সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল বিগত বেশ কিছু মাস ধরেই। বেসরকারিকরণের পথে আরও একটু এগোল ভারত সরকারের বিমান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়া। বেসরকারিকরণের প্রস্তাবে আনুস্ঠানিক ভাবে সায় দিয়েছে কেন্দ্র। সংবাদসংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, চলতি মাসেই প্রকাশ করা হবে এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট (সম্মতি) নথি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নেতৃত্বাধীন কমিটি আজই ‘স্পেশাল পার্পাস ভেহিকল’-এ (এসভিপি) এয়ার ইন্ডিয়ার ঋণ ট্রান্সফার করার অনুমোদন দিয়েছে।
অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ, অসামরিক বিমানমন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী ও বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রায়ত্ত উড়ান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়ার একশো শতাংশ বিলগ্নিকরণ করতে চায় কেন্দ্রীয় সরকার। এয়ার ইন্ডিয়ার ঋণ মেটাতে ইতিমধ্যেই এসভিপিতে ২৯,০০০ কোটি টাকা জমা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
আরও পড়ুন, চলতি অর্থবর্ষে জিডিপি বৃদ্ধির হারে বড় পতন
তবে এয়ার ইন্ডিয়ার বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছিল মাস খানেক আগেই। বেসরকারিকরণ ছাড়া এয়ার ইন্ডিয়াকে বাঁচানো সম্ভব নয় বলে আগেই জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। বুধবার রাজ্যসভার প্রশ্নোত্তর পর্ব চলাকালে অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরি এই কথা জানিয়েছেন। ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে অবশ্য তিনি জানান বেসরকারিকরণের পদ্ধতি সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত সমস্ত কর্মীর স্বার্থের কথা মাথায় রেখেই যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
রাজ্যসভায় বিরোধী পক্ষের তরফে অভিযোগ উঠেছিল, সংস্থার প্রচুর বিমানচালক সময় মতো বেতন না পেয়ে চাকরি ছেড়েছেন। সেই অভিযোগ খারিজ করে মন্ত্রী পুরি জানিয়েছেন, “এয়ার ইন্ডিয়ার সমস্ত বিমানচালকের দেখভাল করা হচ্ছে এবং বেতন সংক্রান্ত বিষয়েও অন্যান্য বিমান সংস্থার তুলনায় তাদের অবস্থা তুলনামূলক ভালো”। বিমানচালকদের ইস্তফা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমার কাছে একজন বিমানচালকেরও ইস্তফার খবর নেই”।
আরও পড়ুন, ট্রেনে সফরকালে বাড়িতে চুরি? ক্ষতিপূরণ দেবে রেল
“সংস্থার চরম অর্থ সংকটের সময় এয়ার ইন্ডিয়ার বিভিন্ন স্তরের কর্মীদের ২৫ শতাংশ বেতন আটকে রাখতে বাধ্য হয়েছিল। বেসরকারিকরণ পদ্ধতি সম্পন্ন হওয়ার আগে সেই ২৫ শতাংশ বেতন যাতে সমস্ত কর্মীকে দিয়ে দেওয়া হয়, সেদিকে খেয়াল রাখবে সরকার”, জানালেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরি। তার আগে একজন কর্মীও চাকরি খোয়াবেন না, এমন আশ্বাসও দেওয়া হয়।
সর্ব ভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেনের প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, “বেসরকারিকরণ না করলে আপনাদের এয়ার ইন্ডিয়াকে বন্ধ করে দিতে হবে”।
গত বছরই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, চলতি অর্থবর্ষেই এয়ার ইন্ডিয়া ও ভারত পেট্রলিয়ামের বিলগ্নিকরণ হবে। তিনি বলেছিলেন, “আমরা এ নিয়ে এগোচ্ছি, আশা করছি এই অর্থবর্ষের মধ্যেই কাজ সম্পূর্ণ করতে পারব।” সেই পথে এগিয়েই জানুয়ারির গোড়াতেই পদক্ষেপ করল কেন্দ্রীয় সরকার।
তিনি দাবি করেন, এয়ার ইন্ডিয়া নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বিপুল উৎসাহ দেখেছেন। আন্তর্জাতিক রোড-শোতেও এ নিয়ে উৎসাহ দেখেছেন অনেকে। যদিও ক্রমাগত লোকসানে চলা এই সংস্থা বিক্রি করতে গিয়ে আগে ধাক্কা খেয়েছে সরকার। এখন কোষাগারের অবস্থা শোচনীয়। এই অবস্থায় সরকার চাইছে অর্থের সংস্থান করতে।