দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষে নুরেমবার্গে বসেছিল বিচারের আসর। সব যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সেখানেই হয়েছিল। সেভাবেই ইউক্রেনে হামলাকারী রাশিয়ার যুদ্ধাপরাধীদের সাজা হোক। মঙ্গলবার রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের কাছে এই দাবিই জানালেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি। ইউক্রেন থেকেই ভিডিও মাধ্যমে এই বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন তিনি। জেলেনস্কি অভিযোগ করেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার সেনা ভয়ঙ্কর নৃশংসতা চালিয়েছে। অভিযুক্ত সকলকে অবিলম্বে ধরে আনতে হবে। আর, নুরেমবার্গের বিচারের কায়দায় আন্তর্জাতিক আদালতে রাশিয়ার সব যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে হবে। জেলেনস্কি অভিযোগ করেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার সেনা সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার চালিয়েছে। তারপর পিছন থেকে গুলি করে হত্যা করেছে। গ্রেনেড ব্যবহার করে তাদের ঘরবাড়ি উড়িয়ে দিয়েছে। আর, সাধারণ মানুষ গাড়ির মধ্যে আশ্রয় নিলে, যুদ্ধের ট্যাংক দিয়ে গাড়িশুদ্ধ ওই ব্যক্তিকে পিষে দেওয়া হয়েছে। .
Advertisment
জেলেনস্কির আরও অভিযোগ, 'হামলাকারী রুশ সেনা সাধারণ মানুষের অঙ্গচ্ছেদন করেছে। গলা কেটে দিয়েছে। মহিলাদের সন্তানের সামনেই ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে। হামলাকারীরা মনোমত জবাব না-পাওয়ায় বহু নাগরিকের জিহ্বা কেটে দিয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এতবড় নৃশংসতা আর ঘটেনি।' রাশিয়ার সেনাবাহিনীর সঙ্গে জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের জঙ্গিদের তুলনা টেনে জেলেনস্কি বলেন, 'রাশিয়ার সেনা আর যাঁরা তাঁদের নির্দেশ দিয়েছিল, সবাইকে ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধের জন্য অবিলম্বে ধরে এনে বিচার করা উচিত।' জেলেনস্কির দাবি, শুধু বুচাই না। ইউক্রেনের অন্যান্য জায়গাতেও একইভাবে নির্মম অত্যাচার চালিয়েছে রাশিয়ার সেনাবাহিনী।
কিভের ঠিক বাইরেই পথে সাধারণ মানুষের গুলিবিদ্ধ অথবা নিহত দেহ উদ্ধার ঘিরে গত কয়েক দিন ধরেই উত্তপ্ত ইউক্রেন। শুধু ইউক্রেনই না। বিশ্বের সব প্রান্তের মানুষ ইউক্রেনের এই ঘটনার নিন্দায় সরব হয়েছেন। রাশিয়ার পালটা দাবি, গোটাটাই ষড়যন্ত্র। রাশিয়ার সেনাবাহিনীর ঘাড়ে অযথাই দোষ চাপানো হচ্ছে। রাশিয়ার সেনাবাহিনী কিছুই করেনি। বরং, ইউক্রেনের সাধারণ মানুষকে রাশিয়ার সেনাবাহিনী সাহায্য করেছে। যত অপরাধ ঘটিয়েছে সবটাই করেছে জেলেনস্কির বাহিনী। আর, অপরাধ করে সেই সব দোষ রাশিয়ার সেনাবাহিনীর ঘাড়ে চাপিয়ে দিচ্ছে জেলেনস্কি প্রশাসন।