রুশ ইউক্রেন যুদ্ধে শুধুই যে দেশজুড়ে ধ্বংসাত্মক পরিস্থিতি সেটি কিন্তু একেবারেই নয়। বরং তাঁর প্রভাব পড়েছে দেশের অর্থনৈতিক স্তরেও। বিশেষ করে রাশিয়ার বাজারে বাণিজ্য করতে অনেকেই পিছিয়ে এসেছেন। ইউক্রেনের মতোই রাশিয়াতেও হাজার হাজার ভারতীয় ছাত্র রয়েছেন, তাঁদের বেশিরভাগের বক্তব্য যুদ্ধকালীন সময়েও পুতিন প্রশাসনে তাঁরা একেবারেই নিরাপদে রয়েছেন। রুশ নিবাসী ভারতীয়দের অনেকেই, রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের এই যুদ্ধনীতির বিরুদ্ধে সমালোচনা করেছিলেন। তবে দেশের অভ্যন্তরে কোনও পরিবর্তন আসেনি, দৈনন্দিন কাজগুলি যথারীতি হচ্ছে বলেই জানিয়েছেন তাঁরা।
যদিও বা ইউক্রেনের চিত্র সম্পূর্ণ আলাদা। সেখানে অধ্যয়নরত বেশিরভাগ পড়ুয়ারাই প্রাণের ভয়ে বাড়ি ফিরে এসেছেন। এক ভারতীয় পড়ুয়া যুদ্ধ ক্ষেত্রেই প্রাণ হারিয়েছেন, সেখানকার ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির কথা বারবার ইউক্রেন ফেরত পড়ুয়াদের মুখ থেকেই শোনা যাচ্ছে। রাশিয়ার এক ছাত্র ধর্মরাজ স্বেতা জানিয়েছেন, "এখানকার পরিস্থিতি একেবারেই ভয়ানক নয়। আদৌ রাশিয়ান সরকার আমাদের থেকে কিছু লোকাচ্ছে কিনা সেই সম্পর্কে ধারণা নেই। তবে ইউক্রেনের তুলনায় পরিস্থিতি অনেক ভাল।"
বিদেশ মন্ত্রকের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়ায় প্রায় ১৬,৫০০ জন ভারতীয় ছাত্র রয়েছে। বেশ কিছু ছাত্রের মন্তব্য, রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে তাঁরা যতই শুনছে ততই ভয় পাচ্ছে। ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানেন না, কিন্তু আপাতত তাঁরা নিরাপদে আছে।
আরও পড়ুন ‘দেরি হওয়ার আগেই আত্মসমর্পণ করুন’, ভিডিও বার্তায় রুশ সেনাদের সাবধান করল ইউক্রেনের নারী বাহিনী
টাকা কিংবা নগদ নিয়ে সমস্যা দেখা দিচ্ছে> ভারতীয় ছাত্রদের মন্তব্য, নগদ নিয়ে তাঁরা বেশ সমস্যার কবলে। খুব সীমিত পরিমাণে টাকা আসছে তাঁদের কাছে। এই মুহূর্তে ভারতীয় ব্যাঙ্কের কার্ডগুলি রাশিয়ায় কাজ করছে না। তাঁদের একাংশের বক্তব্য, কিছু ভারতীয় কার্ড কাজ করছে না,এটিএমেও নগদ সীমিত- তাই যতটা সম্ভব খরচ কম করেই নগদ রাখার ব্যবস্থা করছেন ছাত্ররা। আরেক ছাত্রীর বক্তব্য, নগদ অর্থের অভাবে তিনি এবং তাঁর দুই বন্ধু তিনদিন ধরে বেশ সমস্যায় পড়েছিলেন। একসঙ্গে সবার নগদ জমা করেই একদিন তাঁরা ব্যাবহার করেছিলেন। যেহেতু পরিস্থিতি ভাল নয়, তাই হাত সামলেই খরচা করছেন তাঁরা।
তবে যুদ্ধনীতি অনেকেই সমর্থন করছেন না। রাশিয়ার এই আগ্রাসনকে ভাল চোখে দেখছেন না অনেকেই। শুধু ভারতীয়রাই নয়, বরং সেখানকার অধিবাসীরাও রাশিয়া সরকারের এই ঘটনাকে সমর্থন করেন না। তাঁদের কারওর বক্তব্য, "আমরা এখানে এত ভাল আছি, কিন্তু তাঁরা সেখানে যুদ্ধের কারণে সবকিছু হারাচ্ছেন। ওদের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গিয়েছে, আমরা নিজেদের ডিগ্রী অর্জন করছি। নিরাপদে আছি বটে তবে আনন্দে নয়।"