মহিলা নিট-পরীক্ষার্থীকে জোর করে অন্তর্বাস খোলানোর অভিযোগে ইতিমধ্যেই ৫ মহিলাকে গ্রেফতার করেছে কেরল পুলিশ। পাশাপাশি এই ঘটনার তদন্তে গড়া হয়েছে একটি বিশেষ অনুসন্ধান কমিটি। নিট পরীক্ষার্থীর অন্তর্বাস খোলানোর অভিযোগকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে কেরল সরকার।
গত রবিবার নিট পরীক্ষার সময় কেরলের কোল্লাম জেলার এক পরীক্ষাকেন্দ্রে মহিলা পড়ুয়াদের অন্তর্বাস খোলানো হয় বলে অভিযোগ। এপ্রসঙ্গে ১৭ বছর বয়সী মহিলা নিট পরীক্ষার্থীর বাবা দ্য, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে কথা বলার সময় বলেন, “ পরীক্ষা দেওয়ার সময় এমন মানসিক চাপ মেয়েকে ট্রমার মধ্যে ফেলেছিল। এমন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হবে কখনও ভাবিনি। পরীক্ষার হলে নিজের সম্মান বাঁচাতে মেয়েকে মায়ের একটি শাল ধার নিতে হয়। সেই শাল গায়ে জড়িয়ে মেয়ে পরীক্ষা দেয়”।
এরপরই স্থানীয় থানায় এই মর্মে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয় ছাত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে। যদিও ট্রমার মধ্যে থাকার কারণে পরীক্ষার্থী মিডিয়ার সামনে এবিষয়ে মুখ খুলতে চাননি। অভিভাবকদের দাবি, ওই পরীক্ষার্থীর অন্তর্বাসে ধাতব কিছু পাওয়া গিয়েছিল বলেই দাবি করা হয়। তাই তাঁকে অন্তর্বাস খুলিয়ে পরীক্ষা দিতে বলা হয়েছিল।
একা তিনি নন, একই ঘটনা আরও পরীক্ষার্থীর সঙ্গে ঘটেছে বলেও অভিযোগ। পরীক্ষার্থীর বাবার কথায়, আমি এই ঘটনায় মামলা দায়ের করেছি যাতে ভবিষ্যতে কোন মেয়ের সঙ্গে এমন আচরণ করা না হয়। ছাত্র-ছাত্রীরা অনেক দিন ধরেই নিটের মত পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে থাকে। পরীক্ষা হলে এমন আচরণ তাদের মানসিক চাপের কারণ হয়ে দাঁড়ায়, যার ফলে অনেকের কাছেই এতগুলো বছরের পরিশ্রম নষ্ট হয়ে যেতে পারে”।
ইতিমধ্যে, কেরালা রাজ্য মানবাধিকার কমিশনও ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে এবং কোল্লাম গ্রামীণ এসপিকে ১৫ দিনের মধ্যেই এই ঘটনার বিশদ ব্যাখ্যা পেশের কথাও বলা হয়েছে। এদিকে জঘন্য এই ঘটনা নিয়ে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্রকে লেখা একটি চিঠিতে, কেরালার উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী আর বিন্দু ছাত্রীদের মর্যাদা ও সম্মানের উপর আক্রমণের ঘটনাকে বর্বরোচিত বলেও বর্ণনা করেন চিঠিতে তিনি তাঁর হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সেই সঙ্গে পরীক্ষা পরিচালনার দায়িত্বে থাকা আধিকারিকদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ারও সুপারিশ করেন।
আরও পড়ুন: <‘পদ্মা সেতু দেখে যান’, ‘ছোট বোন’ মমতাকে আমন্ত্রণ জানালেন শেখ হাসিনা>
এদিকে কেরলের নিট পরীক্ষায় এমন ভয়ঙ্কর অভিযোগকে গুরুত্ব দিয়েই দেখছে কেন্দ্র। যদিও কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী এই ঘটনা নিয়ে এখনও কোন প্রতিক্রিয়া জানাননি। যদিও পরীক্ষা পরিচালনার দায়িত্ব থাকা ন্যাশনাল টেস্টিং অথরিটি, মহিলা নিট-পরীক্ষার্থীকে জোর করে অন্তর্বাস খোলানোর বিষয়টি অস্বীকার করেছে।
এবিষয়ে এক আধিকারিক বলেন,“ আমাদের কাছে এমন কোন অভিযোগ আসেনি। তবুও সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কেন্দ্রের সুপারিন্টেনডেন্ট ও পর্যবেক্ষকের কাছে তাৎক্ষণিক একটি রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে। তারা জানিয়েছে যে এই ধরনের কোনও ঘটনা ঘটেনি এবং অভিযোগটি কাল্পনিক এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত” । তবে, কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের এক ঊর্ধ্বতন আধিকারিক জানিয়েছেন যে NTA ঘটনাটি তদন্ত করতে কেরালায় একটি বিশেষ দল পাঠাচ্ছে।