ইউক্রেনের অঞ্চল দখল নিয়ে গুপ্তচর প্রধানের সঙ্গে প্রকাশ্যেই মতপার্থক্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের। ইউক্রেনে হামলা নিয়ে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে যে তিনি সহমত নন, রুশ গুপ্তচর বাহিনীর প্রধানের বক্তব্যে তা পরিষ্কার ধরা পড়েছে। অন্তত, প্রকাশ্য বৈঠকে তেমনই ইঙ্গিত মিলল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার ইউরোপীয় সঙ্গীরা বারবার অভিযোগ করে চলেছেন, ইউক্রেনের ওপর হামলা চালাতে চাইছে রাশিয়া।
এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ার নিরাপত্তা প্রধানদের নিয়ে রুশ প্রেসিডেন্টের বৈঠকের ওপর গোটা বিশ্বের নজর ছিল। আর, সেখানেই রুশ গুপ্তচর বাহিনীর প্রধান সের্গেই নারিসকিনকে দেখা গেল বক্তব্য রাখার সময় আমতা আমতা করতে। তার জেরেই প্রেসিডেন্ট পুতিন তাঁকে ভরা সভায় বললেন, 'যা বলার স্পষ্টভাবে বলুন।'
বৈঠকে রুশ গুপ্তচর সংস্থার প্রধান বলেন, 'আজকের বৈঠকের ভিত্তিতে আমাদের একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার।' এর পরই বাধা দেন পুতিন। তিনি গুপ্তচর সংস্থার প্রধানের দিকে পালটা প্রশ্ন ছুড়ে দেন। তিন পালটা প্রশ্ন করেন, 'এই জঘন্যতম ঘটনায় একটা বলার অর্থ কি? আপনি কি আমাদের আলোচনায় বসতে বলছেন?'
জবাবে রুশ গুপ্তচর বাহিনীর প্রধান বলেন, 'না।' পুতিন এরপর পালটা প্রশ্ন ছুড়ে দেন, 'তাহলে কি সার্বভৌমত্বকে স্বীকৃতি দিতে বলছেন? খোলাখুলি বলুন।' তখন রুশ গুপ্তচর বাহিনীর প্রধান বলেন, 'স্বীকৃতির সমর্থনের প্রস্তাবকে আমি সমর্থন করব।'
পুতিন সেই সময় ফের রুশ গুপ্তচর বাহিনীর প্রধানকে প্রশ্ন করেন, 'সমর্থন করছি, না করব? স্পষ্টভাবে বলুন, সের্গেই।' জবাবে রুশ গুপ্তচর বাহিনীর প্রধান বলেন, 'আমি সিদ্ধান্তকে সমর্থন করছি।' একথা বলার পরই সের্গেই নারিসকিন ফের বলেন, 'আমি দোনেত্স্ক এবং লুহানস্ক গণসাধারণতন্ত্রের রুশ যুক্তরাষ্ট্রে অন্তর্ভুক্তি সমর্থন করছি।'
পুতিন তখন ফের বলেন, 'আমরা সেই ব্যাপারে কথা বলছি না। আমরা সেই ব্যাপারে আলোচনা করছি না। আমরা তাদের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেব কি না, সেই ব্যাপারে কথা বলছি।' এরপর রুশ গোয়েন্দা প্রধান বলেন, 'হ্যাঁ, আমি তাদের স্বাধীনতা স্বীকৃতির প্রস্তাবকে সমর্থন করছি।'
আরও পড়ুন- কীভাবে কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলোই আনবে ‘অচ্ছে দিন’, রহস্য ফাঁস করলেন প্রধানমন্ত্রী
তবে, রুশ গুপ্তচর সংস্থার প্রধানের এই আমতা আমতা ভাবকে খোলা মনে গ্রহণ করেননি প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সোভিয়েত জমানায় তিনি রুশ গুপ্তচর সংস্থা কেজিবির কর্তা ছিলেন। রুশ গুপ্তচর সংস্থার প্রধানের এই আমতা আমতা ভাবের অর্থ বুঝতে তাই পুতিনের কোনও অসুবিধা হয়নি। আর, বৈঠক শেষে সেটা তিনি বুঝিয়েও দিয়েছে সের্গেই নারিসকিনকে কেজিবি প্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে।
ইউক্রেনের দুটি অঞ্চলকে স্বাধীন দুটি রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেওয়াই শুধু না। ওই অঞ্চলের নিরাপত্তা রক্ষার নামে সেখানে শান্তিসেনাও মোতায়েন করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। যা কার্যত ইউক্রেনের ওই দুই অঞ্চল ঘুরিয়ে দখল করার শামিল বলেই অভিযোগ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটো জোট।
Read story in English