তালিবানি তাণ্ডব অব্যাহত আফগানিস্তানে। এবার টিভি চ্যানেলের সঞ্চালককে গান পয়েন্টে রেখে নিজেদের হয়ে প্রচারমূলক সংবাদ পাঠ করাল তালিবানি জঙ্গিরা। প্রাণ হাতে নিয়েও দৃঢ়কণ্ঠে সঞ্চালককেও দেশবাসীর উদ্দেশে বলতে হল– “তালিবানকে ভয় পাবেন না”। কাবুলের এক নিউজ চ্যানেলের অফিসে ঢুকে জঙ্গিদের এই দাপটের ভিডিও নিমেষে ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। আর এই বীভৎসতার ভিডিও দেখে শিউরে উঠেছে সমগ্র বিশ্ব।
মার্কিন এবং ব্রিটিশ সেনা ইতিমধ্যেই আফগানিস্তান ছেড়েছে, আর তার পরই সমগ্র দেশ জুড়ে রাম রাজত্ব চালাচ্ছে তালিবানরা। তাদের টার্গেট এখন সংবাদমাধ্যম। বেশ কয়েকজন সাংবাদিকের বাড়ি গিয়ে তাদের খুঁজে বের করে হত্যা করতে গিয়েছিল তালিবানরা, বাড়িতে তাদের না পেয়ে অকথ্য অত্যাচার চালায় তাদের নিকট আত্মীয়দের উপরেই। এবার তাদের টার্গেট কাবুলের এক সংবাদমাধ্যমের অফিস। সেখানে ঢুকে একাধিক সাংবাদিক, কর্মীর ওপর চলে নির্মম অত্যাচার। আর তারপরই তালিবান জঙ্গিরা ঢুকে পরে নিউজরুম লাইভে। যেখান থেকে লাইভ সংবাদ পাঠ করছিলেন এক সঞ্চালক। তাঁকে গান পয়েন্টে রেখে নিজেদের হয়ে প্রচারমুলক সংবাদ পাঠ করাল তালিবান জঙ্গিরা। মাসিহ অলিনেজাদ নামের এক ইরানিয়ান সাংবাদিক ভিডিওটি শেয়ার করেছেন টুইটারে। পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, একেই কি বলবে নির্ভয় আর নিরাপত্তার পাঠ? তালিবান আসলে সন্ত্রাসের আরেক নাম। এই ভিডিও তার প্রমাণ। দেখুন সেই শিউরে ওঠার মত ভিডিও-
আফগানিস্তানের ক্ষমতার অলিন্দে বসার পর তালিবান কথা দিয়েছিল, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা অক্ষুণ্ণ থাকবে। কিন্তু অন্যান্য নানা প্রতিশ্রুতির মতো এটাও বাস্তবায়িত করেনি। বরং একের পর এক ঘটে গিয়েছে সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনা। হুমকি, হামলার পর এবার সরাসরি নিউজ চ্যানেলের অফিসে ঢুকে নিজেদের ভয়াবহ রূপ তুলে ধরল জঙ্গি বাহিনী।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, বন্দুক নিয়ে স্টুডিওয় ঢুকে পড়েছে তালিবান। তারপর সঞ্চালকের চেয়ারের পিছনে দাঁড়িয়ে তাঁর মাথায় বন্দুক তাক করে খবর পড়াচ্ছে। তাদের নির্দেশ– দেশবাসীকে বলতে হবে যে, “তালিবানকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই”। এর আগে ভারতীয় সাংবাদিক দানিশ সিদ্দিকীর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের স্মৃতি এখনও টাটকা। কাবুলে তালিবান তাণ্ডবের খবর করতে গিয়ে যিনি সংঘর্ষের মাঝে পড়ে নিহত হন। তাঁকে তালিবান জঙ্গিরাই খুন করে বলে অভিযোগ ওঠে।
এদিকে এই ভিডিও ভাইরাল হতেই শিউরে উঠেছে সারা বিশ্ব। সংবাদমাধ্যমের উপর যেভাবে অত্যাচার চালাচ্ছে তালিবান তার তীব্র নিন্দা করেছেন নেটিজেনরা।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন