এখনও ইউরোপ প্রতিদিন বিকেলে রাশিয়া থেকে যা তেল আমদানি করে, একমাসে তার চেয়েও কম তেল আমদানি করে ভারত। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ভারতের অবস্থান এবং ভারতের বিদেশনীতির লক্ষ্য সম্পর্কে বলতে গিয়ে এমনই অভিযোগ করলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ভারত-আমেরিকা দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে এক প্রশ্নের উত্তরে জয়শঙ্কর বলেন, 'আপনারা রাশিয়া থেকে তেল কেনার কথা বলছেন। আমি বলব, ইউরোপকে দেখুন। আমরা একমাসে রাশিয়া থেকে যে পরিমাণ তেল কিনি, তার চেয়েও বেশি তেল ইউরোপ রাশিয়া থেকে প্রতিদিন বিকেলে আমদানি করে।'
জয়শঙ্করকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, কেন রাশিয়ার নিন্দা ভারত করছে না? জবাবে জয়শঙ্কর বলেন, 'মার্কিন বিদেশসচিব ব্লিনকেন যা বললেন, আমরা রাষ্ট্রপুঞ্জে বহুবার বিবৃতি দিয়ে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করেছি। আমাদের সংসদেও মমতা জানিয়েছি। পাশাপাশি, অন্যান্য মঞ্চেও তুলে ধরেছি। সংক্ষেপে, বলতে গেলে আমরা যুদ্ধের বিরুদ্ধে। আমরা আলোচনা এবং কূটনৈতিক কার্যকলাপের পক্ষে। আমরা অবিলম্বে হিংসা বন্ধের পক্ষে। আমরা বিভিন্ন ভাবে সেই লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছি।'
আরও পড়ুন- ‘ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক চাইলেও কাশ্মীরের সমাধান ছাড়া তা অসম্ভব’, সাফ কথা শাহবাজের
মার্কিন বিদেশসচিব অ্যান্টনি জে ব্লিনকেন জানিয়েছেন, রাশিয়া থেকে এস-৪০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম কিনলে ভারতের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে কি না, সেই ব্যাপারে তাঁরা এখনও কোনও মনস্থির করেননি। ব্লিনকেন বলেন, 'আমরা ইতিমধ্যে বিভিন্ন দেশের কাছে রাশিয়া থেকে আর অস্ত্র না-কেনার জন্য আবেদন করতে শুরু করেছি। কিন্তু, কয়েক মাস আগেও ভারত এবং রাশিয়ার মধ্যে এক দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক ছিল। এমনকী, অস্ত্র লেনদেনের ব্যাপারেও সম্পর্ক ছিল। যার জন্য আমি সেই সময় বলেছিলাম, রাশিয়ার বন্ধু হতে পারি না। আর এখন, ভারত এবং আমেরিকা উভয়েই পরস্পরের বন্ধু হতে চায়। নিরাপত্তা ক্ষেত্রেও অংশীদার হবে কি না, সেটা ভারতের ব্যাপার।'
মানবাধিকারের ক্ষেত্রে আমরা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষা করি। মানবাধিকার রক্ষা করি। আমরা নিয়ত ভারতীয় অংশীদারদের সঙ্গে মূল্যবোধ বিনিময় করি। সম্প্রতি আমরা লক্ষ্য করছি, ভারতের কিছু রাজ্যে পুলিশ, কারা বিভাগ এবং সরকার মানবাধিকার ভঙ্গ করছে। সফররত ভারতীয় বিদেশমন্ত্রীর সামনে মার্কিন বিদেশসচিবের এই ধরনের মন্তব্য অনভিপ্রেত। তবে বিষয়টি মানবাধিকারের ব্যাপারে গণতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গীর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলেই ব্লিনকেন জানান। উল্লেখ্য, সম্প্রতি একটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনের প্রাক্তন প্রধানকে আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষণ দেওয়ার জন্য যেতে দিচ্ছিল না সিবিআই। পরে অবশ্য আদালতের চাপে এজন্য ক্ষমা চাইতে হয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাটিকে।
Read story in English