স্কুলে স্কুলে নীল-সাদা ইউনিফর্ম! পুজোর আগেই রাজ্য সরকারের পোশাক নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে। আর এই নিয়েই সরব হয়েছিলেন স্কুলের প্রাক্তনীরাও। ছোট-ছোট পড়ুয়াদের পোশাক পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে স্কুলের নাম-জড়িয়ে থাকা ইতিহাস এবং ছাত্রছাত্রীদের আবেগে আঘাত লাগতে পারে এই মতামতও শোনা গিয়েছিল। কিন্তু স্কুলের শিক্ষকদের মতামত ঠিক কী?
এতদিনের সংস্কৃতি-স্কুলের নাম এবং পরিচিতির সঙ্গে জড়িয়ে থাকে স্কুলের ইউনিফর্ম। স্কুলের পড়ুয়াদের চেনা যায় তাঁদের ইউনিফর্ম দিয়ে। কিন্তু শিক্ষকদের অনেকেই এই নিয়ে সমোলচনা করেছেন। সর্বশিক্ষা অভিযানের নিয়ম অনুযায়ী, অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পোশাক দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পোশাকের মান নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন তাঁরা। এ প্রসঙ্গে, গড়িয়া হরিমতি বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ইন্দ্রানী সেনগুপ্ত বলেন, "পোশাক তো দেওয়া হল, কিন্তু পোশাকের কাপড় খুব একটা ভাল মানের নয়। আমাদের গ্রীষ্ম প্রধান দেশ। কিন্তু সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে পোশাকের কাপড় খুবই সিল্কি ধরনের। নিম্নমানের কাপড়ের জেরে ওদের খুবই গরম লাগছে। একদম সুতির কাপড় হলে বোধহয় এতটা কষ্ট হত না ওদের"।
আরও পড়ুন < ‘বিশ্ববিদ্যালয়’ যেন ‘মুদি দোকান’, পাঁচ বছর আগেই তালা ঝুলেছে ভুয়ো প্রতিষ্ঠানে >
তাঁর সঙ্গেই সহমত পোষণ করেছেন শিক্ষক সংগঠনের সদস্য মনীশ পাণ্ডে। তিনি জানিয়েছেন, "স্কুলের সঙ্গে পোশাকের এক অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক। এইভাবে ওদের কাছ থেকে স্কুলজীবনের সবথেকে মোক্ষম জিনিসটাকে সরিয়ে নেওয়া উচিত হয়নি। পোশাকের কাপড় খুব নিম্নমানের। এতে বাচ্চাদের অসুবিধা হচ্ছে। যদি কোনও স্কুলের সামর্থ্য থাকে তাঁরা হয়তো বা এটা বেশিদিন ব্যবহার করতে চাইবে না। কিন্তু এটুকু বুঝতে পারছি না এতে কাদের কী সুবিধা হল।"
সর্ব শিক্ষা অভিযানের নির্দেশ অনুযায়ী, পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে স্কার্ট-ব্লাউজ। তারপরের শ্রেণি থেকে সালোয়ার-কামিজ। ডিপ নীল রঙের পোশাক, এবং তাঁর সঙ্গে সাদা ওড়না, পোশাকে অবশ্যই থাকছে বিশ্ব বাংলার লোগো। বিশেষ করে ছাত্রীদের পোশাক সামলাতে খুবই অসুবিধা হচ্ছে বলে দাবি শিক্ষকদের।
আরও পড়ুন < ছেঁড়া জিন্স নয়, চুড়িদার পরতে হবে! পোশাক বিতর্ক সরোজিনী নাইডু কলেজে >
রানী ভবানি হাই স্কুলের শিক্ষিকা অমৃতা ঘোষ বলছেন, "মন থেকে আমরা একেবারেই এটা চাই না। স্কুলের পোশাক একটা পরিচয়। এই নিয়ে কোনও অদল বদল না হলেই ভাল। বরং ছাত্রদের আরও পড়াশোনায় জোরালো করে তোলা, তাঁদের পায়ের নীচের মাটি যাতে শক্ত থাকে সেদিকে নজর দিলেই ভাল"।