রকেট হানায় কাঁপছে এলাকা, ইজরায়েলে বিনিদ্র রজনী কাটছে ভারতীয় নার্সদের

ঝাঁকে ঝাঁকে ধেয়ে আসছে রকেট, এয়ার সাইরেনে কান ঝালাপালা হয়ে যাওয়ার জোগাড়।

ঝাঁকে ঝাঁকে ধেয়ে আসছে রকেট, এয়ার সাইরেনে কান ঝালাপালা হয়ে যাওয়ার জোগাড়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Gaza Attack

ইজরায়েলি এয়ার স্ট্রাইকে গাজায় ধুলিসাৎ বহুতল।

গত মঙ্গলবার সন্ধেয়, কেরালার ইদুক্কি জেলার কৃষক কে সন্তোষ তখন ভিডিও কলে সুদূর ইজরায়েলে বসে থাকা স্ত্রী সৌম্যার সঙ্গে সুখ-দুঃখের কথা বলছিলেন। আচমকা পরিবারে নেমে এল শোকের ছায়া। গাজা থেকে উড়ে আসা রকেট তখন বাড়ির ছাদে পড়ে বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছে সৌম্যার দেহ। মোবাইলের স্ক্রিন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সেই শেষ দেখা। আর স্ত্রীর মুখ দেখতে পারেননি সন্তোষ।

Advertisment

সৌম্যার মতো বহু ভারতীয় মহিলা-পুরুষের জীবন বিপন্ন এখন ইজরায়েলে। অনেকেই নার্সিং পেশায় ইজরায়েলে থাকেন। প্রবীণদের দেখাশোনা-সহ নানান কাজকর্ম করেন তাঁরা। কিন্তু প্যালেস্তাইন-ইজরায়েলের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে এখন আতঙ্কে কাঁটা তাঁরা। ঝাঁকে ঝাঁকে ধেয়ে আসছে রকেট, এয়ার সাইরেনে কান ঝালাপালা হয়ে যাওয়ার জোগাড়। প্রাণভয়ে বিনিদ্র রজনী এখন কাটাচ্ছেন ভারতীয়রা।

৩৩ বছরের মারিয়া জোসেফ দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস শুক্রবার টেলিফোনে সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, "গত চারদিন ধরে তিনি রাতে চোখের পাতা েক করতে পারেননি। গাজা থেকে ৩৮ কিমি দূরে ইজরায়েলের আশদদ শহরে থাকেন তিনি। বলেছেন, গতকাল রাতে রকেটবৃষ্টি হচ্ছিল আকাশে। আমাদের আবাসন রীতিমতো কাঁপছিল। হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সবাই একে অপরের খোঁজ নিচ্ছিলাম। প্রাণে বাঁচতে চাই আমরা।" কেরালার অনেক নার্স গাজার কাছে এই এলাকায় কাজ করেন।

Advertisment

গত আড়াই বছর ধরে আশদদে এক অশীতিপর মহিলার দেখাশোনার কাজ করেন মারিয়া। তিনি জানিয়েছেন, "এই পুরনো আবাসনে কোনও বোমা থেকে বাঁচার আশ্রয় নেই। নার্স হিসাবে আমি আমার রোগীকে ফেলে রেখে পালাতে পারব না।" ৮ বছর দিল্লিতে কাজ করার ইজরায়েলে চলে যান মারিয়া। এখন তিনি দেশে ফিরতে পারলে বাঁচেন। আরেক গৃহ পরিচারিকা শিন্টো কুরিয়াকোজ জানিয়েছেন, "পরিবারের ভয়ার্ত মানুষগুলো বারবার ফোন করে যাচ্ছে। কিন্তু কী করব বুঝতে পারছি না। আমরা শুধু শান্তি চাই।"

ইজরায়েলে ভারতীয় দূতাবাসের ২০১৯ সাল পর্যন্ত পরিসংখ্যান বলছে, ১৪ হাজার ভারতীয় এই দেশে কর্মরত। তার মধ্যে ১৩,২০০ জন নার্স-গৃহ পরিচারিকার কাজ করেন। ভাল বেতন এবং ভিসা সংক্রান্ত জটিলতা না থাকায় ইজরায়েলে কাজ করতে যান অনেক ভারতীয়। সৌম্যাও ৮০ বছরের এক বৃদ্ধার দেখাশোনা করতেন।

Israel Palestine Gaza Attack