মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক স্কুল এবং কলেজ খুলেছিল কিছুদিন আগেই। তার মাঝেই নেতাজি ইন্ডোরে স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইঙ্গিত দিয়েছিলেন প্রাথমিক কিংবা উচ্চ প্রাথমিক বিভাগের পড়ুয়ারা যাতে তাড়াতাড়ি স্কুল গণ্ডির মধ্যে পৌঁছাতে পারে সেই বিষয়ে খতিয়ে দেখা হবে। মুখ্যমন্ত্রীর সেই ইঙ্গিতের পরই আজ, সোমবার নবান্ন বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে, আগামী বুধবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে রাজ্যের সমস্ত প্রাইমারি এবং আপার প্রাইমারি স্কুল খুলে যাবে। এই সংক্রান্ত নির্দেশিকা শীঘ্রই রাজ্যের শিক্ষা দফতরের কাছে পৌঁছে যাবে। সরকারের ঘোষণা খুশি ছাত্র সংগঠন থেকে শিশু বিশেষজ্ঞরা।
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বললেন, “দারুণ উচ্ছ্বসিত! ছোট বাচ্চাগুলোর কাছে সত্যিই যেন এক আনন্দের বিষয়। অনেকে এমনও আছেন যারা এর আগে স্কুলে যায়নি, ওদের কথা ভেবে সত্যিই খুব ভাল লাগছে। স্কুল মানে ওদের ছেলেবেলা বেড়ে ওঠার গল্প, একে অপরের সঙ্গে দেখা হবে। নতুন করে বেঁচে ওঠার দিন আবার, শুধু বিধিনিষেধ যেন মেনে চলে তাহলেই হল। শিক্ষার আলোয় আলোকিত হোক ওদের জীবন!”
অন্যদিকে এবিভিপির রাজ্য সম্পাদক সুরঞ্জন সরকার বলছেন, “জাতীয় স্তর থেকে এটাই আমাদের দাবি ছিল বাচ্চাদের যেন স্কুলে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। ওদের বিকাশ হওয়া দরকার, মানসিকভাবে ওরা ভেঙে পড়েছিল। ওরা শিশু, ওদেরকে অন্যভাবে গাইড করা দরকার। ওরা এগিয়ে যাক, সরকারের কাছে অনুরোধ একটু খেয়াল রাখবেন যেন আর কেউ অসুস্থ না হয়....ওদের বারবার স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে বোঝানো, অবশ্যই যদি সম্ভব হয় স্কুলে চিকিৎসকদের রাখা ব্যস তাহলেই হবে!”
আরও পড়ুন প্রতীক্ষার অবসান, দু’বছর পর রাজ্যে খুলছে প্রাথমিক এবং উচ্চ-প্রাথমিক স্কুল
কিন্তু বাচ্চাদের সঙ্গে ওদের মানসিক বিষয়টিও লক্ষ্যণীয়! ওদের কাছে এই বিষয়টি খুশির হতে পারে অথবা কীভাবে স্কুলে সাবধান থাকতে পারে সেই নিয়েই কথা বলা হয় শিশু মনোবিদ দেবজিতা মজুমদারের সঙ্গে। তিনি খবরে যথেষ্ট খুশি, বললেন - “একটা সময়ে ওদের বাড়ি থেকে বের করার দরকার ছিল, নাহলে সমস্যা! মন সাংঘাতিক জিনিস, ওদের মানসিক চাপ পড়ছিল। ওরা অবশ্যই খুশিই হবে, আগ্রহ তৈরি হবে। পুনরায় আগের দিনে আবার ফিরবে। ভয় তো আমাদের মধ্যে, ওরা তো ভয়াবহতা অতটা বুঝতে পারে না, তাই স্বাস্থ্যবিধি বারবার শেখাতে হবে। মাস্ক পরে থাকার কথা বলতে হবে। স্যানিটাইজার ব্যবহার করা এগুলি শেখাতে হবে তাহলেই ওদের আর কোনও অসুবিধা হবে না।”
আরও পড়ুন আচমকা রাজ্যে কমে গেল নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা
খুশির রেশ অভিভাবক মহলেও! বেশিরভাগের মুখেই স্বস্তি বোধ। কেউ বলছেন, শুনেও শান্তি আবার কেউ বলছেন যাক, তাহলে আবার ওরা পুরনো ছন্দে ফিরবে। আবার কারওর বক্তব্য, এবার প্রকৃত পড়াশোনা শুরু হবে। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষ গুলি কীভাবে কাজ করবে, সেটি সম্পূর্ণ তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত।