গবেষণার (পিএইচডি) ক্ষেত্রে 'জাতীয় অগ্রাধিকার' বিবেচনা করেই বিষয় নির্বাচন করতে হবে। কেন্দ্রের এমন ফতোয়া মানতে না পেরে কেরেলা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি এবং তুলনামূলক সাহিত্য বোর্ডের সদস্য মীনা টি পিল্লাই পদত্যাগ করেছেন। মার্চের ১৩ তারিখ, মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রেকের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়, পিএইচডি স্কলাররা গবেষণার জন্য যে বিষয় বেছে নেবেন, সেগুলির মধ্যে জাতীয় অগ্রাধিকারের বিষয়কে মূল গুরুত্ব দিতে হবে।
গত বছর ডিসেম্বর মাসে মানব সম্পদ বিভাগের নির্দেশে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ভাইস চ্যান্সেলরদের নিয়ে বৈঠক করা হয়। সেখানেই এ বিষয়ে নির্দেশিকা দেওয়া হয়। বৈঠকে ভাইস চ্যান্সেলরদের নির্দেশ দেওয়া হয় যাতে 'অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ে গবেষণা করার ক্ষেত্রে উৎসাহিত করা না হয়'। ২০১৮ সালের ১৫ ডিসেম্বরের এই বৈঠকে বলা হয়, "গবেষণাপত্রের বিষয় যে জাতীয় অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে হওয়া উচিত তা পিএইচডি-তে ভর্তির সময়ই গবেষকদের জানিয়ে দিতে হবে"।
আরও পড়ুন:সিবিএসই লঞ্চ করল পডকাস্ট অ্যাপ ‘শিক্ষা বাণী’
'জাতীয় অগ্রাধিকারে'র কথা বিবেচনা করে গবেষনার বিষয়ের তালিকা প্রস্তুত করার জন্য কেরালার কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত বিভাগের ডিন এবং প্রধানদের কাছে লিখিত নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নয়া নির্দেশিকা অনুযায়ী, পরবর্তীকালে শুধুমাত্র পূর্বনির্ধারিত তালিকা থেকেই গবেষণায় ইচ্ছুকদের বিষয় বেছে নিতে হবে। বর্তমান নিয়মানুযায়ী, পিএইচডি স্তরে গবেষণামূলক প্রবন্ধে ছাত্ররা ইচ্ছামতো বিষয় বেছে নিতে পারে এবং সেই প্রস্তাব জমা দেওয়ার পর ইন্টারভিউ প্যানেলের সামনে সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে বিষয়টির গুরুত্ব যাচাই করা হয়। প্যানেলে প্রস্তাবটি অনুমোদিত হলে পরবর্তী ধাপে তা নিয়ে গবেষনা করার অনুমতি মেলে অথবা তা পরিবর্তন করা হয়। কিন্তু সাধারণভাবে, ছাত্ররা যে বিষয়ের ওপর গবেষণা করতে চায়, সেই বিষয়েই তাকে উৎসাহ দেওয়া হয়। সদ্য জারি করা নির্দেশিকা অনুযায়ী বদল ঘটবে এই নিয়মে।
আরও পড়ুন: দ্বাদশ শ্রেণীর পর কী বিষয় নিয়ে পড়বেন? তালিকা গড়ল সিবিএসই
বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর জন্য বুধবার ইংরেজি ও তুলনামূলক সাহিত্য বোর্ডের সদস্য-পদ ত্যাগ করেন মিনা টি পিল্লাই। রবিবার সানডে এক্সপ্রেসকে তিনি বলেন "গবেষণায়, কেরালের দূরবর্তী গ্রামের এক ছোট উপজাতি সম্প্রদায় অগ্রাধিকার পেতে পারে। সুতরাং, কোন বিষয় প্রাসঙ্গিক এবং অপ্রাসঙ্গিক সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত কে নেবে? গবেষণায় নির্দিষ্ট শ্রেণিবিভাগ এবং শ্রেণিবিন্যাস আনা উচ্চশিক্ষার নীতি বিরুদ্ধ। গবেষণা হল সমালোচনা, ভিন্নমতের ওপর প্রশ্ন করা এবং কেন অপ্রাসঙ্গিক সে বিষয়ে প্রশ্ন করার অধিকার। অর্থাৎ অজানাকে জানার প্রবণতা। যে মুহূর্তে আপনি গবেষণা শুরু করবেন, সে বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তাতে গবেষকের পূর্ণ স্বাধীনতা থাকে। কিন্তু নয়া নির্দেশিকায় সেই স্বাধীনতা কোথায়?"
চলতি বছরের মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে জারি হওয়া নির্দেশিকার কারণ হিসাবে বলা হয়েছে, সমাজের উপযোগীতার কথা ভেবেই গবেষণায় "জাতীয় অগ্রাধিকারে"র বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে।
Read the full story in English