ডেল্টা-ওমিক্রনের ওপর ভর করে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে নাজেহাল অবস্থা বিশ্ববাসীর। তৃতীয় ঢেউয়ের প্রথম দিকে একের পর এক স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরই টিকার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেন। এপ্রসঙ্গে বিশিষ্ট ভাইরোলজিষ্ট অমিতাভ নন্দী জানান, টিকা নিয়ে আরও বেশি গবেষণার প্রয়োজনীয়তার কথা।
এবার করোনা টিকা নিয়ে একটি স্টাডি উঠে এসেছে ল্যানসেট জার্নালে সেখানে জানানো হয়েছে SARS-CoV-2 সংক্রমণের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন সুরক্ষা দিতে পারে মাত্র কয়েক মাস পর্যন্ত। সেই সঙ্গে এটাও জানানো হয়েছে গুরুতর কোভিড ১৯ রোগের বিস্তারের ক্ষেত্রে টিকার কোন বিকল্প নেই। গবেষকরা জানিয়েছেন কোন টিকা ব্যবহার করা হচ্ছে তার ওপর নির্ভর করছে একজন মানুষ কতদিন পর্যন্ত করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে পারবেন। সুইডেনের উমিয়া ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক পিটার নর্ডস্ট্রম জানিয়েছেন, টিকা নেওয়ার সাত মাস পর তার কার্যকারিতা প্রায় শূন্যে চলে আসে।
তবে তিনি জানান, আশার খবর এই যে, টিকা গুরুতর সংক্রমণ, হাসপাতালে ভর্তি এবং মৃত্যুকে ঠেকাতে বিশেষ ভাবে কাজ করে। গবেষণায় প্রায় ১.৭ লক্ষ মানুষ অংশ নিয়েছিলেন। এবং এর ফলাফল প্রায় ৪ লক্ষ মানুষের ওপর বিশ্লেষণ করা হয়েছে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে সংক্রমণ থেকে সুরক্ষায় ফাইজারের দুটি ডোজ ৬ মাস পর ২৯ শতাংশ সুরক্ষা দেয় এবং সেটাই যদি মডার্নার টিকা হয় তবে তার কার্যকারিতা প্রায় ৫৯ শতাংশ।
অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার ক্ষেত্রে ১ মাসের পর ভাইরাসে বিরুদ্ধে লড়াই করার কোন প্রমাণ মেলেনি। সমীক্ষায় আরও দেখা গেছে গুরুতর সংক্রমণের ক্ষেত্রে এক মাস পর ৮৯ শতাংশ এবং চার মাসের মাথায় ৬৪ শতাংশ সুরক্ষা মেলে। তবে তা সর্বোচ্চ ৯ মাস পর্যন্ত স্থায়ী থাকে। উমিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম গবেষক মার্সেল ব্যালিন বলেন, এই ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে বলা যায় বুস্টার ডোজ করোনা ভাইরাস ঠেকাতে বিশেষ ভাবে প্রয়োজন। বিশেষ করে বয়স্ক এবং দুর্বল ব্যক্তিদের মধ্যে এর প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।