Advertisment

বিকাশ বাদে জামানত বাজেয়াপ্ত সেলিম-সহ সব বাম প্রার্থীর

কোনও কেন্দ্রে মোট যত ভোট পড়েছে, কোনও প্রার্থী তার ৬ শতাংশ না পেলে তাঁর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। সেই হিসাব অনুযায়ী রাজ্যের মোট ৩৯ জন বামফ্রন্ট প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

জামানত হারিয়ে বঙ্গে বিবর্ণ লাল পতাকা

দুটি কেন্দ্রে তাঁরা প্রার্থী দেন নি। কংগ্রেসকে সমর্থন করেছিলেন। রাজ্যের বাকি ৪০টি কেন্দ্রে বামফ্রন্টের প্রার্থী ছিলেন। একমাত্র যাদবপুর কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বাদে প্রত্যেকেরই জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। স্বাধীনতার পর এই রাজ্যে বামপন্থীদের এমন বিপর্যয় নজিরবিহীন।

Advertisment

নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, কোনও কেন্দ্রে মোট যত ভোট পড়েছে, কোনও প্রার্থী তার ৬ শতাংশ না পেলে তাঁর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। সেই হিসাব অনুযায়ী রাজ্যের মোট ৩৯ জন বামফ্রন্ট প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এই প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য তথা রায়গঞ্জ কেন্দ্রের বিদায়ী সাংসদ মহম্মদ সেলিম, রাজ্য কমিটির অন্যতম শীর্ষ নেতা তথা বাঁকুড়া কেন্দ্রের প্রার্থী অমিয় পাত্র, দমদম কেন্দ্রের প্রার্থী নেপালদেব ভট্টাচার্য, ঝাড়গ্রাম কেন্দ্রের প্রার্থী দেবলীনা হেমব্রমের মতো নামজাদা নেতানেত্রীরা।

সার্বিকভাবে রাজ্যে বামপন্থীদের প্রাপ্ত ভোট নেমে এসেছে মাত্র ৭ শতাংশে। রাজ্যের একটিও কেন্দ্রে দ্বিতীয় পর্যন্ত হতে পারেন নি তাঁরা। মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে ২০১৪ সালের নির্বাচনে জিতেছিলেন সিপিএমের বদরুজ্জা খান। এবার তিনি ওই কেন্দ্রে চতুর্থ হয়েছেন।

আরও পড়ুন: ভাঙড়েও ভরাডুবি বামপন্থীদের, বিকাশকে পিছনে ফেলে দ্বিতীয় বিজেপি

কেন এমন বিপর্যয়, তার উত্তর খুঁজতে গিয়ে সিপিএম নেতারা দায়ী করছেন মেরুকরণের রাজনীতিকে। দলের রাজ্য কমিটির এক সদস্যের কথায়, "এবার সম্পূর্ণভাবে মেরুকরণের ভোট হয়েছে। সাম্প্রদায়িক বিভাজনের প্রভাব এর আগে এমন তীব্রতায় আছড়ে পড়েনি রাজ্য রাজনীতিতে। আমরা, বামপন্থীরা, সেই মেরুকরণের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে পারি নি। আমরা যে জিততে পারি, মানুষ তা বিশ্বাস করেন নি। ফলে আমরা কার্যত রিং-এর বাইরে ছিটকে গিয়েছি।"

সিপিআই-এর রাজ্য পরিষদের এক নেতার আক্ষেপ, "নির্বাচনে জয়, পরাজয় থাকেই। কিন্তু প্রায় সাত দশকের ঐতিহ্য ভুলে বাংলার মানুষ আমাদের উল্লেখযোগ্য শক্তি বলে গন্য করছেন না। আমাদের জনভিত্তি প্রতিদিন ক্ষয় পাচ্ছে। এই নির্বাচনে আমাদের হিন্দু ভোট বিজেপিতে এবং মুসলিম ভোট তৃণমূলে গিয়েছে।" তাঁর কথায়, "আপাতত এই সংকট থেকে মুক্তির কোনও উপায় চোখে পড়ছে না। বামপন্থীদের পক্ষে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করা সম্ভব নয়।"

সিপিএমের পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী দু-বছর আগে ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে যাদবপুর থেকে ১৫ হাজার ভোটে জিতেছিলেন। এ-বার ওই বিধানসভায় বিপুল ভোটে লিড নিয়েছে তৃণমূল। দ্বিতীয় হয়েছে বিজেপি। বামেরা তৃতীয়। সুজন বলেন, "বিজেপি যাদবপুরে প্রচারই করতে পারে নি সেভাবে। ওদের লোক নেই, বুথ ক্যাম্প করার শক্তি নেই। তাও ওরা দ্বিতীয়! আসলে প্রবল মেরুকরণের হাওয়ায় আমরা উড়ে গিয়েছি। আমাদের ছবি থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। যাঁরা সেই চেষ্টা করছেন, তাঁরা আপাতত সফল।"

left front CPIM
Advertisment