শিক্ষকের প্রকৃত কাজ একজন ছাত্রকে সঠিক পথে এগিয়ে দেওয়া, তাকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করে মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা। কিন্তু শুধুই কী পুঁথিগত বিদ্যা, না একেবারেই নয়। অন্তত এই বিষয়ে কিছুটা হলেও দ্বিমত বাঁকুড়ার বুদ্ধদেব দত্ত। তাই তো যুগ পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গেই শিক্ষা ব্যবস্থায় বদল এনেছেন তিনি। তথাকথিত পাঠ্যপুস্তক ছেড়ে গতানুগতিক পদ্ধতির বাইরে বেরিয়ে শিক্ষাদান করতেন ছাত্রদের। আর সেই জন্যই এবার জাতীয় স্তরের শিক্ষাসম্মান পাচ্ছেন তিনি।
বাংলার শিক্ষক হিসেবে জাতীয় সম্মান পাচ্ছেন বাঁকুড়ার জয়পুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুদ্ধদেব দত্ত। চিরাচরিত প্রথার বাইরে গিয়ে ভিন্ন আন্দাজে শিক্ষাদান করতেন তিনি। ২০২০ সালে রাজ্য স্তরে 'শিক্ষারত্ন' পুরস্কার পান। এবার জাতীয় স্তরের পালা। কী বলছেন বুদ্ধদেব বাবু? তাঁর বক্তব্য, "আমার গর্বের শেষ নেই। নিজের স্কুল তথা বাঁকুড়া এবং পশ্চিমবঙ্গকে শিক্ষার জাতীয় স্তরে পৌঁছে দিতে পেরেছি এ আমার কাছে ভীষণ গর্বের"। টিচিং নয়, তিনি লার্নিংয়ে বিশ্বাস করেন। সেই কারণেই ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে প্রকৃতিপ্রেম এবং মূল্যবোধ জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করেন সবসময়।
আরও পড়ুন < ছেঁড়া জিন্স নয়, চুড়িদার পরতে হবে! পোশাক বিতর্ক সরোজিনী নাইডু কলেজে >
পড়ানোর সময় পাঠ্যবই নয়। বরং প্রকৃতির কোলে নিজের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়েই পড়াশোনায় বিশ্বাসী বুদ্ধদেব বাবু। তাঁর বক্তব্য, আমার উত্তরের মধ্যে দিয়ে যদি ছাত্ররা আমায় প্রশ্ন করে তবে ওদের ভাবনা চিন্তা আরও উন্নত হবে। নিজেকে আরও মেলে ধরতে পারবে ওরা। বাঁকুড়া জয়পুর বিদ্যালয়ের সহ শিক্ষক তিনি। স্কুলের দেওয়াল হোক কিংবা ক্লাসরুম - তাতে নীতিশিক্ষা কিংবা পাঠ্য বিষয়ের আঁকিবুকি, সবমিলিয়ে এক অভিনব উদ্যোগ চোখে পড়ে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, উনি প্রথাগত ধারণা ভেঙে যেভাবে পড়ান, তাতে আমরা নিজেরাও অনেক কিছু শিখি। শুধু বই নয় বরং অভিজ্ঞতা এবং চিন্তাভাবনাকে সঙ্গে নিয়েও ছাত্র গড়া যায় এটা আমরা ওনার থেকে শিখেছি। আগামী ৫ই সেপ্টেম্বর নয়া দিল্লিতে রাষ্ট্রপতির হাত থেকে পুরস্কার নিতে চলেছেন তিনি। তাঁর এই সাফল্যে দারুণ খুশি ছাত্ররা।