গত কয়েক দশকের মধ্যে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের সম্মুখীন শ্রীলঙ্কা। নাজেহাল অবস্থা মানুষের। ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গিয়েছে। দেশকে চরম এই অবস্থা থেকে বার করে আনতে প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপক্ষের পদত্যাগের দাবিতে সোচ্চার দ্বীপরাষ্ট্রের মানুষ। গত বৃহস্পতিবার রাতে প্রেসিডেন্ট হাউসের সামনেই বিক্ষোভে সামিল হয়েছিলেন কয়েক হাজার মানুষ। যা ঘিরে ধুন্ধুমার অবস্থা হয়। জারি করতে হয়েছিল কার্ফু। তবে শুক্রবার সকালে কার্ফু প্রত্যাহার করা হয়েছিল। কিন্তু, মানুষের ক্ষোভ উত্তোরত্তর বাড়ছে। ফলে বিক্ষোভ যেকোনও সময় আবারও স্ফুলিঙ্গ থেকে দাবানলে পরিণত হতে পারে। আশঙ্কায় প্রশাসন। তাই ঝুঁকি নিতে রাজি নন প্রেসিডেন্ট। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শুক্রবার গভীর রাত থেকেই শ্রীলঙ্কাজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
বিক্ষোভ দমনে সেনা ও পুলিশের ক্ষমতা বৃদ্ধি করেছেন প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষে। জরুরি অবস্থায় কোনও ব্যক্তিকে সন্দেহভাজন মনে হলেই বিনা বিচারে গ্রেফতার করা যাবে ও দীর্ঘ সময়ও আটক রাখতে পারবে নিরাপত্তা বাহিনী।
প্রতিবেশী দেশ আর্থিক মন্দায় জর্জরিত। হাহাকার অবস্থা। এই অবস্থায় শ্রীলঙ্কায় ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের সহযোগী সংস্থা লঙ্কা আইওসি শুক্রবার জানিয়েছে যে, বিদ্যুতের ঘাটতি কমাতে সিলন ইলেকট্রিসিটি বোর্ডকে ৬ হাজার মেট্রিক টন জ্বালানি সরবরাহ করা হয়েছে। এছাড়া শনিবার ভারতীয় ব্যবসায়ীদের তরফে জানানো হয়েছে যে, বিভিন্ন বণিকসংগঠনের পক্ষ থেকেও প্রতিবেশী দেশে ৪০ হাজার টন চাল পাঠানো হচ্ছে।
শ্রীলঙ্কায় বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডার শূণ্য। ফলে বিদ্যুতের জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানী সহ জরুরী পণ্য আমদানি করতে পারছে না সরকার। মূল্য বৃদ্ধি আকাশছোঁয়া। ফলে দেশবাসীর অবস্থা শোচনীয়। খাবার ও জলের জন্য হাহাকার অবস্থা। জ্বালানি সংকটের জেরে শ্রীলঙ্কায় আপাতত দিনের মধ্যে ১৩ ঘন্টার বেশি বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকছে। বন্ধ হয়ে গিয়েছে শেয়ারবাজারের লেনদেনও। হাসপাতালের পরিষেবাও ব্যহত। পাবলিক বিভিন্ন পরীক্ষা থমকে রয়েছে। এই অবস্থায় গোটাবায়া সরকার জানিয়েছে যে, পরিস্থিতির মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল থেকে সহায়তা চাইবে শ্রীলঙ্কা। ভারত ও চিনের থেকেও ঋণ চাওয়া হতে পারে।
Read in English