মাত্র একমাস আগেই ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট -কলকাতার ডিরেক্টরের পদে নিযুক্ত হয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক অঞ্জু শেঠ। ঠিক তার পরেই এক বিদেশি নাগরিক আদৌ ভারতীয় এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ডিরেক্টর পদে নিযুক্ত হওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে স্বদেশমন্ত্রক থেকে। এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ পদ্ধতির বৈধতা নিয়ে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে স্বদেশমন্ত্রক।
স্বদেশমন্ত্রকের চিঠিতে প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদে অঞ্জু শেঠের নিয়োগ প্রসঙ্গের উল্লেখ রয়েছে। অঞ্জু শেঠ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ম্যানেজমেন্ট-এর অধ্যাপনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এর আগে। তিনিই আইআইএম-এর প্রথম মহিলা ডিরেক্টর। ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে তাঁর নিয়োগ হয়। এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে আইআইএম-এ নতুন নিয়ম চালু হয়। ওভারসিজ সিটিজেন অব ইন্ডিয়া (ওসিআই) অর্থাৎ যে সমস্ত ভারতীয় ভিনদেশের নাগরিক, তাঁরাও এই পদের জন্য যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবে।
আর পড়ুন, সিসিডি মালিক ভিজি সিদ্ধার্থের দেহ উদ্ধার
২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসের স্বদেশমন্ত্রকের নির্দেশ অনুযায়ী বিদেশি নাগরিক অথচা ওসিআই কার্ড রয়েছে এমন ভারতীয়রা আইআইটি, এনআইটি, আইআইএম-এর মতো কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হতে পারবেন। কেন্দ্রের এই নির্দেশ উল্লেখ করে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রককে দেওয়া চিঠিতে লেখা হয়েছে ডিরেক্টর পদের শুধুমাত্র অধ্যাপনা ছাড়াও প্রশাসনিক ক্ষমতা রয়েছে।
মঙ্গলবার অঞ্জু শেঠের সঙ্গে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের তরফে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন তাঁকে যেন অফিসিয়াল মেইল মারফত প্রশ্ন করা হয়। মেইলের উত্তরে অঞ্জু শেঠের হয়ে আইআইএম কলকাতার মুখ্য প্রশাসনিক আধিকারিক অলোক চন্দ্র জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানের বর্তমান ডিরেক্টর ওসিআই কার্ড হোল্ডার।
নিয়োগের সময় ডিরেক্টরের নাগরিকত্ব নিয়ে সরকারের তরফে কোনও আপত্তি উঠেছিল কি না, এই প্রশ্নের উত্তরে চন্দ্র বলেছেন, "আমরা সে'রকম কিছু জানিনা"।
তবে অঞ্জু শেঠই আইআইএম এর প্রথম ওসিআই কার্ড হোল্ডার বিদেশি নাগরিক নন। ২০১৪ সালে আইআইএম ব্যাঙ্গালোরের ডিরেক্টর হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন সুশীল ভাচানি। তিনিও মার্কিন নাগরিক ছিলেন। ২০১৬ সালে নিজের মেয়াদ ফুরোনোর আগেই ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে ইস্তফা দেন তিনি।
আরও পড়ুন, রোগীদের কথা মাথায় রেখেই ধর্মঘটে নারাজ রাজ্যের ডাক্তাররা
আইআইএম ব্যাঙ্গালোরের ডিরেক্টর ভাচানি এবং আইআইএম আমেদাবাদের ডিরেক্টর আশিস নন্দ সম্পর্কে ২০১৫ সালে তৎকালীন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, "ওঁরা দুজনেই বিদেশি নাগরিক। কিন্তু আমাদের সরকার এতটাই সহিষ্ণু, বিদেশি নাগরিকও এখানে সরকারকে বলে দিতে পারে, কী ভাবে আইন প্রণয়ন করতে হবে"।
প্রসঙ্গত, আইআইএম ক্যালকাটার ডিরেক্টর পদে তিন জনের মধ্যে দেখে অঞ্জু শেঠের নাম চূড়ান্ত করা হয়। বাকি দুজনের মধ্যে জয়ন্ত আর কালে ছিলেন নর্থইস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিনান্সের অধ্যাপক। সুরেশ রামনাথন ছিলেন টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং এর অধ্যাপক।
অঞ্জু শেঠ আইআইএম ক্যালকাটার ১৯৭৮ সালের প্রাক্তনী। ১৯৮৮ সালে মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি পান তিনি। ভার্জিনিয়া টেক বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিয়েছিলেন ২০০৮ সালে। ২০১৩ সাল পর্যন্ত ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রধান ছিলেন।
Read the full story in English