজম।
Read story in English