হয়ত কাকতালীয় নয়, আরাবুলের জামিনের শর্ত হল, ভাঙড়, কাশীপুর ও রাজারহাট এলাকায় ঢুকতে পারবেন না আরাবুল। ঠিক যে যে জায়গায় প্রবেশ নিষেধ অলীক চক্রবর্তীর।
গত ১৪ মে পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন উত্তর গাজীপুর প্রাইমারি স্কুলের বুথে জমি কমিটির নির্বাচনী এজেন্ট হিসাবে বসেছিলেন তিনি। সেখানে গোলমাল পাকানোর অভিযোগে আজিমকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
ভাঙড় কাণ্ডে ৩৫টি মামলাতেই জামিন পেলেন অলীক চক্রবর্তী। বারুইপুর মহকুমা আদালত এদিন তাঁকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দিয়েছে। ভাঙড় ও সংলগ্ন বেশ কয়েকটি এলাকায় ঢুকতে পারবেন না তিনি। অলীকের জামিনে ভাঙড় এলাকায় উৎসবের ঢল দেখা গেছে।
রবিবার পাওয়ার গ্রিড বিরোধীদের মহামিছিল ভাঙড়ে। এদিকে ছুটির দিন হওয়া সত্ত্বেও এদিনই একগুচ্ছ উন্নয়নমূলক কর্মসূচি রাখা হয়েছে জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে। এর মধ্যে রয়েছে হাঁস-মুরগি বিলি, ঋণদান প্রভৃতি।
কলকাতা থেকে বেশি দূর নয় সাঁইতলা। ভাঙড়ের এই গ্রামটিতে আলো আসায় এ বর্ষাকালেই সেখানে এখন অকাল উৎসবের আবহ।
মুহূর্তের মধ্যেই কৃষ্ণমাটি, সাতুলিয়া, জিরেনগাছা, গুছুরিয়া প্রভৃতি গ্রামের মানুষ জানতে পেরে যান ব্রিজের ওপর বস্তা বস্তা টাকা পড়ে আছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই অসংখ্য লোক জমায়েত হয়ে তা কুড়োতে শুরু করেন।
চিঠিপত্র ছাড়াই হঠাৎ বৈঠকে বসতে প্রথমে কিন্তু কিন্তু করছিলেন আন্দোলনকারীরা। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর ডাকের গুরুত্ব ও সম্মানের কথা বিবেচনা করে তাঁরা বৈঠকে বসতে রাজিও হন।
অভিযোগকারীর আইনজীবী কল্যাণ চট্টোপাধ্যায় ও সোমনাথ মিস্ত্রির বক্তব্য, আরাবুল ইসলামকে জামিন পাইয়ে দেওয়ার জন্যই সক্রিয় সরকার পক্ষের আইনজীবী। সরকারি আইনজীবীর বিরুদ্ধে বিচারকের কাছে অভিযোগ জানাতে চলেছেন তাঁরা।
অলীকের শারীরিক অসুস্থতার কথা বিবেচনা করে সি আই ডি ও জেল হেফাজতে থাকাকালীন ২৪ ঘণ্টা অন্তর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে তাঁর শারীরিক পরীক্ষা করাতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
বুধবার হাফিজুলের স্ত্রী সাবিনা খাতুন বারুইপুর মহকুমা আদালতে হলফনামা দিয়ে জানান, তাঁর স্বামীর খুনের ঘটনায় আরাবুল ইসলাম যুক্ত নন। এর পরই আরাবুলের আইনজীবীরা এই হলফনামার উপর ভিত্তি করে আরাবুলের জামিনের আবেদন করেন।
ভাঙড় আন্দোলনের নেতা অলীক চক্রবর্তীকে বেলভিউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর অসুস্থতা ক্যানসার কি না, তা নিয়ে জল্পনা চলছে।
গত ১৭ জানুয়ারি পুলিশের উপরে হামলা, সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুরসহ রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে অলীক চক্রবর্তী এবং গণ আন্দোলনে জড়িত আরও অনেকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
অলীক পরবর্তী ভাঙড়ের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে, তা এখনও অনেকটাই নির্ধারিত হতে চলেছে ভাঙড়ে নিজেদের প্রকাশ্যে না নিয়ে আসা একটি রাজনৈতিক দলের উপরেই।
অলীকের গ্রেফতারির পর কমিটির নেতারা একে অন্যের ফোনও তল্লাশি করেন। আন্দোলনের কোনও নেতাই অলীক সম্পর্কিত তথ্য বাইরে পাচার করেছে কিনা, তা নিয়ে তাঁরা এখনও নিশ্চিত নন।
২০ মে পঞ্চায়েত নির্বাচনে জমি কমিটির ৫ বিজয়ী প্রার্থীদের নিয়ে গ্রামে বিজয় মিছিল করার পর রাতের অন্ধকারে বোরখা মুড়ি দিয়ে হাড়োয়া খাল পেরিয়ে কলকাতা স্টেশন থেকে ট্রেন ধরে ভুবনেশ্বর যান অলীক।
ভাঙড় আন্দোলনের নেতাদের পক্ষ থেকে গ্রেফতারির খবর প্রথমে অস্বীকার করা হলেও, কিছুক্ষণ পরেই অলীকের স্ত্রী শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তীর নামে একটি প্রেস বিবৃতি প্রকাশ করা হয়।
ভাঙড় ২ নম্বর ব্লকের পোলেরহাট ২ গ্রামপঞ্চায়েতের নির্বাচনে জমি, জীবিকা, পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্র কমিটির পাঁচ প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। এঁরা সকলেই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্য়মে।