কুড়ি বছর আগের তালিবানের সঙ্গে এখনকার কি কোনও তফাৎ আছে? অনেকেই সেই আশঙ্কা থেকে আফগানিস্তানে ফের অন্ধকার যুগের ভয়ে কাঁটা। কিন্তু তালিবানরা সেই পথে এখনই হাঁটছে না। কাবুল দখলের পর আফগানিস্তান জুড়ে সবাইকে ক্ষমার চোখে দেখছে তারা। শুধু তাই নয়, মহিলাদেরও সরকারে আহ্বান জানিয়েছে ইসলামিক জঙ্গিগোষ্ঠী।
ভীত-সন্ত্রস্ত কাবুল এবং গোটা দেশে ভয়ের বাতাবরণের জেরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার লক্ষ্যেই নরম পন্থা নিয়েছে তালিবানরা। তালিবান সাংস্কৃতিক কমিশনের সদস্য এনামুল্লাহ সামানগানি তালিবান সরকারের তরফে যুক্তরাষ্ট্রীয় স্তরে এই মন্তব্য করেছেন। কাবুলে আর কোনও হিংসা-রক্তপাতের রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। বহু নাগরিক বাড়িতেই রয়েছেন, তবে ভয়ে। আশঙ্কা, টাকা-পয়সা লুঠ বা জেলে নিক্ষেপের।
দুই দশক আগের স্মৃতি যাঁদের টাটকা, তাঁদের আশঙ্কা দেশে ফের অন্ধকার মৌলতান্ত্রিক ইসলামি জমানা ফিরবে। যেখানে অপরাধের সাজা পাথর নিক্ষেপ, প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড, লিঙ্গচ্ছেদ। ২০০১ সালে ৯/১১ হামলার পর মার্কিন বাহিনী তালিবানদের শায়েস্তা করে আসে আফগানিস্তানে। তারপর ধীরে ধীরে তালিবানমুক্ত হন নাগরিকরা। কিন্তু সেই পথে আর হাঁটার কথা বলছে না তালিবানরা। সামানগানি বলেছেন, ইসলামিক আমিরশাহী মহিলাদের আক্রান্ত করতে চায় না। তবে শরিয়ত আইন অনুযায়ী, তাঁরা সরকার গঠনে সাহায্য করতে পারেন।
আরও পড়ুন নাজিবুল্লার মতো মরতে চাননি, তাই হয়তো পালিয়ে বাঁচলেন ঘানি!
সামানগানি আরও বলেছেন, সরকার গঠনের প্রক্রিয়া এখনও স্পষ্ট হয়নি। তবে অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায়, পুরোপুরি ইসলামিক নেতৃত্বাধীন হবে সরকার এবং সবাই এতে যোগ দিতে পারেন। এদিকে, আফগানিস্তান জুড়ে কয়েক হাজার মানুষ যুদ্ধে গুরুতর আহত বলে দাবি করেছে আন্তর্জাতিক রেড ক্রস সোসাইটি। নিরাপত্তা বাহিনী, রাজনীতিবিদরা তাঁদের প্রদেশ বিনা যুদ্ধে তালিবানদের সমর্পণ করেছেন। তাঁদেরও মনে এটা বদ্ধমূল ধারণা হয়েছে, দুই দশকের চেষ্টায় পশ্চিমা অভিজ্ঞতা দিয়ে আফগানিস্তানের পুনর্নির্মাণ তালিবানদের ঠেকাতে পারবে না।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন