ছেলে জয়েন্ট এন্ট্রান্সে প্রথম। এ খবরে কোন বাবা-ই না খুশি হয়ে থাকতে পারেন! মিডিয়ার টানাটানি, পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়দের ফোনে, দূরদূরান্ত থেকে উড়ে আসা প্রশংসায় বাবা হিসাবে গর্বে আত্মহারা হওয়াই তো স্বাভাবিক। কিন্তু ২০১৯ সালের জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় প্রথম স্থানাধিকারী সোহম মিস্ত্রীর বাবার গলায় অন্য সুর।
জয়েন্টের ফলাফল প্রকাশ হওয়ার পর সোহমের বাবা পঙ্কজ মিস্ত্রিকে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার তরফ থেকে যোগাযোগ করে অভিনন্দন জানানো হলে তিনি বলেন, "এ ফলে খুশি নই"। কিন্তু কেন? ফোনের ওপার থেকে পঙ্কজবাবু বললেন, "প্রত্যেক বছরই কেউ না কেউ ফাস্ট সেকেন্ড থার্ড হয়, যুগ যুগ ধরেই এমনটা ঘটে আসছে। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই তাদের মানুষ ভুলেও যায়। আমি চাই এরপর সোহম সমাজের জন্য কিছু করুক। তবেই আমি একজন বাবা হিসাবে গর্ববোধ করব"।
আরও পড়ুন: WBJEE 2019 Result Live: জয়েন্ট এন্ট্রান্সে প্রথম সোহম
সোহমের বাবা আরও বললেন, 'ছোট থেকেই ছেলেকে আমি এরকম ভাবেই বড় করেছি। ওকে বুঝিয়েছি সমাজের জন্য কিছু করো। আজ সোহম যখন তার ফলাফলের কথা জানায়, আমি ওর পিঠ চাপড়েছি, কিন্তু পাশাপাশি মানুষের জন্য কিছু করার কথা আজকের দিনে আরও একবার ওকে মনে করিয়ে দিয়েছি"।
জয়েন্টে প্রথম স্থানাধিকারী কিন্তু ছোট থেকেই মেধাবী এমন নয়, জানালেন পঙ্কজ। একই সঙ্গে জানালেন. বইতে মুখ গুঁজে দিন কাটায় না সে।
"সোহম ছোট থেকেই যে মেধাবী ছিল এমনটা নয়। ক্লাস এইট থেকে ওর মধ্যে বদল দেখি। বইতে মুখ গুজে সারাদিন পড়ে যাওয়ার মত ছাত্র নয় সোহম।"
তবে গুরুত্বপূর্ণ খবর হল, এই জয়েন্টে প্রথম স্থানাধিকার সোহমের কেরিয়ারে খুব বদল আনবে না। জয়েন্ট এন্ট্রান্স অ্যাডভান্স পরীক্ষায় ৪৮ নম্বরে নাম থাকার সুবাদে মুম্বই আইআইটি-তে পড়ার সুযোগ পেয়েছে সে। সেখানেই কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে আপাতত পড়াশোনা ও পরবর্তীকালে গবেষণার পরিকল্পনা রয়েছে তার, এমনটাই জানালেন তার বাবা।