বিমুদ্রাকরণ! ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর মোদী সরকারের এই ঘোষণার পর দেশের মানুষের মাথায় হাত। সকলেই ভেবে নিয়েছিলেন দুর্দিন এল বলে। ৫০০ ও ১০০ টাকার নোট প্রত্যাহার করে নতুন ৫০০ ও ২০০০ টাকার নোটের আগমনের আগে বাজারে হাহাকার, ব্যাঙ্কে বিশাল লাইন, চাহিদা নেমে গিয়েছিল একবারে তলানিতে। যার প্রভাব পড়েছিল জিডিপিতেও।
৮ নভেম্বর, ২০২০। নোটবন্দির চার বছরে এসে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রের হিসেব বলছে অন্য কথা। দেখা গিয়েছে প্রায় ৪৫.৭ শতাংশ অর্থাৎ ৮.২২ লক্ষ কোটি বেড়েছে অর্থের মূল্য। ২০১৬ সালে যে সংখ্যা ছিল ১৭.৯৭ লক্ষ কোটি এ বছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬.১৯ লক্ষ কোটি। অর্থনৈতিক মহলের মত এই বৃদ্ধি সর্বকালের সর্বোচ্চ।
তবে ডিমনিটাইজেশনের পরে যে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ধাক্কা আসেনি তা নয়। ২০১৭ সালের চিত্রই যদি দেখা যায় তাহলে নোটবন্দির জেরে ৭.৮ লক্ষ কোটি নেমে গিয়েছিল কারেন্সি। যার জের সামলাতে হিমসিম খেয়েছিল বাজার। কিন্তু এখন কিছুটা হলেও পরিস্থিতিতে বদল এসেছে। মোদী সরকার এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া আসলে নগদ অর্থ বাজারে নয় ব্যাঙ্কে রাখতেই পছন্দ করছে।
আরও পড়ুন, নোটবন্দির জেরে গত চার বছরে স্বচ্ছতা ‘বৃদ্ধি’ হয়েছে, দাবি মোদীর
এক্ষেত্রে কয়েকটি চিন্তাভাবনা রয়েছে। এক, ব্যাঙ্কে গচ্ছিত অর্থ ও লেনদেনের হিসেব থাকবে সরকারিভাবে, দুই কর আরোপ ও আদায় করা সুবিধা, তিন ডিজিলাট ভারত গড়ার প্রথম ধাপ। লেনদেনে নগদ ব্যবহারে সীমাবদ্ধতা আনতে এবং ডিজিটাল পেমেন্টে জোর দিতেই এই পদ্ধতি আনা হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে সমস্যা বৃদ্ধি পেলেও সিস্টেমে কিন্তু নগদ ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
দেখা গিয়েছে কোভিড-১৯ অতিমারী মোকাবিলার জন্য মোদী সরকার কঠোর লকডাউন ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে মার্চ ও মে মাসে অন্য উচ্চতায় উঠে যায় কারেন্সি। বিশ্বব্যাপী দেশগুলি ফেব্রুয়ারিতেই লকডাউন ঘোষণা করেছিল। এরপর ভারতে তা শুরু হতেই মানুষ টাকা সঞ্চয় করতে শুরু করে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর চাহিদা পূরণের উদ্দেশে। আরবিআইয়ের বিবৃতি অনুসারে জনগণ ব্যাঙ্ক থেকে এই লেনদেন প্রভূত হারে করার পর থেকে বাড়তে থাকে ভারতীয় মুদ্রার দর। ভোক্তা ও ব্যবসার মধ্যে যত লেনদেন হবে দেশের মুদ্রার দর তত বাড়তে থাকে। বিমুদ্রাকরণের সময় সকলেই খরচ করার থেকে সঞ্চয়ে আগ্রহী হয়ে পড়েছিলেন আগামী দিনের কথা ভেবে। কিন্তু লকডাউনে তা বদলে গিয়েছে। এমনকী পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ডিজিটাল পেমেন্টও। এটিএম ব্যবহারও বেড়েছে। সব মিলিয়ে নোট বন্দির চার বছর পূর্তিতে দেশের সামগ্রিক আর্থিক চিত্রে বদল এসেছে এমনটাই মত অর্থনৈতিক মহলের একাংশের।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন