/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2022/02/russia-ukraine-war.jpg)
রাশিয়া দাবি করেছে যুদ্ধের কারণে তাদের ১,৩৫১ জন সেনা নিহিত হয়েছেন।
টানা ২০ দিন যুদ্ধ চালিয়েও ইউক্রেন দখল করতে পারেনি রাশিয়া। কিয়েভ-সহ একাধিক শহরের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে রুশ বাহিনী। সেই খতিয়ান তুলে ধরেছে ইউক্রেন-ই। আবার তাদের প্রত্যাঘাতে ধরাশায়ী হয়েছে রুশ সেনাও। মঙ্গলবার সেই খতিয়ান তুলে ধরল ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।
এদিন ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক টুইটারে জানিয়েছে, ইতিমধ্যে সাড়ে ১৩ হাজার রুশ সেনা বেঘোরে প্রাণ হারিয়েছে। ধ্বংস হয়েছে ১২৭৯টি সাঁজোয়া গাড়ি, ৪০৪টি ট্যাঙ্ক। এমনকী, জেলেনস্কির কড়া নজর এড়াতে পারেনি রাশিয়ার যুদ্ধবিমানও। ইউক্রেনের দাবি, ইতিমধ্যে রাশিয়ার ৮১টি যুদ্ধবিমান, ৯৫টি কপ্টার নষ্ট করা হয়েছে। একইসঙ্গে নষ্ট হয়েছে রুশ মিসাইল-সহ একাধিক সমরাস্ত্রও। তার পরেও রুশ হানার বিরাম নেই।
যুদ্ধ পরিস্থিতিতে দেশ ছেড়েছেন ৩০ লক্ষ ইউক্রেনীয়। মঙ্গলবার যুদ্ধের ২০তম দিনে আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন’ জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ৩০ লক্ষ ইউক্রেনীয় নাগরিক রুশ হামলা থেকে প্রাণ বাঁচাতে দেশ ছেড়েছেন। এর আগে সোমবার রাষ্ট্রপুঞ্জের শরণার্থী বিষয়ক দফতর (ইউএনএইচসিআর) জানিয়েছিল, তখনও পর্যন্ত ২৭ লক্ষ ইউক্রেনীয় নাগরিক যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বিদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১৭ লক্ষই গিয়েছেন পশ্চিমের প্রতিবেশী দেশ পোল্যান্ডে।
Information on Russian invasion
Losses of the Russian armed forces in Ukraine, March 15 pic.twitter.com/5kq4grgTRJ— MFA of Ukraine 🇺🇦 (@MFA_Ukraine) March 15, 2022
ইউক্রেন সূত্রে খবর, কিয়েভে লাগাতার হামলা চালাচ্ছে। রাতভর মিসাইল হানা চলছে রাজধানীতে যার জেরে একাধিক বহুতল কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। অন্যান্য শহরের রাস্তায় মৃতদেহের সারি। এদিনও দু’ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। আমজনতার প্রাণহানি কমাতে কিয়েভে কারফিউ জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন। মঙ্গলবার রাত ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা পর্যন্ত জারি থাকবে কারফিউ। এর ফলে বিশেষ অনুমতি ছাড়া শহরে কেউ ঘুরে বেড়াতে পারবে না। একমাত্র প্রাণ বাঁচাতে ‘বম্ব শেলটারে’ আশ্রয় নেওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বেরতে পারবেন তাঁরা। সেই সঙ্গে ন্যাটো গোষ্ঠীর কাছে আবারও নো-ফ্লাই জোনের আবেদন জানিয়েছে ইউক্রেন। যদিও এর আগেও একই আবেদন করা হয়েছে ইউক্রেনের তরফে, সেক্ষেত্রে ন্যাটোর যুক্তি তাতে রাশিয়ার সঙ্গে পরমাণু যুদ্ধের সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। তারপরই সেবার ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন জেলেনস্কি।
আরো পড়ুন: রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের মাঝে প্রাণ হারালেন আরও এক সাংবাদিক
রাশিয়া প্রথমে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, সাধারণ নাগরিকদের ওপর কোনও হামলা চালানো হবে না। শুধুমাত্র ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর সঙ্গেই তাদের যত লড়াই। তা-ও যে সব সেনা জওয়ানরা রাশিয়ার কাছে আত্মসমর্পণ করবে, তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে। যদিও তারা শেষ পর্যন্ত কথা রাখেনি বলেই অভিযোগ। ইউক্রেনের বিভিন্ন জনবহুল স্থানে আছড়ে পড়েছে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র। তাতে আহত হয়েছেন বিপুলসংখ্যক সাধারণ নাগরিক।
সম্প্রতি রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ইউক্রেনের একাধিক চিকিত্সাকেন্দ্র গুঁড়িয়ে গিয়েছে। হামলায় মারা গিয়েছেন বেশ কয়েকজন। তাঁদের মধ্যে ডাক্তার, নার্সদের পাশাপাশি রোগীরাও রয়েছেন। তার মধ্যে আবার কয়েকজন প্রসূতি। হামলায় বেশ কয়েকটি শিশুরও মৃত্যু হয়েছে। রাষ্ট্রসংঘ ইতিমধ্যেই রাশিয়াকে মানবাধিকার ভঙ্গের কারণে দোষী সাব্যস্ত করেছে।