কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপি এবং তাদের পরামর্শদাতা সংঘ পরিবার দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর ভূমিকা নিয়ে বারবার প্রশ্ন তুলেছে। স্বাধীনতা লাভ থেকে কাশ্মীর হোক বা চিন নীতি। পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরু যে আসলে ব্যর্থ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তা প্রমাণ করতে সংঘ পরিবারের চেষ্টার ত্রুটি নেই।
কিন্তু, মোদী সরকার বা সংঘ পরিবার এমনটা বোঝাতে চাইলেও বিশ্বের অনেক দেশই কিন্তু পণ্ডিত নেহেরুকে এখনও আদর্শ ব্যক্তি বলেই মনে করে। অতীতে বারবার এমনটা দাবি করেছে কংগ্রেস। সেই সব দেশের তালিকায় যে সিঙ্গাপুরও আছে, এবার তার প্রমাণ দিল সিঙ্গাপুর নিজে। খোদ সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি সিয়ান লুঙ সেখানকার পার্লামেন্টে আদর্শ প্রধানমন্ত্রীর উপমা দিতে গিয়ে তুলে ধরলেন ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর নাম।
ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর নাম উচ্চারিত হওয়ার সময় সিঙ্গাপুরের পার্লামেন্টে একটা বিতর্ক চলছিল। ওয়ার্কার্স পার্টির প্রাক্তন জনপ্রতিনিধি রইসা খানের অসত্য ভাষণ নিয়ে এই বিতর্ক। সিঙ্গাপুরের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী সেই সময় বলেন, ' বেশিরভাগ দেশ উচ্চ আদর্শ এবং মহান মূল্যবোধ নিয়ে গড়ে ওঠে ও পথচলা শুরু করে। তীব্র আবেগ নিয়ে এই চলা শুরু হয়। যে নেতারা লড়াই করে স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনেন, তাঁরা ব্যতিক্রমী চরিত্র হন। তাঁদের মধ্যে অতুলনীয় সাহস, সংস্কৃতি এবং অসাধারণ দক্ষতা থাকে। তাঁরা অগ্নিপরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যান। আর, দেশ এবং জাতির নেতা হয়ে ওঠেন। তাঁদের মধ্যে কেউ হন ডেভিড বেন-গুরিয়নস। কেউ হন জওহরলাল নেহেরু।'
আরও পড়ুন- ত্রিপুরাবাসীর পালস বুঝতে ব্যর্থ তৃণমূল’, বিস্ফোরক জোড়া-ফুলে আসা বিধায়ক
একথা বলার পর সিঙ্গাপুরের প্রসঙ্গ টেনে আনেন সেদেশের প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'আমরাও এমন নেতা পেয়েছি। বিপুল আত্মমর্যাদা বোধের মাধ্যমে অনুপ্রাণিত করে যে নেতারা তাঁদের লোকেদের এক নতুন সাহসী পৃথিবী তৈরির পথে চালিত করেছেন। কিন্তু, পরবর্তী প্রজন্ম সেই গতি এবং চালিকাশক্তি ধরে রাখতে অক্ষম হয়ে পড়েছে। আর, দশকের পর দশক ধরে পরিস্থিতির অবক্ষয় ঘটেছে।'
সম্প্রতি ভারতের পাঁচটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন চলছে। সেই নির্বাচনে বিজেপি এবং সংঘ পরিবারের মূলধন হিন্দুত্ববাদী জাতীয়তাবোধ। যেখানে দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর ভূমিকা বহু ক্ষেত্রেই বেমানান। এই পরিস্থিতিতে সিঙ্গাপুরের পার্লামেন্টে জওহরলাল নেহেরুকে আদর্শ নেতারা মর্যাদা দেওয়া, যে ভারতের কংগ্রেস নেতাদের রীতিমতো অক্সিজেন জোগাল, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
Read story in English