তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীরা বাড়ি বাড়ি প্রচার করছেন। সিপিএমও প্রচারের ময়দানে রয়েছে। মায় কংগ্রেসও ১১টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মূল বিরোধী শক্তি বিজেপি শুধু বৈঠকই করছে! রাজ্যের ৪২টি আসনে কাদের প্রার্থী করবে তা এখনও ঠিক করে উঠতে পারেনি গেরুয়া শিবির।
উত্তরবঙ্গে দুই আসন কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারে ভোট ১১ এপ্রিল। নির্বাচনের বাকি আর মাত্র ২২ দিন। মনোনয়নপত্র জমা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। উত্তরবঙ্গের এই দুই আসনে বিজেপির শক্তি বেড়েছে বলেই গেরুয়া শিবিরের দাবি। এই কোচবিহার থেকেই রথযাত্রা বের করতে চেয়েছিল বিজেপি। কিন্তু প্রার্থী কে হবেন, তা নিয়েই দ্বিধায় পদ্মশিবির। এমন দ্বিধা-দ্বন্দ্ব রয়ে গিয়েছে রাজ্যের অধিকাংশ কেন্দ্রেই।
আরও পড়ুন: একটা রাম মন্দির বানাতে পারছে না, মারোয়াড়ি মঞ্চে কটাক্ষ মমতার
প্রার্থীর নাম ঘোষণা নিয়ে মুকুল রায় বলেছেন, "এটা তো আর তৃণমূল কংগ্রেসের মত পাড়ার ক্লাব দল নয়। একটা জাতীয় দলের প্রার্থীর নাম ঠিক করতে সময় লাগে।" বহু বিজেপি কর্মী কিন্তু হতোদ্যম হয়ে পড়ছেন। কে প্রার্থী হচ্ছেন সেই আলোচনাতেই দিন কেটে যাচ্ছে গেরুয়া শিবিরের। অন্যদের দাপিয়ে প্রচার করতে দেখে তাঁদের আপাতত হাত কামড়ানো ছাড়া উপায় নেই।
কিন্তু কেন প্রার্থী ঘোষণা করতে এত দেরি? এর ফলে ভোট প্রচারের দৌড়ে কি পিছিয়ে পড়ছে না বিজেপি? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শীর্ষ নেতা বলেন, ''একই আসনে অনেক প্রার্থী দাবিদার। তার ওপর নানা শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়েছে দল। তাছাড়া এখনও দেখে নেওয়া হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস বা সমাজের বিশেষ ক্ষেত্র থেকে কোনও প্রার্থী পাওয়া যাচ্ছে কি না। আমারও প্রার্থী হওয়ার কথা ছিল, আমিই বুঝতে পারছি না আদৌ কোনও আসনে দাঁডাতে পারব।''
আরও পড়ুন: ‘এই তৃণমূল আর না’, বাবুলের রিংটোনের জেরে শোকজ ইসি-র
তবে ওই রাজ্য নেতা স্বীকার করে নিয়েছেন, ভোট প্রচারে কিছুটা পিছিয়ে যাচ্ছে বিজেপি। দলের নীচুতলার কর্মীদের মধ্যেও মতান্তর তৈরি হচ্ছে, যদিও একাংশের বক্তব্য, দল যোগ্য প্রার্থী দিলে তা "মেক-আপ" হয়ে যাবে। প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়ার রসদ পাওয়া যাবে। অন্যদিকে, সোমবার সন্ধ্যা থেকে এই রাজ্যের প্রার্থী নিয়ে বৈঠক হচ্ছে দিল্লিতে। এখনও তালিকা প্রকাশ না পাওয়ার ফলে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে অধিকাংশ কর্মীর মনেই।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক মাঝারি স্তরের বিজেপি নেতা তো কিছুটা হতাশা আর কিছুটা রসিকতার ঢংয়ে বলেই ফেললেন, "যেভাবে আজ নয় কাল চলছে প্রার্থী তালিকা নিয়ে, 'চন্দ্রবিন্দু'-র সেই 'গান ভালবেসে গান'-এর লাইন মনে পড়ছে, 'আমাদেরও নাকি হবে, কে জানে বাবা কবে?’।"
যত দেরি হচ্ছে তালিকা প্রকাশে, ওটাই রিংটোন হয়ে দাঁড়াচ্ছে বিজেপি কর্মীদের, "আমাদেরও নাকি হবে, কে জানে বাবা কবে?"