লুধিয়ানার আমনপ্রীত কউর পাঞ্জাব স্কুল এডুকেশন বোর্ডের দশম শ্রেণির পরীক্ষায় স্পোর্টস কোটায় তৃতীয় স্থান লাভ করেছে। তার সাফল্যে সকলেই চমৎকৃত। প্রকট অর্থনৈতিক সমস্যার সঙ্গে যুঝে তার এই সাফল্য। তার বাবা জসবীর সিং একটি সামান্য চায়ের দোকান চালান।
বিসিএম সিনিয়র সেকেন্ডারি স্কুল ফোকাল পয়েন্টের ছাত্রী আমনপ্রীত দশম শ্রেণির পরীক্ষায় স্পোর্টস কোটায় ৯৭.৩৮ শতাংশ নম্বর পেয়েছে। প্রবল আর্থিক অনটনের মধ্যে পড়াশুনো চালাতে হয়েছে তাকে। পরিবারের সামান্য আয়ের কারণে গৃহশিক্ষকের কথা ভাবাও তার কাছে ছিল বিলাসিতার শামিল।
চায়ের দোকান থেকে মাসে দশ-বারো হাজার টাকা আয় হয় জসপ্রীতের। মেয়ের জন্য গর্বিত বাবা বলেছেন, ‘‘টাকাপয়সার অভাবের জন্য আমি ক্লাস টেনের বেশি পড়াশুনো করতে পারিনি। চায়ের দোকান চালানো বলার মতো কোনও কাজ নয়। আমি জীবনযুদ্ধে নিজেকে কখনও জয়ী বলে ভাবতে পারিনি। আজ প্রথমবার মনে হচ্ছে আমি জিতেছি। মেয়ের জন্যই এমনটা সম্ভব হল।’’
আরও পড়ুন, এবার গালিবের আন্দাজ-এ-বঁয়াকে কুর্নিস করল তিলোত্তমার রাস্তা
ক্লাস টুয়েলভ পাশ করার পর ডাক্তারি পড়তে চায় আমনপ্রীত। আর সেটাই একটু চিন্তায় ফেলেছে জসবীরকে। মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হতে গেলে যে লাখ লাখ টাকা লাগে সে কথা জানেন এই চা দোকানি। তবু তিনি যে মেয়ের পড়াশোনার ইচ্ছেয় বাধা হবেন না সে কথা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন। জানিয়েছেন, মেয়েকে ক্লাস ইলেভেনে ভর্তি করার জন্য দশ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন তিনি।
স্কুল কর্তৃপক্ষ ও সরকারের কাছে আর্থিক সাহায্যের জন্য আবেদন করার পরিকল্পনা রয়েছে জসপ্রীতের। কোনওভাবেই মেয়ের স্বপ্নভঙ্গ হতে দেবেন না তিনি।
স্কুল ড্রেসে বাবা আর দাদুর সঙ্গে আমনপ্রীত।
স্পোর্টস কোটার প্রাপ্ত নম্বর মিলিয়ে মোট ৬৫০-এর মধ্যে ৬৩৩ নম্বর পেয়েছে আমনপ্রীত।
সে জানিয়েছে, ‘‘ক্লাস সিক্স থেকে আমি বেসবল খেলছি। আমি ডাক্তার হতে চাই, কিন্তু টাকা পয়সার সমস্যা রয়েছে। আমি কখনও ট্যুইশন নিইনি, তবে প্রথম থেকেই বিজ্ঞান আমার প্রিয় সাবজেক্ট। আমি জানি, বাবা কখনওই আমায় পড়াশুনো বন্ধ করে দিতে বলবেন না।’’
আরও পড়ুন, এলেম প্রাচীন দেশে: ছবিতে দেখুন নকুবাবুর দুর্লভ সংগ্রহশালা