সরকারি চাকরি টেকাতে হলে দাড়ি রাখতে হবে। একটা সময় এমনই হাস্যকর নিয়ম চালু হয়েছিল আফগানিস্তানে। তখন তালিবান জঙ্গিরা আফগানিস্তান দখল করেছিল। মধ্যযুগীয় কায়দায় সাধারণ মানুষের ওপর তালিবান জঙ্গিদের প্রকাশ্যে বেত্রাঘাত দেখে শিউড়ে উঠল বিশ্ববাসী। তারপর অনেককাল কেটেছে। কিন্তু, তালিবান বদলায়নি। ফের তারা আফগানিস্তানের শাসন ক্ষমতা দখল করেছে। আবারও আফগানিস্থান ফিরেছে ফতোয়ার দেশে। এবার তালিবান শাসকদের
নতুন ফতোয়া, সরকারি চাকরি করতে গেলে পুরুষদের দাড়ি রাখতেই হবে। পোশাকবিধি না-মানলে, তাঁদের চাকরি চলে যাবে বলেই ফতোয়ায় জানিয়েছে জঙ্গিরা। পোশাকবিধি বলতে, পুরুষদের লম্বা কুর্তা, পাজামা আর পাগড়ি বাধ্যতামূলক ভাবে পরতেই হবে। মেয়েদের পরতে হবে বোরখা। এর আগে ক্ষমতায় আসার পর শিক্ষাক্ষেত্রে মহিলাদের নিষিদ্ধ করেছিল তালিবান। পরে, নিয়মে সামান্য ছাড় দিয়ে শিক্ষাক্ষেত্রেও মহিলাদের সুযোগ দেওয়ার কথা জানিয়েছে। কিন্তু, সেক্ষেত্রে বেশ কিছু নিয়ম মানতে হবে বলেই জানিয়েছেন জঙ্গিরা।
এই পরিস্থিতিতে তালিবান জঙ্গিদের মনোভাবের সামান্য হলেও বদল ঘটেছে বলে বিশ্ববাসীর কাছে একটা বার্তা পৌঁছতে শুরু করেছিল। কিন্তু, সেটা যে ঠিক নয়, সময় এগোতেই তা স্পষ্ট হয়ে গেল। তালিবান জঙ্গিরা যে আগের মতোই লম্বা দাড়ি আর শরিয়তি পোশাকবিধির ব্যাপারে কঠোর, তা স্পষ্ট হয়ে গেল নতুন ঘোষণায়। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মত, জঙ্গিরা বর্তমানে আন্তর্জাতিক দুনিয়ার থেকে স্বীকৃতি চায়। তাদের সরকার আন্তর্জাতিক দুনিয়ার স্বীকৃতি না- পেলে, জঙ্গিদের আর্থিক সমস্যায় ভুগতে হবে।
একথা মাথায় রেখেই সামান্য কিছু ছাড় দিয়েছে তালিবান। কিন্তু, তাদের মূল উদ্দেশ্য ইসলামিক স্টেট জঙ্গিদের মতোই আফগানিস্তানে শরিয়তের কঠোর বিধি কার্যকর করা। বিশ্বে উন্নয়নের মাপকাঠিতে প্রায় সব দিক থেকেই পিছিয়ে থাকা আফগানিস্তানে মধ্যযুগীয় বর্বরতা ফিরিয়ে আনাই এখন তালিবানের লক্ষ্য। পরিস্থিতি কিছুটা হলেও তাদের অনুকূলে এলে ফের তারা স্বমূর্তি ধরবে। এমনটাই আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের একাংশের। এই আশঙ্কা যে নেহাতই অমূলক নয়, সোমবার সেটাই স্পষ্ট হয়ে গেল দাড়ি নিয়ে তালিবান জঙ্গিদের ফতোয়ায়।
Read story in English