Advertisment

'ইউক্রেনীয়দের শেষ দুর্গে হামলা নয়', মারিউপোল দখলে কৌশলী পুতিন

পুতিন ও তাঁর প্রতিরক্ষামন্ত্রী শোইগুর মন্তব্য মারিউপোল দখলের ক্ষেত্রে রাশিয়ার কৌশলগত বদলের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Vladimir Putin tells forces not to storm Ukraine holdout in Mariupol

রাশিয়া আরও বড় আকারে হামলা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি।

'মারিউপোলে ইউক্রেনীয়দের শেষ দুর্গে আর আক্রমণ নয়', সেনাবাহিনীকে স্পষ্ট নির্দেশ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের। বৃহস্পতিবার পুতিন তাঁর সেনাবাহিনীকে ইউক্রেনের মারিউপোল শহরের আজভস্টাল স্টিল প্ল্যান্টে আক্রমণ করতে নিষেধ করেছেন। তবে ওই শিল্পতালুকটি পুরোপুরিভাবে ঘিরে রাখারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

Advertisment

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সের্গেই শোইগু জানিয়েছেন, মারিউপোলে আজভস্টাল স্টিল প্ল্যান্টের বাইরে শহরের বাকি অংশে থাকা ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাশিয়া ইউক্রেনের এলাকাগুলিকে তাদের দখলে নিয়েছে। প্রেসিডেন্ট পুতিন এটিকে 'সফলতা' হিসেবেই দেখছেন। রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, আজভস্টাল স্টিল প্ল্যান্ট ছাড়া মারিউপোল শহরের নিয়ন্ত্রণ এখন রাশিয়ার হাতেই রয়েছে। যদিও বিশেষজ্ঞদের মতে, স্টিল প্ল্যান্টটির দখল ছাড়া রাশিয়া মারিউপোল সম্পূর্ণ দখলের ঘোষণা করতে পারে না।

এদিকে পুতিন ও তাঁর প্রতিরক্ষামন্ত্রী শোইগুর মন্তব্যগুলি মারিউপোল দখলের ক্ষেত্রে তাঁদের কৌশল বদলেরও ইঙ্গিত দিচ্ছে। রাশিয়ান বাহিনী এর আগে শহরের প্রতিটি শেষ প্রান্ত দখলে বদ্ধপরিকর ছিল। কিন্তু বাস্তবিক অর্থে পুতিনের এই অবস্থানের এখনও পর্যন্ত সন্তোষজনক ব্যাখ্যা মেলেনি। ইউক্রেনের তরফেও এব্যাপারে এখনও কোনও মন্তব্য করা হয়নি। তবে এর আগে ইউক্রেন সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল, সাধারণ নাগরিকদের নিয়ে চারটি বাস শহর থেকে বেরনোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছিল। তবে বেশ কয়েকবার সেই চেষ্টার পর তারা শহর থেকে বেরোতে পেরেছিল।

publive-image
যুদ্ধ থামার কোনও লক্ষ্মণই নেই।

যদিও এখনও হাজার-হাজার ইউক্রেনীয় নাগরিক মারিউপোলে রয়ে গিয়েছেন। প্রায় দু'মাস ধরে চলা এই যুদ্ধে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গোটা শহর। ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ যুদ্ধের জেরে প্রাণ হারিয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইউক্রেনের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইরিনা ভেরেশচুক জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবারও মারিউপোল থেকে সাধারণ নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার আরও একটি চেষ্টা করা হবে।

এদিকে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়িয়ে রাজধানী কিয়েভে এসেছিলেন স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ এবং ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন। তাঁদের ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে দেখা করারও কথা ছিল। তবে একটি ভিডিও ভাষণে ফের রুশ হামলার ব্যাপারে সতর্ক করে দেন জেলেনস্কি। তিনি বলেন, ''রাশিয়ানরা ফের বড় আকারে হামলা চালাতে পারে।'' ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের প্রতিবাদে সরব পশ্চিমী দেশগুলি। ইউক্রেনের পাশে দাঁড়িয়ে ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী ফ্রেডেরিকসেন এক বিবৃতিতে বলেছেন, "গোটা পশ্চিম ইউক্রেনের জনগণকে সমর্থন করার জন্য একত্রে দাঁড়িয়েছে।"

আরও পড়ুন- পাকিস্তানের হালও শ্রীলঙ্কার মতোই, ‘ঋণে ডুবছে’, সতর্ক করলেন শেহবাজ

এদিকে, ক্রেমলিন জানিয়েছে তারা যুদ্ধ শেষের জন্য একটি খসড়া জমা দিয়েছে। কিন্তু পশ্চিমী দেশগুলি ইউক্রেনকে ভারী অস্ত্র সরবরাহ করার জন্য মুখিয়ে রয়েছে। অন্যদিকে, ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে, ''রাশিয়া সম্ভবত তাদের বার্ষিক ৯ মে-র বিজয় দিবস উজ্জাপনের আগে উল্লেখযোগ্য সাফল্য দেখাতে চায়। সেই কারণেই তারা দ্রুত এবং জোরপূর্বক ওই তারিখের আগে পর্যন্ত অপারেশন চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে পারে।''

মারিউপোলে এখনও আটকে থাকা সাধারণ নাগরিকদের নিয়ে দুশ্চিন্তা বেড়েই চলেছে। এরই পাশাপাশি কিয়েভের পুলিশ প্রশাসন বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, রাজধানীর উত্তর-পশ্চিমে বোরোদিয়াঙ্কা শহরে ৯টি মৃতদেহ-সহ দুটি গণকবরের খোঁজ মিলেছে। কিয়েভ পুলিশের প্রধান আন্দ্রি নেবিতোভ বলেন, "রাশিয়ান সেনার হাতে নিহত সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে দু'জন মহিলা ও একজন কিশোর রয়েছেন। এরা সাধারণ নাগরিক। এরা কোনও প্রতিরোধও গড়ে তোলেননি। কোনও হুমকিও দেননি। রাশিয়ান সেনা ইচ্ছাকৃতভাবেই এদের খুন করেছে।''

Read full story in English

Vladimir Putin Putin Ukraine Crisis Russia-Ukraine Conflict Zelenskyy
Advertisment