যখন ক্রিকেট দুনিয়া শাসন করতেন, জুম্মাবার মানেই যেন ম্যাচে তাঁর জয়ের ঠিকানা আগে থেকেই লেখা হয়ে থাকত। ক্রিকেটের ময়দান ছেড়ে ইমরান খান রাজনীতিতে অনেককাল আগেই এসেছেন। এখন পাকিস্তানের উজির-এ-আজম বা প্রধানমন্ত্রী তিনি। কিন্তু, জুম্মাবারের সৌভাগ্য এখনও তাঁর পিছু ছাড়নি। ২৫ মার্চ, শুক্রবার পাকিস্তানের পার্লামেন্টে তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটির কথা ছিল। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত দেখা গেল অনাস্থার অংশটুকু বাদ দিয়েই মুলতুবি হয়ে গেল অধিবেশন। মধ্যে শনি, রবি ছুটি। ফের সোমবার অধিবেশন বসবে। তখনই অনাস্থার ফয়সালা হওয়ার কথা। তবে, সবটাই আপাতত ঠিক হয়ে আছে।
এই ব্যাপারে পাকিস্তান পার্লামেন্টের স্পিকার আসাদ কাইজার জানিয়েছেন, তেহরিক-ই-ইনসাফের জনপ্রতিনিধি খইয়াল জামান মারা গিয়েছেন। সেই জন্য অধিবেশন মুলতুবি করা হয়েছে। সোমবার বিকেল চারটার পর অধিবেশন বসবে। সতীর্থ জনপ্রতিনিধিদের অনেকেই জামানের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নেবেন। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। সেই কারণেই অধিবেশন মুলতুবি করা হয়েছে বলে স্পিকার জানিয়েছেন। কথায় বলে, যখন কারও সর্বনাশ ঘটে, অনেকের কাছে তা পৌষমাসের আনন্দের মতোও লাগে। জামানের মৃত্যুতে ইমরানের যতটা দুঃখ লাগার কথা, তার চেয়েও এখন তাঁর কাছে আনন্দ আরও তিন দিনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কুর্সি রক্ষার জন্য।
গত ৮ মার্চ পাকিস্তান পার্লামেন্টে ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করেছেন বিরোধীরা। পাকিস্তানের বর্তমান আর্থিক সংকট, মুদ্রাস্ফীতি এবং দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য ইমরানই দায়ী। তাঁর নীতিই দায়ী। এমনই অভিযোগ বিরোধীদের। সেই কারণে ইমরানের অপসারণ চেয়ে তাঁরা পার্লামেন্টের সচিবালয়ের কাছে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করেছেন। সেই অনাস্থা প্রস্তাবে অংশ নিতেই পাকিস্তানের পার্লামেন্ট শুক্রবার বদলে গিয়েছিল চাঁদের হাঁটে। বিরোধী দলনেতা শেহবাজ শরিফ, পিপিপি চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি, পিপিপির যুগ্ম চেয়ারম্যান আসিফ আলি জারদারি পর্যন্ত ইসলামাবাদে পার্লামেন্টে হাজির ছিলেন। তাঁরা অধিবেশন মুলতুবির বিরোধিতাও করেছিলেন। কিন্তু, জনপ্রতিনিধির মৃত্যুর কারণে সেসব গ্রাহ্য করেনি পাকিস্তান পার্লামেন্টের সচিবালয়।
Read story in English