২০২০ সালে কিউ এস ইন্ডিয়া র্যাঙ্কিং-এ রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে দেশের সেরা কলকাতা, আর দ্বিতীয় স্থানে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী, ২৭ নম্বরে রয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এবং যাদবপুরের স্থান ৬৮-তে। প্রথম স্থানে রয়েছে আইআইটি বম্বে এবং পঞ্চম স্থানাধিকারী এ রাজ্যেরই খড়গপুর আইআইটি। মঙ্গলবার প্রকাশিত এই তালিকা ঘিরে পশ্চিমবঙ্গ সরকার-রাজ্যপালের সংঘাত আবারও স্পষ্ট হল। রাজ্যের এই দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-পড়ুয়া-কর্মীদের অভিনন্দন বার্তার ভাষাতেই প্রকট হল রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান ও প্রশাসনিক প্রধানের মত পার্থক্য।
কিউ এস ইন্ডিয়া র্যাঙ্কিং সামনে আসার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেশের বাকি বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা না তুলে কলকাতা ও যাদবপুরকে যথাক্রমে প্রথম ও দ্বিতীয় হওয়ায় অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি টুইট করে বলেন, "আমি খুব খুশি। আনন্দ ভাগ করে নিতে চাই। কিউএস২০২০ র্যাঙ্কিং-এ কলকাতা ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় যথাক্রমে প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানাধিকার করেছে। আমার অভিনন্দন রইল এই দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য।
I'm happy to share with you that as per QS INDIA RANKING 2020, University of Calcutta and Jadavpur University have secured first & second positions respectively among all Government Universities in India. My heartiest congratulations and best wishes to all.
জয় হিন্দ । জয় বাংলা।— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) October 22, 2019
অন্যদিকে, রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় টুইট করে জানিয়েছেন, "২৮ হাজারেরও বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে তালিকায়। ২৭ নম্বরে থাকা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও ৬৮ নম্বরে থাকা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পড়ুয়াদের অভিনন্দন। শিক্ষার উন্নতিসাধনে একযোগে কাজ করার ব্যাপারে আমি আশাবাদী।"
India | Ranking Web of Universities: More than 28000 institutions ranked. My congratulations to faculty and students Calcutta University being No 27 and Jadavpur University No 68. I am confident we would in togetherness march on incremental trajectory. https://t.co/fiHEL28LLa
— Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) October 22, 2019
বাবুল সুপ্রিয় 'নিগ্রহকাণ্ডে'র সময় থেকে রাজ্য- রাজ্যপালের সংঘাত প্রকট হয়েছে। দুর্গাপুজো কার্নিভাল এবং একাধিক প্রশাসনিক বৈঠকের মত ইস্যুতে এই সংঘাত নয়া মোড় নেয়। 'কিউএস২০২০ র্যাঙ্কিং ইউনিভর্সিটি অফ ইন্ডিয়া'র তালিকা প্রকাশের পর অভিনন্দন বার্তায় এক রকম পরিসংখ্যান তুলে ধরে রাজ্যপাল যেন এই দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতিত্বকে খানিকটা খাটো করে দেখাতে চেয়েছেন বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।
অন্যদিকে, এই র্যাঙ্কিং-কে রাজ্যের দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের মুকুট হিসাবেই তুলে ধরতে চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেক্ষেত্রে প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানাধিকারকে বিশেষভাবে তুলে ধরতে চেয়েছেন মমতা।
উল্লেখ্য, মূলত গবেষণার ভিত্তিতেই এই সেরার তালিকা তৈরি করা হয়। তাই দেশের বিভিন্ন আইআইটিগুলির নামই রয়েছে প্রথমদিকে। এর মাঝে রয়েছে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় ও হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়। ১১ নম্বরে রয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ১২ নম্বরে রয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। শীর্ষে রয়েছে আইআইটি বম্বে, তারপরেই স্থান পেয়েছে ইন্ডিয়ান ইন্সস্টিটিউট অফ সায়েন্স৷ আইআইটি দিল্লি রয়েছে তৃতীয় স্থানে৷ জানা যাচ্ছে, এই সেরার তালিকা তৈরি করার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সুনাম, শিক্ষক, শিক্ষক ছাত্র সম্পর্ক, গবেষণার বিষয় ও ছাত্র সংখ্যা, আন্তর্জাতিক ফ্যাকাল্টি, আন্তর্জাতিক পড়ুয়ার ওপর নজর দেওয়া হয়েছে। এই ফলাফলের ভিত্তিতেই যাদবপুরকে পিছনে ফেলে এগিয়ে গিয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়।
আরও পড়ুন: মাত্র চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইলেকশনের অনুমতি কেন? প্রশ্ন যাদবপুরের
এই সাফল্য নিয়ে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস বলেন,''একই হয়েছে, গতবছর যা ছিল তাই। একই র্যাঙ্ক এসেছে এবারও। তাই নতুন করে কিছু বলার নেই''। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী ব্যানার্জি বলেন, ''কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেট ইউনিভার্সিটির মধ্যে প্রথম হয়েছে। সারা ভারতে ১১তম স্থানে রয়েছে। আগে যে দুটি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে সেগুলি সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি। খুবই ভালো লাগছে। গর্বিত বোধ করছি। তবে এই সম্মান আমার একার নয়। ছাত্র-ছাত্রী ও সমস্ত শিক্ষক শিক্ষিকাদের পাওনা''।
আরও পড়ুন: আড়াই বছর পর প্রেসিডেন্সিতে ছাত্রভোট
মঙ্গলবার এই র্যাঙ্কিং-এর খবর পেয়ে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার এই র্যাঙ্কিং-এর খবর পেয়ে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।