একটা সময় ছিল, যখন বেন জনসনের মতো অ্যাথলিটদের সুবাদে কানাডাকে চিনত বিশ্ববাসী। এখন কানাডা বললেই, বিশ্বের সাধারণ মানুষের চোখে ভেসে ওঠেন জাস্টিন ট্রুডো । কানাডার এই প্রধানমন্ত্রী বিশ্বের আর পাঁচটা রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর মতো নন। তাঁর স্পষ্ট কথা, স্বচ্ছ এবং মানবিক দৃষ্টিভঙ্গী বারবার ট্রুডোকে বিশ্ববাসীর কাছে আলাদা করে চিনিয়ে দিয়েছে।
এবার যেমন ট্রুডোর নেতৃত্বাধীন কানাডা সরকারের ঘোষণা এক নতুন ভবিষ্যতের সন্ধান দিতে চলেছে বিশ্বের বিভিন্ন উন্নয়নশীল এবং অনুন্নত দেশগুলোকে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, তাঁর সরকার আরও বহু বিদেশি পরিযায়ী শ্রমিককে সেদেশে কাজ করা এবং থাকার সুযোগ দেবেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যখন পিছিয়ে পড়া দেশগুলোর মানুষদের সেদেশে যাওয়া ঠেকাতে ভিসানীতি কড়া করেছে। সেই সময় ট্রুডোর এই আগলখোলা ঘোষণা নিঃসন্দেহে উন্নয়নশীল এব অনুন্নত দেশের উন্নতিকামী যুবশ্রেণির কাছে এক বড় প্রাপ্তি।
ঠিক কী বলেছেন, কানাডার প্রধানমন্ত্রী? তিনি বলেছেন, আগামী তিন বছরে তাঁর সরকার বিদেশ থেকে আরও ১৩ লক্ষ শ্রমিকের আমদানি করবে। অন্য অনেক দেশ হলে হয়তো বলত, পিছিয়ে পড়া বিভিন্ন রাষ্ট্রকে সাহায্য করার জন্য তাঁরা এই শ্রমিক আমদানি করার কথা ভাবছেন। কিন্তু, ওই যে, ট্রুডো একদম আলাদা। তিনি বলেছেন, অতিমারী পরবর্তী পরিস্থিতিতে কানাডার উন্নয়নের জন্য ওই শ্রমিকদের দরকার। সেই জন্যই তাঁর সরকার বিদেশ থেকে শ্রমিক আমদানির কথা ভাবছেন।
ট্রুডোর এই ঘোষণায় অবশ্যই আশার আলো দেখছেন বহু ভারতীয়। বিশেষ করে যাঁরা বিদেশে চাকরি করার স্বপ্ন দেখেন, তাঁরা তো বটেই। কারণ, কানাডায় কাজ করতে যাওয়া এক বিরাট সুযোগ। সেখানে নাগরিকত্ব পাওয়ারও সুযোগ থাকে।
আর, কানাডার নাগরিকত্ব পেলে, আমেরিকা-সহ প্রথম বিশ্বের দেশগুলোয় প্রবেশে কোনও বাধাই প্রায় থাকে না। প্রথম বিশ্বের দেশগুলোর মুদ্রার মূল্য ভারতের থেকে অনেক বেশি। ফলে, ভারতে ওই সব ব্যক্তিদের পরিবারের আর্থিক উন্নতির বাধাও দূর হয় কানাডায় যেতে পারলে।
আরও পড়ুন- সেনাবাহিনীতে নার্স পদে যোগ দিলেন ৩৫ জন
সেই কারণে, প্রতিবছর বহু ভারতীয় কাজের সন্ধানে কানাডায় পাড়ি দেন। কিন্তু, সেসবে যে তাঁরা মোটেও চিন্তিত না, ট্রুডোর সরকারের এই ঘোষণা যেন সেকথাই প্রমাণ করে দিল। ওই বার্তায় কানাডা সরকার বলেছে, চলতি বছরে তারা বিদেশ থেকে ৪ লক্ষ ৩১ হাজার শ্রমিকের আমদানি করবে। আগামী বছর সংখ্যাটা হবে প্রায় সাড়ে চার লক্ষের কাছাকাছি। আর তিন বছর পর, ২০২৪ সালে সংখ্যাটা হবে সাড়ে চার লক্ষেরও বেশি।
প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোর মানবিক দৃষ্টিভঙ্গী এখন যেন কানাডা সরকারের প্রত্যেক মন্ত্রীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। যার প্রত্যক্ষ প্রমাণ মিলেছে কানাডার অভিবাসনমন্ত্রী সিয়ান ফ্রেসারের কথায়। তিনি বলেছেন, 'আমরা আর্থিক পরিস্থিতি পুনরুদ্ধারের লক্ষ্য গ্রহণ করেছি। অভিভাসন সেই লক্ষ্যপূরণের চাবিকাঠি। আজকের কানাডা যতদূর এসেছে, সবটাই অভিবাসনের দৌলতেই এসেছে।'
Read story in English