জার্মানির আদালত বিলেফেল্ড শহরের এক মহিলাকে যৌন নিপীড়নের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করেছে। উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাঁর সঙ্গীর কনডোম নষ্ট করার জন্য তাঁকে ছয় মাসের সাজা দিয়েছে আদালত। রায় দেওয়ার সময় বিচারক জানান, এটা জার্মানির আইনের ইতিহাসে এক বিরল মামলা। আর, এই মামলায় অপরাধী এক মহিলা। স্থানীয় সংবাদপত্রগুলোয় এই মামলা নিয়ে খবর বেরিয়েছে।
কী হয়েছিল মামলায়?
মামলায় অভিযুক্ত ৩৯ বছরের এক মহিলা। যিনি এক ৪২ বছরের পুরুষের সঙ্গে 'সুবিধা প্রাপ্তির অধিকার-সহ বন্ধুত্ব'-র সম্পর্কে ছিলেন। ২০২১ সালের গোড়ায় দু'জনের অনলাইনে দেখা হয়েছিল। সেটাই যৌন সম্পর্কের রূপ নেয়। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ওই মহিলা তাঁর সঙ্গীর প্রতি গভীর অনুরক্ত ছিলেন। তবে জানতেন, তাঁর সঙ্গী আর দীর্ঘদিন সম্পর্কে থাকবেন না। এরপর ওই মহিলা গোপনে তাঁর সঙ্গীর নাইটস্ট্যান্ডে রাখা কনডোমের প্যাকেটে ছিদ্র করেন। ভেবেছিলেন, এভাবে তিনি গর্ভবতী হতে পারবেন। কিন্তু, তাঁর সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। তারপরও তিনি তাঁর পুরুষ সঙ্গীকে হোয়াটসঅ্যাপে লিখেছিলেন যে তিনি গর্ভবতী। একইসঙ্গে জানিয়ে দিয়েছিলেন যে তিনি গর্ভবতী হওয়ার জন্যই ইচ্ছা করে কনডোমে ছিদ্র করেছিলেন। এরপরই তাঁর পুরুষসঙ্গী আদালতের দ্বারস্থ হন। অভিযুক্ত মহিলাও তাঁর দোষ স্বীকার করে নেন।
আরও পড়ুন- কোভিডের আঁচেই এবার ছোবল পেট-খারাপের এক ব্যাক্টেরিয়ার
মামলাটি ‘ঐতিহাসিক’ কেন?
বিচারক এবং আইনজীবীরা প্রথমে বুঝতে পারছিলেন না যে, তাঁরা ওই মহিলার বিরুদ্ধে কোন ধারায় মামলা চালাবেন। বিচারক অ্যাস্ট্রিড সালেউস্কি আদালতে স্বীকার করে নেন, এই মামলা আইনের এক ইতিহাস তৈরি করছে। প্রথমে অপরাধটি ধর্ষণের পর্যায়ভুক্ত কি না, তা আদালত পর্যালোচনা করে। এরপর, বিষয়টি চুরির পর্যায়ে পড়ে বলে ঠিক হয়। একইসঙ্গে যৌন নিপীড়নের অভিযোগও এক্ষেত্রে উপযুক্ত বলে আদালত মনে করেছে। এই প্রসঙ্গে আদালত জানায়, একজন পুরুষ যখন যৌনমিলনের সময় গোপনে তাঁর কনডোম সঙ্গীর অজান্তে খুলে ফেলে, সেটা তাঁর সঙ্গীর বিশ্বাস চুরি করা। তেমনই উলটো দিক থেকে এই মামলায় অভিযুক্ত মহিলাও একই দোষে দোষী। কারণ, ছিদ্র করা প্যাকেটের কনডোমগুলো তাঁর সঙ্গীর অজান্তে বা সম্মতি ছাড়াই ব্যবহার করা হয়েছিল।
Read story in English