রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রায় ২০ দিন পার। এখনও থামেনি যুদ্ধ। ইতিমধ্যেই প্রায ২০ লক্ষ মানুষ ইউক্রেন ছেড়ে প্রতিবেশী দেশগুলিতে আশ্রয় নিয়েছেন। রাশিয়ার লাগাতার গোলাবর্ষণে বিপর্যস্ত ইউক্রেনবাসীর জনজীবন। সকলেই ভীত, সন্ত্রস্ত। সকলের একটাই জিজ্ঞাসা, কবে থামবে যুদ্ধ। বার বার দফায় দফায় হয়েছে আলোচনা কিন্তু মেলেনি সমাধান সূত্র। এবার নতুন করে বিপদের সাবধানবানী দিল বিশ্বস্বাথ্য সংস্থা। যুদ্ধকালীন পরিস্থতিতে বাড়তে পারে করোনা। এমনই আভাস মিলেছে WHO-এর তরফে।
এই আবহে কোভিড পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে, এমনই সতর্কবার্তা দিল হু। হু-র আশঙ্কা, যুদ্ধক্ষেত্র থেকেও ছড়াতে পারে করোনা ভাইরাস। পাশাপাশি বহু মানুষ প্রতিবেশী দেশগুলিতে আশ্রয় নেওয়ায় সেখান থেকেও কোভিড ছড়ানোর আশঙ্কা করছে হু। সংবাদ সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, ইউক্রেনের বাসিন্দাদের টিকাকরণের মাত্রা ৩৪ শতাংশ। যা অন্যান্য দেশের তুলনায় অত্যন্ত কম। দ্বিতীয়ত, গত ৩-৯ মার্চ ইউক্রেন এবং সংলগ্ন দেশগুলিতে করোনা সংক্রমণের হার অত্যধিক বেড়েছে। এই ছ’দিনে ইউক্রেন-সহ পড়শি দেশগুলিতে ৭ লক্ষ ৯১ হাজার ২১ জনের মধ্যে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৮ হাজার ১২ জনের। হু-র মতে, এই সংখ্যা রীতিমতো ভয়প্রদ।
আরো পড়ুন: রাশিয়ার হামলায় শিশুমৃত্যুর পরিসংখ্যান প্রকাশ রাষ্ট্রসংঘের
ইউক্রেনে উত্তরোত্তর বাড়তে চলেছে করোনা সংক্রমণ, জানিয়েছেন হু-র স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জরুরি বিভাগের এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর মাইক রায়ান। তিনি বলেন, ‘‘যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনে কোভিড টিকা দেওয়ার প্রক্রিয়া থমকে গিয়েছে। বন্ধ হয়ে গিয়েছে কোভিড পরীক্ষাও। আর এটাই সবচেয়ে উদ্বেগের একটা কারণ।’’ পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়া ইউক্রেনীয় শরণার্থীরা নিজেদের অজান্তেই ভাইরাস বহন করে আনতে পারেন। তা থেকেও সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না তিনি। সেই সঙ্গে ইউক্রেনকে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার সাবধানবানী, পরীক্ষাগারে ক্ষতিকারক ব্যকটেরিয়া-ভাইরাস অবিলম্বে ধ্বংস করতে হবে তা হলে বিপদ সামনেই।
সংক্রমণ মোকাবিলায় নানা সতর্কতামূলক পদক্ষেপ করছে হু। হাঙ্গেরি, রোমানিয়া, স্লোভাকিয়ার মতো ইউক্রেনের প্রতিবেশী দেশগুলি শরণার্থীদের বিনামূল্যে করোনা পরীক্ষা এবং টিকাকরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে ইতিমধ্যেই। তবে যেভাবে ইউরোপে করোনা সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে, তাতে দু’দেশের এই যুদ্ধ সেই পরিস্থিতি আরও ঘোরালো করবে বলে মনে করছে হু। সেইসঙ্গে ইউক্রেন ছাড়াও প্রতিবেশী দেশগুলিকেও এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। একই সঙ্গে হু-র তরফে রাশিয়ার সেনাবাহিনীকে অনুরোধ করা হয়েছে, তারা যেন ইউক্রেনের স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং হাসপাতালগুলির কোনও ক্ষতি না করে। দু’দেশের এই যুদ্ধের প্রভাব করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে না পড়ে, সে দিকটাও খেয়াল রাখার আর্জি জানানো হয়েছে হু-এর পক্ষ থেকে।