গোয়েন্দা গল্পের ভক্ত এবারের মাধ্যমিকের যুগ্ম প্রথম রৌনক মণ্ডল। পূর্ব বর্ধমানের এই কৃতী ছাত্র এবারের মাধ্যমিকে ৬৯৩ পেয়ে সেরার সেরা। বড় হয়ে চিকিৎসক হতে চায় রৌনক। তাঁর এই কৃতিত্বে বাবা-মায়ের পাশাপাশি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অবদানও অপরিসীম, জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় সেরার সেরা হয়ে এমনই জানাল রৌনক।
পূর্ব বর্ধমানের সিএমএস হাইস্কুলের ছাত্র রৌনক মণ্ডল। এবারের মাধ্যমিকে বাঁকুড়ার অর্ণব ঘড়াইয়ের সঙ্গেই যুগ্মভাবে প্রথম হয়েছে রৌনক। নজরকাড়া এই সাফল্য পেয়ে স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত কৃতী এই পড়ুয়া। রবীন্দ্রনাথের গানের ভক্ত রৌনক মণ্ডল বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করতে চায়। চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখে রৌনক।
এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রৌনকের প্রতিক্রিয়া, ''এতটা আশা করিনি। তবে প্রথম থেকে দশের মধ্যে থাকব বলে আশা করেছিলাম। জীবন বিজ্ঞান ও অঙ্ক করতে ভালোবাসি। গল্পের বই পড়তেও ভালোবাসি। সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদার আমি ভক্ত। এছাড়াও গোয়েন্দা গল্প ভালো লাগে। ডাক্তার হতে চাই।''
বাবা-মা ছাড়াও তাঁর এই সাফল্যে অবদান রয়েছে স্কুলের শিক্ষক ও ও তাঁর গৃহশিক্ষকদের। গান শিখত রৌনক। তবে মাধ্যমিকের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য গত দু'বছর গান শেখা বন্ধ রেখেছিল সে। রৌনকের পরিবার পূর্ব বর্ধমানের রায়নার কুকুরা গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর বাবা কুন্তল মণ্ডল খণ্ডঘোষের শিকারপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। মা সুদীপ্তা মণ্ডল সাধারণ গৃহবধূ।
ছোট থেকেই লেখাপড়ার প্রতি প্রবল আগ্রহ রৌনকের। একটা সময় গ্রামের বাড়ি ছেড়ে একমাত্র সন্তান রৌনককে নিয়ে তার বাবা-মা শহর বর্ধমানে চলে আসেন। ছেলেকে তাঁরা ভর্তি করেন বর্ধমানের সিএমএস স্কুলে। বর্ধমান শহরের গোলাহাট এলাকায় বাাড়ি ভাড়া নিয়ে তাঁরা থাকতে শুরু করেন। স্কুলের প্রতি ক্লাসে ভালো ফল করত রৌনক। একের এক ধাপ পেরিয়ে এবার জীবনের প্রথম সবচেয়ে বড় পরীক্ষায় সেরার সেরা রৌনক। বাংলায় মাধ্যমিকে প্রথম স্থানে রৌনক।
শুক্রবার সকাল থেকেই টেলিভিশনের পর্দায় নজর রখেছিলেন রৌনক ও তার বাবা-মা। পর্ষদ সভাপতি মাধ্যমিকে যুগ্ম প্রথম হিসেবে রৌনক ও বাঁকুড়ার রামকৃষ্ণ মিশন হাইস্কুলের অর্ণব ঘড়াইয়ের নাম ঘোষণ করেন। প্রবল উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে মণ্ডল পরিবার। শুভেচ্ছার ঢল নামতে শুরু করে বাড়িতে। আত্মীয়স্বজন থেকে শুরু করে প্রতিবেশীরা রৌনককে বাড়িতে এসে শুভেচ্ছা জানিয়ে গিয়েছেন। এদিকে, ছেলের নজরকাড়া এই সাফল্যে স্বভাবতই গর্বিত রৌনকের বাবা-মা। আগামী দিনেও ছেলের পড়াশোনায় যথাসাধ্যভাবে তাঁরা পাশে থাকবেন বলে জানিয়েছেন।
রৌনক ছাড়াও পূর্ব বর্ধমানের আরও কয়েক জন ছাত্রছাত্রী মাধ্যমিকে প্রথম দশের মধ্যে রয়েছেন। পূর্ব বর্ধমানের
বিদ্যার্থী ভবন গার্লস হাই স্কুলের ছাত্রী সামিনা ইয়াসমিন মাধ্যমিকে পঞ্চম স্থান অধিকার করেছে। এছাড়াও মিউনিসিপাল গার্লস স্কুলের শ্রীজিতা গোস্বামী মাধ্যমিকে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে। নবম স্থানেও বর্ধমানের আরও দুই পড়ুয়া রয়েছে । মাধ্যমিকে নবম মিউনিসিপাল হাই স্কুলের অঙ্কুর ঘোষ ও টাউন স্কুলের শৌণক দে। মাধ্যমিকে দশম স্থানাধিকারী শৌনক বন্দ্যোপাধ্যায়ও রৌনকের মতোই বর্ধমান সিএমএস হাই স্কুলেরই ছাত্র।