সেপ্টেম্বরের ৬ তারিখ ৭২ ছুঁয়েছিল মার্কিন ডলার পিছু টাকার দাম। সোমবার আরও কিছুটা কমে আবার নতুন রেকর্ড তৈরি হল। সোমবারের ফরেন এক্সচেঞ্জ খুলল নতুন ইতিহাস তৈরি করবে বলে। ভারতীয় টাকার দাম আজ নেমে দাঁড়ায় ৭২ টাকা ১৮ পয়সা।
১০ সেপ্টেম্বর সোমবার শেয়ার বাজার খোলার সময় এক মার্কিন ডলারের ভারতীয় মূল্য ছিল ৭২ টাকা ১৫ পয়সা। কিছুক্ষণের মধ্যেই দাম আরও তিন পয়সা কমে যায়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, একই দিনে রেকর্ড বেড়েছে পেট্রোল ডিজেলের দাম।
টাকার দামের ক্রমাগত পতনে চিন্তিত দেশের অর্থনীতিবিদরা। অধিকাংশের বিশ্লেষণ বলছে, একদিনে যেমন মার্কিন ডলারের চাহিদা বাড়ছে, অন্যদিকে অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়ছে আন্তর্জাতিক বাজারে। স্বভাবতই ভারতের তেল পরিশোধনকারী সংস্থাকে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে মার্কিন ডলারের বিনিময়েই কিনতে হচ্ছে তেল। টাকার দাম পড়ে যাওয়ার পেছনে রয়েছে এইসব কারণ।
আরও পড়ুন, স্বাধীন ভারতে প্রথমবার এত পড়ল টাকার দাম!
ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলাররাও বলছেন, মার্কিন ডলারের চাহিদা এমনিতেই বাড়ছে। বিদেশ থেকে মার্কিন ডলারের বিনিময়ে তেল কিনতে হয় বিভিন্ন সংস্থাকে। এছাড়া চিনের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক খারাপ হওয়ার ফলে তারও ছাপ পড়ছে আন্তর্জাতিক বাজারে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, টাকার দাম কমার ফলস্বরূপ ভারতীয় ব্যাঙ্কগুলো বাড়াতে পারে ঋণের ওপর সুদের হার।
এশিয়া মহাদেশের দেশগুলোর মধ্যে ভারতীয় টাকার দামই সবচেয়ে বেশি পড়েছে। পতনের হার ৯.৯০ শতাংশ। চলতি মাসেই টাকার দাম পড়েছে ৩.৩০ শতাংশ।
আরও পড়ুন, বন্ধের দিনেও বাড়ল পেট্রোল-ডিজেলের দাম
অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেছেন, টাকার দাম পড়ার পেছনে সবটাই ‘বাহ্যিক কারণ’। আন্তর্জাতিক সংকটকেও দায়ী করেছেন তিনি। আশ্বাস দিয়েছেন দেশের আভ্যন্তরীণ অর্থনীতি মজবুত রয়েছে। তবে শেয়ার বাজার বিশেষজ্ঞরা প্রমাদ গুনছেন অন্যখানে। তাঁরা বলছেন মার্কিন মুদ্রার পাশাপাশি যদি প্রতিদ্বন্দ্বী অর্থনীতির চাহিদা বাড়ত, সেক্ষেত্রে টাকার দাম আরও পড়লেও চিন্তার তেমন কারণ ছিল না। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। মার্কিন ডলারের চাহিদাই কেবল চড়চড় করে বাড়ছে।
সম্প্রতি কেন্দ্র থেকে ঘোষণা করা হয়েছে, দেশের বৃদ্ধির হার ৮ শতাংশকে ছাপিয়ে গেছে। বিরোধীরা অবশ্য বলছেন একই সাথে হু হু করে কমা টাকার দাম আর পেট্রোল-ডিজেলের আকাশ ছোঁয়া দাম নিয়ে দেশের বৃদ্ধির হার ৮ শতাংশে পোঁছতে পারে কী ভাবে?
অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের আশঙ্কা, এরকম চলতে থাকলে খুব শিগগির দাম বাড়তে পারে খাদ্য পণ্যের।