চলতি বছরের নভেম্বরেই আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচন। রিপাবলিকান এবং ডেমোক্র্যাট উভয়েই নির্বাচনী লড়াইয়ের আসন্ন লগ্নে উঠে পড়ে লেগেছে। তবে এবারের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই নির্বাচনে অবশ্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে ট্রাম্প-মোদী বন্ধুত্ব এবং প্রবাসী ভারতীয়রা। এমনটাই মত ওয়াকিবহাল মহলের।
একথা অবশ্য মেনে নিচ্ছেন আমেরিকানরাও। যদিও এই মুহুর্তে কিছুটা সঙ্কটেই পড়েছে প্রবাসী ভারতীয়রা। সাধারণত ভারতীয়দের পাল্লা ভারী থাকে ডেমোক্র্যাট দলের দিকে। তা সে বারাক ওবামার সময় হোক কিংবা হিলারি ক্লিন্টন। কিন্তু এবছরের রাজনৈতিক হিসেব কিছুটা যেন উলটপালট। ট্রাম্পের সঙ্গে মোদীর বন্ধুত্ব, ম্যাডিসন স্কোয়ার থেকে 'হাউডি মোদী'-র অনুষ্ঠান মোদীর ট্রাম্পপ্রীতি অনেক প্রবাসী ভারতীয়ের মনেই ছাপ ফেলেছে। আবার সীমান্ত সমস্যা, চিন বিরোধের মাঝে ভারতের মতোই চিনের বিপক্ষ শিবিরে রয়েছে আমেরিকা।
অন্যদিকে রাজনীতির এই খেলায় কিন্তু পিছিয়ে নেই ডেমোক্র্যাটরাও। ভারতীয়দের মন ধরতে কমল হ্যারিসকেও উপ রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী করেছে তাঁরা। এমনকী কাশ্মীর ইস্যুতেও ভারতের পক্ষ নিয়েছে। বিজেপির এক প্রবাসী সমর্থক দীনেশ আগরওয়ালের কথায়, "আমাদের বন্ধু রয়েছেন হোয়াইট হাউসে। আমরা সেই বন্ধুত্ব চালিয়ে নিয়ে যাব।" উল্লেখ্য বিষয় দীনেশ আগরওয়াল যিনি পেনসেলভেনিয়াতে থাকেন এবং পেশায় প্রফেসর গত ৪৫ বছর ধরে তিনি কিন্তু ডেমোক্র্যাটদেরই ভোট দিয়ে এসেছেন। কিন্তু আসন্ন নির্বাচনে নীল ছেড়ে লাল শিবিরে যোগ দিয়েছেন এই প্রবাসী।
ওভারসীস ফ্রেন্ডস অফ বিজেপি কমিটির প্রতিষ্ঠাতা দীনেশ আগরওয়াল বলেন, "আমার এই সিদ্ধান্তে আমার স্ত্রী এমনকী ছেলেমেয়েরাও খুব মর্মাহত হয়েছেন। এখন অনেক ভারতীয় পরিবারেই এই সমস্যা রয়েছে। যারা দীর্ঘদিন ধরে ডেমোক্র্যাটদের সমর্থন করে আসছেন, অন্তত আমাদের জেনারেশন তাঁরা কিন্তু এখন ট্রাম্পের দিকেই ঝুঁকছেন।"
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মত নরেন্দ্র মোদীর প্রবাসে অনুরাগীদের সংখ্যা দেখার মত। ম্যাডিসন স্কোয়ার, হাউডি মোদী অনুষ্ঠানে তা দেখেছে বিশ্ব। এমনকী রামমন্দিরের ভূমিপূজোতেও নিউ ইয়র্কের টাইমস স্কোয়ারে চলেছিল উদযাপন। সেপ্টেম্বরের ১৫ তারিখ একটি পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে এশিয়ান আমেরিকান প্যাসিফিক আইসল্যান্ডার। সেখানে দেখা গিয়েছে প্রবাসী ভারতীয়দের মধ্যে প্রায় ২৮ শতাংশের বেশি ভোট এবার রিপাবলিকানদের দখলে। ২০১৬ সালে যখন প্রথমবারের জন্য প্রেসিডেন্ট পদে এলেন ট্রাম্প তখন সেই হার ছিল ১৬ শতাংশ।২০১২ সালে যখন বারাক ওবামা প্রেসিডেন্ট হন তখন ইন্দো-আমেরিকানদের ৮৪ শতাংশ ভোট ছিল, ২০১৬ সালে ৭৭ শতাংশ ভোট পড়ে হিলারি ক্লিনটনের ঝুলিতে। কিন্তু সেখানে জো বিডেনের সমর্থনে রয়েছে ৬৬ শতাংশ প্রবাসী ভারতীয় ভোট।
তবে আমেরিকায় বসবাসকারী ভারতীয়দের ভোট নিয়ে মাথাব্যথা রয়েছে দুই শিবিরেরই। ডেমোক্র্যাটদের হঠাৎ কমলা হ্যারিসের নাম ঘোষণা কিংবা ট্রাম্পের দলের নির্বাচনী প্রচারে মোদীর বিজ্ঞাপন। মার্কিন মুলুকের এই নভেম্বরের লড়াইয়ে যে 'মোদী'ই ফ্যাক্টর হতে চলেছেন তা অবশ্য বলাই বাহুল্য!
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন