Advertisment

১২ হাজার রুশ সেনা নিকেশের দাবি, হত্যালীলার নিন্দায় সরব ইউক্রেনের 'ফার্স্ট লেডি'

রাস্ট্র সংঘ দাবি করেছে ১৪ দিনে প্রায় ২০ লক্ষ মানুষ ইউক্রেন ছেড়েছেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
russia ukrain live updates

রাশিয়া দাবি করেছে যুদ্ধের কারণে তাদের ১,৩৫১ জন সেনা নিহিত হয়েছেন।

রুশ হামলায় ধূলিসাৎ ইউক্রেনের একাধিক শহর। রাতদিন মিসাইল আছড়ে পড়ছে কিয়েভ, খারকভের মতো একাধিক শহরে। বুধবার এরকমই হামলায় গুঁড়িয়ে গেল সেভরডোনেৎস্ক। ইতিমধ্যে সেখানে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে আবার তিনজন শিশুও রয়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লোদিমির জেলেনস্কির দাবি, ইতিমধ্যে ৭১টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। পালটা জবাব দিয়েছে ইউক্রেনও। রুশ হামলার বীভত্সতা থেকে রেহাই পেল না হাসপাতাল। রেহাই পেল না দুধের শিশুরাও। ইউক্রেনের মারিউপোলে রাশিয়ার বিমানহানায় ধ্বংসস্তূপে বদলে গেল আস্ত একটা হাসপাতাল। যেখানে প্রসূতি এবং শিশুরা ভর্তি ছিলেন। আর, সেখানে বহু শিশুর চিকিৎসাও চলছিল। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে ঠিক কতজনের মৃত্যু হয়েছে, বলতে পারছে না ইউক্রেন প্রশাসন। তবে সূত্রের খব্র, এই হামলায় ১৭ জন গুরুতর জখম হয়েছেন। এদিকে এই হামলার তীব্র নিন্দা করেছে রাস্ট্র সংঘ। রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতারেস টুইটারে বলেছেন, “আজকের ইউক্রেনের মারিউপোলের শিশু হাসপাতালের হামলা,ভয়াবহ। সাধারণ মানুষের ওপর এই ধরণের হামলা বর্বরচিত। এই অর্থহীন হিংসা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। এখনই রক্তপাত বন্ধ করুন”।

Advertisment

ইউক্রেনীয় সেনাপ্রধানের দাবি, গত ১৪ দিনে অন্তত ১২,০০০ রুশ সেনার মৃত্যু হয়েছে। এদিন নিজেদের ফেসবুক পেজে রাশিয়ার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির হিসেব তুলে ধরেছে ইউক্রেনের সেনা। ইতিমধ্যে ধ্বংস হয়েছে ৩১৭ রুশ ট্যাঙ্ক, ১০৭০ সাজোঁয়া গাড়ি, ১২০ কামান, ২৮ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, ৪৯টি যুদ্ধবিমান, ৮১ হেলিকপ্টার, ৩টি জাহাজ এবং একাধিক জ্বালানি পরিবহণকারী ট্যাঙ্কও। সবমিলিয়ে ১৪ দিন ধরে যুদ্ধ চালিয়েও এখনও ইউক্রেন দখল করতে পারেনি রাশিয়া। উলটে বিরাট ধাক্কা খেল পুতিনবাহিনী।

publive-image
পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে ইউক্রেন।

এদিন সন্ধেয় পর পর তিনটি জোরালো বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে রাজধানী কিয়েভ। ভেঙেছে একাধিক বহুতল। তবে হতাহতের খবর এখনও মেলেনি। রাষ্ট্রসংঘের দেওয়া হিসেব বলছে, দুই সপ্তাহে ইউক্রেনে প্রাণ হারিয়েছেন ৪৭৪ জন। জখম হয়েছেন ৮৬১ জন। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ইউরোপের এই দেশের। এদিকে রাস্ট্র সংঘ দাবি করেছে ১৪ দিনে প্রায় ২০ লক্ষ মানুষ ইউক্রেন ছেড়েছেন। সেই সংখ্যাটা ৪০ লক্ষের কাছাকাছি পৌছাতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে রাস্ট্র সংঘ। অন্যদিকে ইউক্রেনের ফার্স্ট লেডি অর্থাৎ প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির স্ত্রী ওলেনা জেলেনেস্কা ইউক্রেনে রাশিয়া হত্যালীলার নিন্দা করেছেন। তিনি আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমকে লেখা চিঠিতে এক আবেগবিহ্বল বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, 'হার মানব না, অস্ত্রও ত্যাগ করব না'। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ব্রিটিশ পার্লামেন্টের এক বিবৃতিতে রাশিয়াকে সন্ত্রাসবাদী তকমা দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ নিরপরাধ মানুষের ওপর রাশিয়া হামলা জারী রেখেছে।

রাশিয়ার আক্রমণের পর দুই সপ্তাহের কম সময়ের মধ্যে ইউক্রেন থেকে প্রায় ২০ লক্ষ মানুষ দেশ ছেড়েছেন। এর মধ্যে অর্ধেকই শিশু। ইউক্রেন ছেড়ে এই পলায়ন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে সবচেয়ে বড় শরণার্থী সংকট তৈরি করতে চলেছে। রুশ সেনার দ্বারা অবরুদ্ধ শহরগুলিতে পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ।
ইউক্রেনের মারিউপুল রুশ হামলার পর ভয়াবহ ধ্বংসচিত্র রাস্তায় পড়ে থাকা মৃতদেহ থেকেই পরিষ্কার। সেইসঙ্গে বেশ কয়েকদিন ধরেই অভূক্ত লোকজন এখন দোকানপাটের তালাও ভাঙছেন। তৃষ্ণা মেটাতে বরফ গলিয়ে জল পান করছেন। রাশিয়ার গোলাগুলির শব্দে আতঙ্কিত লোকজন প্রাণ বাঁচাতে ব্যাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছেন। তবে যুদ্ধ নিয়ে কিছুটা সুর নরম হয়েছে রাশিয়ার। তাঁদের দাবি, ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনায় একধাপ এগিয়েছে। খুব শীঘ্রই মিলবে সমাধানের পথ। মস্কোর আরও দাবি, ইউক্রেনের সরকারকে উৎখাত করার কোনও উদ্দেশ্য নেই রাশিয়ার।

Russia-Ukraine Conflict
Advertisment