বছর তিনেক আগে ৮ নভেম্বর, ২০১৬ সালের নোটবাতিলের রেশ এখনও বর্তমান ভারতীয় অর্থনীতিতে। ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট বাতিল হওয়ার পরই ধাক্কা খায় ভারতের বাজার। এরপরই অর্থভাণ্ডারের টাকা মজুতের পরিমাণ এবং নতুন টাকার মুদ্রণের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে মাঠে নেমে পড়ে নোট ছাপাই কর্তৃপক্ষ এবং ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। তবে একইসঙ্গে ২০০৫ সালে তৈরি করা নোটের নিরাপত্তা বিষয়ক বৈশিষ্ট্যকে এবং নোট ছাপানোর ক্ষেত্রে যেন মূল্যবৃদ্ধি না ঘটে সেদিকেও লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।
চলতি বছরের ৩ জুন অর্থমন্ত্রকের মুদ্রাবিভাগ এবং স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যানিং গ্রুপের বৈঠকে বলা হয়, বিমুদ্রাকরণের পরও একই গতিতে বহাল রয়েছে নোটছাপাই এবং অর্থ মজুতের পরিমাণ। সেই বৈঠকেই অর্থ সচিবের সভাপতিত্বে ২০১৯-২০ সালের জন্য ব্যাঙ্কের নোট ছাপাই, মুদ্রার ঘাটতি কাটানোর জন্য দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা এবং পাশাপাশি নোটে নতুন সুরক্ষা বৈশিষ্ট্যগুলি যোগ করার প্রস্তাবও অনুমোদিত করা হয়। তবে বৈঠকে এও বলা হয়, "বাজার থেকে ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট তুলে নেওয়া এবং পরিবর্তে ২০০ টাকা এবং ২০০০ টাকার নোট আনার ফলে অন্য নোটেও নতুন সুরক্ষা বৈশিষ্ট্যগুলির পুনর্বিবেচনার ক্ষেত্রে আরবিআইয়ের তরফে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে অর্থমন্ত্রকে।"
আরও পড়ুন- বাতিল হতে পারে ২০০০ টাকার নোট
এমনকি আরবিআইয়ের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে আধিকারিকেরা এও বলেছিলেন যে বিমুদ্রাকরণের পরিপ্রেক্ষিতে প্রস্তাবিত নতুন সুরক্ষা বৈশিষ্ট্যে বেশ কিছু পরিবর্তনও করা হতে পারে। বৈঠকে বলা হয়েছে, "বিমুদ্রাকরণের পরবর্তী সময়ে নোটের মাপ এবং নকশা পরিবর্তিত হলেও নিরাপত্তা সংক্রান্ত যে সমস্ত বৈশিষ্ট্য ছিল তা একই রয়ে গিয়েছে। তাই সুরক্ষার কথা বিবেচনা করে সব নোটের ক্ষেত্রেই নিরাপত্তার যে মাইক্রোচিপ থাকে তার পরিবর্তন করা হবে।" বৈঠকে এও বলা হয় আরও উন্নততর 'সিকিউরিটি ফিচার' আনা হতে পারে নোটে। তবে সেক্ষেত্রে নোট ছাপাইয়ের খরচও প্রায় ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে, এমনটাই জানিয়েছে ব্যাঙ্ক নোট পেপার মিল ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর।
আরও পড়ুন- নির্মাণ ক্ষেত্রে থমকে থাকা প্রকল্পে ২৫ হাজার কোটির তহবিল ঘোষণা কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, নোট পুনর্বিন্যাসের ফলে বাজারে নোটের চাহিদাও বদলেছে। সেই কারণে চলতি আর্থিক বছরে ১০ টাকা এবং ২০ টাকার নোট কম ছাপার সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক নোট মুদ্রণ সংস্থা। বৈঠকে বলা হয়েছে, ইতিমধ্যেই 'রিভার্স ফ্লো অফ কয়েনস'-এর মুখোমুখি হয়েছে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। তবে ঠিক কী কারণে এমন ঘটল সে ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি আরবিআইয়ের তরফে। শুধু বলা হয়েছে, "কয়েন সংরক্ষণের জন্য প্রাথমিকভাবে ব্যাঙ্কগুলি এবং আরবিআইয়ের যে আর্থিক নীতি নেওয়া হয়েছিল তা সঠিক ভাবে কাজ না করার ফলেই এই ঘটনা।"
Read the full story in English