গত বৃহস্পতিবার থেকে এ পর্যন্ত রাশিয়ার ক্রমাগত আক্রমণে প্রায় বিধ্বস্ত ইউক্রেন। বিপর্যস্ত রাজধানী কিয়েভ। সম্প্রতি সামনে এসেছে একটি উপগ্রহ চিত্র। তাতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে রাজধানী কিয়েভকে প্রায় ঘিরে রেখেছে রুশ সেনাবাহিনী। এই অবস্থায় রাশিয়ার বিরুদ্ধে সরব হয়েছে ইউক্রেনে কর্মরত মানবাধিকার সংগঠনগুলি। মানবাধিকার সংস্থার পাশাপাশি মার্কিন রাষ্ট্রদূতের অভিযোগ রাশিয়া ইউক্রেনে ক্লাস্টার বোমা (Claster Bomb) ও ভ্যাকুয়াম বোমা (vacuum bombs) দিয়ে আক্রমণ করেছে।
রাশিয়ার এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি প্রবল সমালোচনা করেছে। এসবের মাঝে রাশিয়ার ভয়ঙ্কর আক্রমণের ভিডিও সামনে এসেছে যা দেখে শিউরে উঠেছে তামাম বিশ্ববাসী। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে তবে কী রাশিয়ার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ কি সত্যি? ক্লাস্টার বোমা ভ্যাকুয়াম বোমা ব্যবহার করছে রাশিয়া? ইউক্রেন দখলের মরিয়া চেষ্টা আর জেলেনস্কির নাছোড় মানসিকতা এই দুইয়ের মাঝে রোজই বলি হচ্ছেন অসংখ্য সাধারণ মানুষ।
ক্লাস্টার বোমা এবং ভ্যাকুয়াম বোমা ব্যবহার নিয়ে মুখ খুলেছে আমেরিকা। হোয়াইট হাউস এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, রাশিয়া কী ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করেছে তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। তবে রাশিয়া যদি ঐ জাতীয় অস্ত্র ব্যবহার করে তাহলে যা যুদ্ধ অপরাধের হিসেবে চিহ্নিত হবে।
ইউক্রেনের ওপর ভয়ঙ্কর ক্লাস্টার বোমা এবং ভ্যাকুয়াম বোমা ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে। এই নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে একাধিক মানবাধিকার সংগঠন। সেই সঙ্গে ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত ওকসানা মার্কারোভা রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ক্লাস্টার বোমা এবং ভ্যাকুয়াম বোমা ব্যবহার করার অভিযোগ তুলেছেন। এই মিডিয়া ব্রিফিংয়েও তিনি এমন অভিযোগ তুলেছেন। এখন যদি সত্যি রাশিয়া ক্লাস্টার বোমা এবং ভ্যাকুয়াম বোমা ইউক্রেনের ওপর নিক্ষেপ করে থাকে তবে তা হবে সম্ভবত যুদ্ধাপরাধ।
রাশিয়া যখন ইউক্রেন সরকারের সঙ্গে আলোচনার কথা বলছে, সেই সময় বুধবার রাতেও খারকিভে লাগাতার হামলা চালিয়েছে রুশ সেনাবাহিনী। রুশ ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়েছে খারকিভের পুলিশ এবং গোয়েন্দা বাহিনীর সদর দফতরের কার্যালয়ে। সেই হামলায় অন্ততপক্ষে চার জন নিহত হয়েছেন বলে স্বীকার করে নিয়েছে ইউক্রেন প্রশাসন।
গত বৃহস্পতিবার থেকেই ইউক্রেনে লাগাতার হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া। অন্যান্য দেশগুলো যাতে এই ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না-করে, সেই নিয়ে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। নাক গলালে হাতেনাতে তার ফল পাবেই বলেই হুমকি দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
বিশাল বিস্ফোরণ! রাতে খারকিভের আকাশ আলোয় ঝলসে উঠল। ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভ রুশ হানায় নাজেহাল অবস্থা। যুদ্ধ-বিধ্বস্ত ইউক্রেনের বিদেশ মন্ত্রকের টুইট করা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে কীভাবে রুশ হানায় একের পর বিল্ডিং তাসের ঘরের মত ভেঙে পড়েছে। বিদেশ মন্ত্রকের এই ভিডিও দেখে শিরদাঁড়া দিয়ে রক্তের ঠান্ডা স্রোত বইতে শুরু করবে। এক সপ্তাহের এই লাগাতার যুদ্ধে কয়েকশো লোক আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
অন্য একটি ভিডিও সামনে এসেছে যেখানে দেখা গিয়েছে প্রাণ বাঁচাতে বাঙ্কারের মধ্যে আশ্রয় নিয়েছেন শ’য়ে শ’য়ে সাধারণ মানুষ। সেই সময় দেখা গেছে রুশ রকেট লঞ্চার একটি বহুতলে আছড়ে পড়েছে। মুহূর্তের মধ্যেই সেটি ধ্বংসাবশেষে পরিণত হয়। দেখুন সেই ভিডিও।