দীর্ঘ লড়াইয়ের পথ পেরিয়ে সম্প্রতি আরব দুনিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে বন্ধুত্বের পথে হাঁটা শুরু করেছে ইজরায়েল। কিন্তু, সেই বন্ধুত্ব কতখানি স্থায়ী হবে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্নচিহ্ন উঠে গেল। ইহুদি নাগরিকদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে তৈরি হয়েছে ইজরায়েল। সেই ইহুদি এক মহিলাকে মৃত্যুদণ্ড দিল ইজরায়েল নতুন বন্ধু সংযুক্ত আরব আমিরশাহি। ইজরায়েল বিদেশ দফতর ঘটনার কথা স্বীকার করেছে। ওই মহিলার নাম ফিদা কিয়ান। তিনি হাইফার বাসিন্দা।
৪৩ বছরের ওই মহিলার একটি ফোটোগ্রাফি স্টুডিও আছে। ২১ মার্চ ওই মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তার থেকে হাফ কিলোগ্রাম (এক পাউন্ড) পরিমাণ মাদক কোকেন পাওয়া গিয়েছে। তবে, ওই মহিলা দাবি করেছেন, এই মাদক তাঁর নয়। কেউ বা কারা ওই মাদকের সাহায্যে তাঁকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। কিয়ানের আইনজীবী ইতিমধ্যেই আদালতে ফাঁসির নির্দেশের বিরুদ্ধে আবেদন করেছেন। সেই সাজা কমে বড়জোর কারাবাস হতে পারে।
বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। একথা বুঝে ইজরায়েল সরকার এনিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করেনি। নাফতালি বেনেট ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই আরব দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ভালো করার দিকে ঝুঁকেছে ইহুদি রাষ্ট্রটি। তবে, এজন্য বেনেটের সরকারকে কম কটাক্ষ শুনতে হচ্ছে না। এমনকী বেনেটের নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে দেশকে বেচে দেওয়ার অভিযোগও এনেছেন ইজরায়েলের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।
তার মধ্যেই নতুন বন্ধু সংযুক্ত আরব আমিরশাহির এক ইহুদি মহিলাকে ফাঁসি দেওয়ার সিদ্ধান্ত! ফলে, রীতিমতো চাপে ইজরায়েলের বর্তমান সরকার। ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ২০২০ সালে চারটি আরব দেশের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয় ইজরায়েল। সংযুক্ত আরব আমিরশাহির মাদক আইন অত্যন্ত কড়া। ২০২০ সালের ১৩ আগস্ট সংযুক্ত আরব আমিরশাহির সঙ্গে যৌথ বিবৃতি দিয়ে চুক্তির কথা জানিয়েছিল ইজরায়েল। কিন্তু, এই চুক্তি রাখতে গেলে আবার ইজরায়েলের ইহুদি নাগরিকের রক্ষার শপথ বিঘ্নিত হবে। তাই, শ্যাম রাখি না, কূল রাখি অবস্থা এখন নাফাতালি বেনেটের সরকারের। বিশেষ করে সম্প্রতি ইজরায়েলে একের পর এক জঙ্গিহানা ঘটেছে। যাতে বেশ কয়েকজন মারা গিয়েছেন। হামলাকারী হিসেবে অভিযোগ উঠেছে মুসলিম মৌলবাদীদের দিকে। এই অবস্থায় ইজরায়েল আরব দেশগুলোর বিরুদ্ধে হামলা চালালে, ফের অশান্ত হয়ে উঠতে পারে পশ্চিম এশিয়া।
Read story in English