ছাত্র আন্দোলের জেরে চিরাচরিত প্রথা ভেঙে সমাবর্তন অনুষ্ঠান নন্দনে করার সিদ্ধান্ত নেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ দিন উপস্থিত ছিলেন না কোনও ছাত্রছাত্রীও। শুধুমাত্র ডিলিট ও ডিএসসি প্রদান করে নিয়মরক্ষার অনুষ্ঠান করা হয়। এর কারণ, বিগত ৪০-৪৫ দিন ধরেই ছাত্রদের অবস্থান বিক্ষোভ চলছে। হিন্দু হস্টেলের দাবিতে উত্তপ্ত প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ।
আর এই তুমুল বিতর্কের মাঝেই বুধবার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারি পড়ুয়ারা একটি মিছিল বের করেন হস্টেলের দাবিতে। "উই ওয়ান্ট হিন্দু হোস্টেল" প্ল্যাকার্ড নিয়ে পথে নামেন প্রায় ২০০ জন পড়ুয়া। মিছিলটি কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাস থেকে শুরু করে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউতে যায়। তাঁরা ফের জানিয়েছেন, যতক্ষণ না তাঁদের দাবি মানা হচ্ছে, ততক্ষণ এই আন্দোলন চলবে। মিছিলে যোগ দেন অম্বিকেশ মহাপাত্র এবং মন্দাক্রান্তা সেনও। কিছুদূর যাওয়ার পরই মিছিল আটকে দেয় পুলিশ, এরপর ছাত্রদের তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর দেখা করতে রাজভবনে যায়। কিন্তু দেখা মেলেনি রাজ্যপালের, যদিও তাঁদের সমস্যায় হস্তক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছিলেন রাজ্যপাল।
সেই মতোই বৃহস্পতিবার একটি বৈঠকের আয়োজন করা হয়। আজ রাজভবনে রাজ্যপালের সঙ্গে একটি বৈঠকে যোগ দেন শিক্ষামন্ত্রী সহ প্রেসিডেন্সির উপাচার্য অনুরাধা লোধিয়াও। সূত্রের খবর, প্রেসিডেন্সির হিন্দু হস্টেল এবং যাদবপুরের সাম্প্রতিক ভর্তি সংকট নিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধ রাজ্যপাল কেশরী নাথ ত্রিপাঠি। কিন্তু প্রেসিডেন্সির বিক্ষোভকে "ছাত্র রাজনীতি" বলে কটাক্ষ করছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: হিন্দু হস্টেল না মিললে বৃহত্তর আন্দোলনের দিকে যাবেন প্রেসিডেন্সির ছাত্ররা
গত বুধবার হস্টেলের দাবিতে রাজ্যপালকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। সকাল ১১টা নাগাদ প্রেসিডেন্সির নতুন গড়ে ওঠা সংগ্রহশালা ও ডিজিটাল লাইব্রেরির উদ্বোধন করতে আসেন আচার্য তথা রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক দিয়ে ঢোকার সময়ই তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান আন্দোলনকারিরা। ছাত্রদের দাবি, এখনও এ বিষয়ে কোনওরকম কথাই বলেননি আচার্য।
উল্লেখ্য, অগাস্টের প্রথম সপ্তাহেও হোস্টেল ফেরতের দাবিতে উত্তাল হয়েছিল প্রেসিডেন্সি। তখন থেকেই ছাত্ররা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাত্রিযাপন করছেন। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, হিন্দু হোস্টেল সংস্কারের কাজ চলছে। যতদিন না সমস্ত কাজ শেষ হবে এই আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন পড়ুয়ারা।