দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি আরও টালমাটাল হল। পদত্যাগ করলেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে। সোমবার তিনি তাঁর পদত্যাগপত্র তুলে দেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের হাতে। বর্তমানে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপক্ষের ভাই গোটাবায়া রাজাপক্ষে। তিনি বড় ভাই মাহিন্দা রাজাপক্ষের কাছে পদত্যাগপত্র চেয়েছিলেন। প্রেসিডেন্টের সেই আহ্বানে সাড়া দিয়েই পদত্যাগ করলেন মাহিন্দা রাজাপক্ষে। বর্তমানে শ্রীলঙ্কার আর্থিক হাল অত্যন্ত খারাপ। সেই পরিস্থিতি মোকাবিলায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষের সরকার ব্যর্থ হয়েছে। এই অভিযোগে দীর্ঘদিন ধরেই শ্রীলঙ্কায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন বিরোধীরা।
এই পরিস্থিতিতে নতুন সরকার গঠনের দাবি জোরালো হচ্ছিল। সেই দাবিকে স্বীকৃতি দিয়েই অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পথে হাঁটল শ্রীলঙ্কা। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিলেন মাহিন্দা রাজাপক্ষে। ৭৬ বছরের পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদ তিনি। তাঁর ঘনিষ্ঠমহলের দাবি, প্রথমে মাহিন্দা রাজাপক্ষে আশা করেছিলেন যে পরিস্থিতি সামলে নেবেন। সেই জন্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা বিরোধিতা সামলাতে দলের নেতা-কর্মীদের জড় করছিলেন তিনি। কিন্তু, এবারের সমস্যা এতটাই জটিল হয়ে উঠেছে যে খোদ নিজের দলের মধ্যেই মাহিন্দা রাজাপক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ উঠতে শুরু করেছে। তাঁর দল শ্রীলঙ্কা পোদুজানা পেরামুনা (এসএলপিপি)-র নেতা-কর্মীদের একাংশই দলের পদ থেকে মাহিন্দা রাজাপক্ষের অপসারণের দাবি ওঠাতে শুরু করেছেন।
আরও পড়ুন- রাশিয়ার ‘বিজয় দিবস’, ঐতিহ্যে আঘাত হেনেছে পুতিনের আগ্রাসন
এই পরিস্থিতিতে নিজের এবং রাজাপক্ষে পরিবারের সম্মান বাঁচাতে পদত্যাগ করা ছাড়া গতি ছিল না মাহিন্দা রাজাপক্ষের কাছে। কারণ, আর্থিক সংকটের কারণে দ্বীপরাষ্ট্রের সাধারণ মানুষের হাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী পর্যন্ত তুলে দিতে পারছিলেন না শ্রীলঙ্কার বর্তমান সরকার। আন্তর্জাতিক ব্যাংকগুলো দ্বীপরাষ্ট্রকে ঋণ দিতে পর্যন্ত রাজি হচ্ছে না। বন্ধুরাষ্ট্র হিসেবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ভারত। শ্রীলঙ্কার সরকারের হাতে আর্থিক সাহায্য তুলে দিয়েছে। ভারতের অনুরোধে আন্তর্জাতিক ব্যাংকও শ্রীলঙ্কা সরকারকে ঋণ দিতে রাজি হয়েছে। কিন্তু, তারপরও দ্বীপরাষ্ট্রের সমস্যা মেটেনি। তাই বাধ্য হয়ে পদত্যাগই করতে হল শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীকে।
Read story in English